Farmer Suicide: জাওয়াদ ভাসিয়েছে ক্ষেতের ফসল, উদ্বেগ-ভয়ে আত্মহত্যা ঋণগ্রস্ত আলুচাষির
Chandrakona: ভোলানাথ বায়েন এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলেন। প্রায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সেই চাষ করেন তিনি।
মেদিনীপুর: এখনও কাটেনি দুর্যোগের গেরো। এরই মধ্যে মর্মান্তিক পরিণতি কৃষকের। চাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মঘাতী হলেন এক আলুচাষি। মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। জাওয়াদের জেরে অসময়ে বৃষ্টি ভাসিয়েছে পথঘাট, ভাসিয়েছে খেতের ফসল। পরিবারের দাবি, এই বৃষ্টি নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন চন্দ্রকোণা থানার কাঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যঝাটির ভোলানাথ বায়েন। আলুচাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভোলানাথ বায়েন এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলেন। প্রায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সেই চাষ করেন তিনি। গ্রামবাসীরা জানান, আচমকাই ডিসেম্বরের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টির কারণে চাষের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ভোলানাথ। এই নিয়ে পরিবারেও অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ভোলানাথ আত্মহত্যা করেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর বাড়িতেই বিষ খান ভোলানাথ বায়েন। দ্রুত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় ওই আলুচাষির। চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
ভোলানাথের এক প্রতিবেশী জানান, “জমিতে আলু লাগিয়েছিল ভোলানাথ। এদিকে বৃষ্টিতে সেই জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এই নিয়েই ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই বিষ খেয়ে নেয়। আসলে ওদের সংসার এই চাষের উপরই চলে। জমি খুবই কম। বিঘা দেড়েক হবে। ছেলে নেই ওর। চারটে মেয়ে। ওদের সকলেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্বামী-স্ত্রী থাকত বাড়িতে।”
মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা কৃষি প্রধান এলাকা। ধান, আলু থেকে সবজি চাষ হয় এখানকার উর্বর জমিতে। গভীর নিম্নচাপের ফলে ভারী বৃষ্টি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে ঘাটালের কৃষকদের। জলে ডুবে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান, সর্ষে, আলু থেকে সবজি। মাঠ ভরে রয়েছে সরষে, আলু, সবজি, পাকা ধানে। সরষে, আলু, পাকা ধানের ক্ষেত ডুবে রয়েছে জলে। জমি থেকে জল বের করতে মরিয়া কৃষকরা সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবু বিধি বাম! পাকা ধান জল থেকে ছেঁকে উঁচু জায়গায় নিয়ে আসতে ব্যস্ততা চরমে কৃষকদের। দুর্যোগ কাটলেও দুর্ভোগ না কাটায় আর্থিক ক্ষতির দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের কৃষকরাও। পাকা আমন ধান কাটা শুরুর মুখে একটানা বৃষ্টিতে ধান জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। পাকা ধান জলে নষ্ট হবে, পচে যাবে বলে কৃষকদের আশঙ্কা। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি, জয়নগর সর্বত্রই এক চিত্র। জলে ডুবে থাকা ধান কেটে ঘরে তোলার মরিয়া চেষ্টা কৃষকদের বারবার প্রাকৃতিক বিপর্ষয় চাষআবাদের বড় ধরনের ক্ষতি করে দিল বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।