Snake in Khichuri: অঙ্গনওয়াড়ির গরম খিচুড়িতে ভেপে ওঠা সাপ, তুমুল হইচই পড়ুয়াদের মধ্যে
Medinipur: যিনি রান্না করেছিলেন, সেই সুপ্রিয়া মাজি জানান, তিনি ১৩ বছর ধরে রান্নার কাজ করছেন। এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে।
মেদিনীপুর: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না করা হয়েছিল খিচুড়ি। সেই খিচুড়িতে সাপ পড়ে থাকার অভিযোগ ঘিরে হইচই পড়ে যায় দাসপুরের ভুইয়ারায় ১৮০ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারে। বাচ্চা ও মায়েদের দেওয়ার জন্য রান্না করা হয়েছিল খিচুড়ি। এক বাচ্চা টিফিন কৌটো ভরে সেই খিচুড়ি বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, ওই বাচ্চার হাত থেকে টিফিন বক্স রাস্তায় পড়ে যায়, মুখ খুলে যায় কৌটোর। রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে খিচুড়ি, সঙ্গে ভেপে ওঠা একটি সাপও। এরপরই শুরু হয় হইহই। জানা গিয়েছে, দু’জন ছাত্র ওই খিচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল। তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়। হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। দাসপুর-২ বিডিও জানান, বিষয়টি তাঁরা নজরদারিতে রেখেছেন। দাসপুর-২ ব্লকের ভুঁইয়ারা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। অন্যান্য দিনের মতো শনিবারও সেখানে বাচ্চা ও প্রসূতি মায়েদের জন্য খিচুড়ি তৈরি করা হয়। ৪৫ জনের জন্য রান্না করা হয়। বেশির ভাগ ছাত্রই সেই রান্না টিফিন বক্সে ভরে বাড়িতে নিয়ে যায়। এরকমই এক ছাত্র খিচুড়ির মধ্যে সাপ দেখতে পায়। দুই ছাত্র খিচুড়ি খেয়ে ফেলায় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রেও নিয়ে যাওয়া হয়।
যিনি রান্না করেছিলেন, সেই সুপ্রিয়া মাজি জানান, তিনি ১৩ বছর ধরে রান্নার কাজ করছেন। এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। সুপ্রিয়া মাজির কথায়, “বুঝতেই তো পারছি না কীভাবে কী ঘটল। আমি তো পরিষ্কার করে সব বাসনপত্র ধুয়ে তারপরই রান্না করি। চাল, ডাল সবই দেখেশুনে রান্না করা হয়েছে। আমি তো রান্নার সময় বসেও ছিলাম। তারপরও কীভাবে কী হল বুঝতেই পারছি না।”
স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ ধাড়া বলেন, “খবরটা শুনে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমরা সকলেই। এখান থেকে বাচ্চা ও মায়েদের খাবার পাঠানো হয়। কোনওভাবে হয়ত রান্না করার সময় সাপটি পড়ে গিয়েছে। আগে বোঝা যায়নি। খাবার দেওয়ার সময় দেখা গেল একটি সাপ ওখানে পড়ে রয়েছে। একেবারে সেদ্ধ হয়ে গিয়েছে। খাবার কাউকে আর দেওয়া হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
দাসপুর-২ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ সাহু বলেন, “খবরটা শুনেছি। শোনামাত্রই এলাকার লোকজন মারফত বিষয়টা জানার চেষ্টা করেছি। জয়েন্ট বিডিও ও একজনও পাঠানোও হয়েছিল। ওনারা দেখে এসেছেন। রান্না করা খিচুরির মধ্যে একটা সাপ পাওয়া গিয়েছে। হতে পারে সাপটা পরে পড়ে। কীভাবে কী হয়েছে তা তো এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে খুব ক্ষতিকারক কিছু নয় বলেই মনে হচ্ছে। ভাগ্য ভাল সেই খাবার খায়নি। খেলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ত অনেকেই। দু’ একজন যারা খাবার খেয়েছে, তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম দেখে এসেছে। এখনও তারা সুস্থই আছে। কারও কোনও অসুবিধা হয়নি। কারও কোনও সমস্যা হলে আমরা মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে বা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করব।”
এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই গ্রামে পৌঁছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা, হোনাইয়া, ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। রাঁধুনি, সহায়িকা ও এলাকাবাসীরসঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। স্পষ্ট বার্তা দেন কোনওরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। আইসিডিএস-এর পরিকাঠামো খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।