COVID19 in Ketugram: কোভিড-কাঁটা! সরকারি ছাড়পত্র মিললেও বন্ধ কেতুগ্রামের গঙ্গা মেলা

Purba Bardhaman: মেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেলার ছাড়পত্র দেওয়া হলেও সেই চূড়ান্ত নির্দেশিকা এখনও  এসে পৌঁছয়নি। তাই যতক্ষণ না প্রশাসনের তরফে চূড়ান্ত নির্দেশিকা না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে

COVID19 in Ketugram: কোভিড-কাঁটা! সরকারি ছাড়পত্র মিললেও বন্ধ কেতুগ্রামের গঙ্গা মেলা
কেতুগ্রামের মেলা (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 16, 2022 | 2:07 PM

 পূর্ব বর্ধমান:  করোনার জেরে প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর প্রাচীন মেলা। মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ী থেকে পূণ্যার্থী সকলের মন খারাপ। শাস্ত্রীয় রীতি ও পরম্পরা মেনে দূর-দুরান্ত থেকে ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা বিশেষ করে বিবাহিত মহিলারা দলে দলে আজকের দিনে উদ্ধারণপুরে গঙ্গায় উত্তরান্তির স্নানপর্ব সেরে শাঁখা পরতে ভিড় জমান এখানে। করোনায় নদীর স্নানঘাটে কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভিড় কম।মেলাও বন্ধ, স্বাভাবিক ভাবেই উত্তরান্তির স্নানপর্বকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের বাড়তি মুনাফায় লাভের আশায় জল ঢেলেছে করোনার বিধিনিষেধ।

মেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, মেলার ছাড়পত্র দেওয়া হলেও সেই চূড়ান্ত নির্দেশিকা এখনও  এসে পৌঁছয়নি। তাই যতক্ষণ না প্রশাসনের তরফে চূড়ান্ত নির্দেশিকা না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। যদিও, পরে কোনও নির্দেশিকা আসে, তবে সেইমতো  আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গঙ্গামেলায় পৌরাণিক যোগ

কথিত রয়েছে,  গঙ্গাদেবীর শাঁখা বড় হয়েছিল ,অগত্যা শাঁখাই গ্রামের এক শাঁখারির কাছে দেবী শাঁখা পরছিলেন।পরম বৈষ্ণব উদ্ধারণ দত্ত ঠাকুর না কি এই অলৌকিক দৃশ্যটি দেখে ফেলেন ।কেতুগ্রামের উদ্ধারন দত্ত-র ঘাট আজও সেই স্মৃতি বহন করছে। জানা যায় উদ্ধারনপুরের কাছে নৈহাটি জনপদ ছিল নৈরাজার রাজধানী, উদ্ধারণ দত্ত ছিলেন নৈরাজার মন্ত্রী বা দেওয়ান। নৈরাজার বংশ লোপ পেলে উদ্ধারণ দত্ত ধীরে ধীরে রাজকার্য পরিচালনায় দক্ষ হয়ে ওঠে এবং রাজকার্য চালাতে চালাতে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর সংস্পর্শে আসেন। বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন । নিত্যানন্দ ও শ্রীচৈতন্যের সঙ্গে শুরু করেন তীর্থ পরিক্রমা । পরিক্রমা শেষে নিজগ্রামে ফিরে নিত্যানন্দ ও গৌরাঙ্গের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে মন্দির তৈরি করেন। জনপদের নাম বদলে যায়। বৈষ্ণব সাধক উদ্ধারণ দত্তের নামে জনপদের নাম হয় উদ্ধারণপুর।

কেতুগ্রামের এই মেলায় ভিড় করেন ভিন্ন জেলার পুণ্যার্থীরাও

প্রতি বছর পয়লা মাঘ উদ্ধারণ পুর গ্রামে শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ এবং দ্বাদশ গোপালের অন্যতম উদ্ধারণ দত্ত ঠাকুরের আবির্ভাব উৎসব পালন করা হয় ।এখানে উদ্ধারণ দত্ত র যে সমাধি আছে সেখানে পৌষ সংক্রান্তিতে তাঁর শ্রাদ্ধ বাসর অনুষ্ঠিত হয়। এই উপলক্ষে আয়োজিত কীর্তন মেলাটি প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। কথিত আছে উত্তরান্তি তিথিতে গঙ্গায় স্নানপর্ব শেষে বিবাহিত মহিলারা সংসারের মঙ্গল কামনায় নতুন শাঁখা পরেন। বর্ধমান জেলা ছাড়াও বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, হুগলি এমনকি ভিনরাজ্য থেকেও পূণ্যার্থীরা নদীতে পূণ্যস্নানের জন্য ভিড় করেন।  আপাতত করোনার কঠোর বিধিনিষেধের জেরে সবই বন্ধ বলেই জানিয়েছে প্রশাসন।

উল্লেখ্য, রাজ্যে কোভিড বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। শনিবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। আগের যা নিয়ম আপাতত তাই বহাল থাকছে। একইসঙ্গে দু’টি ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। নবান্ন জানিয়ে দিয়েছে মেলার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। খোলা আকাশের নিচে বিধিনিষেধ মেনে মেলার আয়োজন করা যেতেই পারে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, সবসময় মাস্ক পরে থাকা, শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন:  Republic Day Tableau : পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোতে নিমরাজির পাল্টা জবাব, রাজনাথকে চিঠি অধীরের