‘দল চালাতে গেলে টাকা নিতে হয়’, বেফাঁস মন্তব্য পঞ্চায়েত প্রধানের, ‘পদ যেতে পারে’, শাসন সুব্রতর

TMC Panchayat: পঞ্চায়েত প্রধানের আরও দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে অবধি ওই পঞ্চায়েতের সব কাজ উপপ্রধান বিমল ভক্ত দেখতেন। সব টেন্ডার তিনিই উদ্যোগ নিয়ে করিয়েছেন। এখন নিজেই অন্যের নামে দোষ দিচ্ছেন

'দল চালাতে গেলে টাকা নিতে হয়', বেফাঁস মন্তব্য পঞ্চায়েত প্রধানের, 'পদ যেতে পারে', শাসন সুব্রতর
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2021 | 12:43 AM

পূর্ব বর্ধমান: ‘দল চালাতে গেলে টাকা নিতে হয়’ নিজেরই দলের নেতৃত্বকে ‘দুষতে’ গিয়ে কাটমানি প্রসঙ্গে এমনই বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন গলসির গোহগ্রাম পঞ্চায়েত (Panchayat) প্রধান তৃণমূল (TMC) নেত্রী রিঙ্কু ঘোষ। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

গত কয়েকদিন পূর্ব বর্ধমানের গলসির গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের (Panchayat) টেন্ডার প্রক্রিয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ২৯ জুনের অর্থ উপসমিতির সভা ঘিরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় সদস্যদের মধ্য়ে। ঘটনার জেরে শোরগোল পরে যায় এলাকায়। উপপ্রধান  বিমল ভক্তর অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান রিঙ্কু ঘোষ সরকারী টেন্ডার অফ লাইনে করতে চাইছেন। তাঁর দাবী, গত ১৭ জুন বেলা বারোটায় এলাকার গলসির গোহগ্রাম পঞ্চায়েতে (Panchayat)২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ঢালাই রাস্তা, নর্দমা, পুকুরঘাট তৈরীর টেন্ডার ডাকার বিষয়ে মিটিং করা হয়। সেখানে ঠিক করা হয় অনলাইনে টেন্ডার প্রক্রিয়া চালু করা হবে। কিন্তু তার পরেও টেন্ডার নোটিশ জারি করেননি পঞ্চায়েত প্রধান।

উপপ্রধান বিমল ভক্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অফ লাইন টেন্ডার হলে কিছু নেতা সুবিধা পাবে। কিছু ঠিকাদার বিনা প্রতিযোগিতায় বরাত পেয়ে যাবেন। যেখান থেকে কিছু কাটমানি নেওয়া হবে। সেই টাকাতে নেতাদের পকেট ভরতে পারে।অনলাইনে করলে সেটা হবে না। সেকারণেই প্রধানকে এই পরামর্শ দিয়েছেন।দলের এ বিষয়টি স্বচ্ছতার স্বার্থে দেখা উচিত।”

এ বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান রিঙ্কু ঘোষ বলেন, “দলের পাটি চালাতে টাকা নেওয়া হয়। সেটা সবাই জানে। দল কীভাবে চলবে। তবে সেজন্যই অফলাইনের পরামর্শ কী না তা আমি জানি না।” তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “এক্ষেত্রে সেটা কাটমানি নয়। ঘরের জন্য কারো কাছে দশ বিশ হাজার নিলে সেটাই কাটমানি। তাছাড়া কাজের গতি আনতে টেন্ডার প্রকিয়াকরণের জন্য আবার মিটিং ডাকা হয়। সেখানে আলোচনার সময় চেঁচামেচি হচ্ছিল। তবে অপ্রাস‌ঙ্গিক কিছু ঘটনা ঘটেনি।”

পঞ্চায়েত প্রধানের আরও দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে অবধি ওই পঞ্চায়েতের সব কাজ উপপ্রধান বিমল ভক্ত দেখতেন। সব টেন্ডার তিনিই উদ্যোগ নিয়ে করিয়েছেন। এখন নিজেই অন্যের নামে দোষ দিচ্ছেন। নতুন কাজ শুরুই হয়নি। তবে সবাই অনলাইন টেন্ডার করতে চাইছেন। তাই সবার কথা মতো অনলাইনেই টেন্ডার হবে।

ঘটনায় পঞ্চায়েত সদস্য আশিস চ্যাটার্জ্জী বলেন,  “প্রধান যা বলেছেন সঠিক বলেছেন। দলের নাম করে বিমল ভক্ত আগে গোটা পঞ্চায়েত চালিয়েছেন। তাছাড়া বালিঘাটের মালিকদের ছাড়পত্র দিতে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি হয়েছে ।” প্রধানের এই বিস্ফোরক’ স্বীকারোক্তি’ নিয়ে  রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী (TMC) সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন,  “এত ছোট স্তরের বিষয়গুলো আমার কাছে আসে না। এগুলো সভাধিপতি বা জেলাশাসকের বিবেচনার ব্যাপার। তবে যদি কোনো অভিযোগ আসে তা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পদও চলে যেতে পারে।”

আরও পড়ুন: Rakhal Bera:আদালতের নির্দেশে পুলিশি হেফাজতে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা, খোঁজ চলছে চঞ্চলের