Chandrakona: হেলমেট পরায় রক্ষায়, হাসপাতাল থেকে বেরোতেই ভাঙল চাঁই! এমনই অবস্থায় চন্দ্রকোনার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের
Paschim Medinipur: কথা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
চন্দ্রকোনা: হাসপাতালের উদ্দেশে বেরোনোর আগে এক স্বাস্থ্যকর্মী বললেন, ‘যদি ভাল থাকি তাহলে ফিরব, নয়ত আর ফেরা হবে না…’ এই ঘটনা নিত্যদিনের। কারণ যে হাসপাতালে তাঁরা কর্মরত সেই হাসপাতালটিকে দেখলে বোঝা যায় না সেটি চিকিৎসাকেন্দ্র নাকি মৃত্যুফাঁদ!
কথা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বর্তমানে তার অবস্থা বেহাল। পলেস্তার খসে বেরিয়ে এসেছে। ঝুলছে লোহার রড, দেওয়ালে ধরেছে বড়-বড় ফাটল। আর বৃষ্টি হলে তো কোনও কথাই নেই। ছাদ ভেদ করে ঢুকে যায় জল। ডুবে যায় প্রতিটি ঘর। এই অবস্থার মধ্যেই চলে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার কাজ।
এই হাসপাতালে নিত্যদিন চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন শ’য়ে-শ’য়ে রোগী।গুরুত্বপূর্ণ সেই হাসপাতালের অবস্থা ভয়ঙ্কর বছরের পর বছর ধরে। হাসপাতালে কর্তব্যরত কর্মীরা জানালেন, “একাধিকবার ব্লক প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসন সকলকে জানানো হয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল মেরামতের কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেউ। গ্রীষ্মকাল পার হয়ে বর্ষা আসলেই দুশ্চিন্তা বাড়ে চরম। তাই বাড়ি থেকে আসার সময় বাড়িতে বলে আসি ফিরব কি না কোনও আশা নেই। তার কারণ যে কোনও সময় মাথার উপর ভেঙ্গে পড়তে পারে বড় চাঁই।’
সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরই নির্ভরশীল প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশটি গ্রামের মানুষ। তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কারণ খুব বড় সমস্যা না হলে এলাকার মানুষকে চিকিৎসার জন্য আসতে হয় এখানেই। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখানে রয়েছেন দুই চিকিৎসক, দুই নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট। পাশাপাশি রয়েছেন গ্রুপ ডির কর্মী থেকে শুরু করে অন্যান্যরা।
হাসপাতালে এক কর্মী শোনালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। বললেন, ‘কয়েক দিন আগেই হাসপাতালের মধ্য থেকে মাথায় হেলমেট পড়ে তিনি বেরিয়ে আসছিলেন। সেই সময় আচমকা খসে পড়ল চাঙর তাঁর মাথার উপর। হেলমেট থাকার জন্যই তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
এ দিকে, বেহাল পরিস্থিতির জেরে হাসপাতালের ভয়ে আসছেন না চিকিৎসকরা এমনটাই মনে করছেন অনেকে।চিকিৎসক না আসলে নার্স ফার্মাসিস্ট বা ডি গ্রুপের কর্মীরাই রোগী দেখেন প্রেসার মাপেন প্রেসক্রিপশন লেখে ওষুধ লিখে দেন। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বেহাল হাসপাতালের জন্যই এলাকাবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এলাকার মানুষরা বলছেন কোনও রাজনৈতিক দল হাসপাতালের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। চিকিৎসক থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর সকলেই চাইছে দ্রুত হাসপাতালটি মেরামতের ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।
এ বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে ব্লকের বিডিও সকলেই বলেন, “পরিস্থিতির কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আমরা চাই দ্রুত হাসপাতাল মেরামত করা হোক।’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য গুপ্ত বলেন, ‘রাজ্যস্তরে হাসপাতাল মেরামতের প্রপোজাল পাঠানো হয়েছে দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’