Coal Scam Case: বিপদ আরও বাড়বে লালার? কয়লা পাচার মামলার ফাইনাল চার্জ গঠন আজই
Asansol: বিশেষ আদালতের নির্দেশ, মামলার শুনানির দিনগুলিতে সশরীরে কোর্টে হাজিরা দিতে হবে লালাকে। লালাকে পৈতৃক বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া থানা এলাকার অন্তর্গত ভামোরিয়া গ্রামে লালার পৈতৃক বাড়ি।
আসানসোল: কয়লা চুরি ও পাচার কাণ্ডে মূল কিংপিন অনুপ মাজি ওরফে লালাকে গ্রেফতার করা না গেলেও গৃহবন্দি করতে পেরেছে আসানসোল সিবিআই আদালত। লালাকে সামনে রেখেই কয়লা কাণ্ডে তদন্তের চার্জশিট গঠন হতে চলেছে। ইতিমধ্যে দু’টি চার্জশিট জমা পড়েছে। ৩৪৭ জনেরও বেশি ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়েছে সিবিআইয়ের কাছে। ইসিএল নিরাপত্তারক্ষী এবং সিআইএসএফ সহ বেশ কয়েকজন অফিসার জেলে গিয়েছেন। আবার কেউ কেউ জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এবার চার্জশিট গঠন হবে। ফাইনাল চার্জশিট জমা হবে।
গত ১৪ মে কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। ওইদিনই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন লালা। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আজ কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠন করতে হবে সিবিআইকে। তারপরই এই মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া বা ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা।
বিশেষ আদালতের নির্দেশ, মামলার শুনানির দিনগুলিতে সশরীরে কোর্টে হাজিরা দিতে হবে লালাকে। লালাকে পৈতৃক বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া থানা এলাকার অন্তর্গত ভামোরিয়া গ্রামে লালার পৈতৃক বাড়ি। সেখানেই থাকেন তাঁর মা। এখন তাঁকে ওই ঠিকানাতেই থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের অনুমতি ছাড়া এলাকা ছাড়তে পারবেন না লালা।
ইতিমধ্যেই কয়লা পাচার মামলায় দু’টি চার্জশিট পেশ হয়েছে। তবে এখনও চার্জ গঠন হয়নি। এই মামলার আর এক অভিযুক্ত হলেন বিনয় মিশ্র। তবে এখনও তাঁর খোঁজ পাননি তদন্তকারীরা। তিনি ‘নিরুদ্দেশ’। চার্জ গঠনের দিন বিনয় হাজির না হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আদালত।
বস্তুত, হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালের শেষে কয়লা চুরি মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর প্রথম অভিযোগ দায়ের করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থা। ২০২২ সালের ১৯ জুলাই আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে ৪১ জন অভিযুক্তের নামে প্রথম চার্জশিট জমা করা হয়। এই অভিযুক্তদের তালিকায় অন্যতম হলেন কয়লা চুরি মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা। অবৈধ খননের কাজে যুক্ত লালার চার সঙ্গী জয়দেব মণ্ডল, গুরুপদ মাজি, নারায়ণ খারকা ও নীরোদ মণ্ডলকে আগেই গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু মামলা দায়ের হবার পরই সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবজ নিয়ে গ্রেফতারি এরিয়ে গিয়েছেন লালা। তবে একপ্রকার আসানসোল সিবিআই আদালতের চাপেই গত ১৪ মে সিবিআই আদালতে হাজিরা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন লালা। তিনি জামিন পেলেও আপাতত আদালতের নির্দেশে তিনি নিতুরিয়ায় এলাকাবন্দি রয়েছেন। ২১ মে মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এইদিন মূল চার্জশিট জমা পড়ার কথা। মূল অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করায় মামলার বিচার প্রক্রিয়াও এবার শুরু হবে।
আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে কয়লা চুরি মামলায় প্রায় ১ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে। বস্তুত লালার নেতৃত্বেই আসানসোল, রানিগঞ্জ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বীরভূমের বিস্তীর্ণ কয়লাঞ্চল জুড়েই এই অবৈধ কয়লা খাদানের রমরমা চলেছে বলে অভিযোগ।