Panchayat: ফুলেরা-জামালপুর যেন সমার্থক! ‘পঞ্চায়েত’ অফিসেই এবার আইবুড়ো ভাত খেলেন উপ-প্রধান জি

Panchayat: বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন উপ-প্রধান। সেই আনন্দে উলুধ্বনি দিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে হল র আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ভাইরাল হতেই সমালোচনার ঝড়।

Panchayat: ফুলেরা-জামালপুর যেন সমার্থক! 'পঞ্চায়েত' অফিসেই এবার আইবুড়ো ভাত খেলেন উপ-প্রধান জি
ছবি ভাইরাল হতেই শোরগোল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 11:46 PM

জামালপুর: পরিচালক দীপক কুমার মিশ্রের তৈরি পঞ্চায়েত ওয়েব সিরিজ (Panchayat Web Series) বছর দুয়েক আগে সাড়া ফেলেছিল গোটা দেশেই। গ্রামীণ ভারতের গ্রাম্য সমস্যার উপর তৈরি এ ছবির মিষ্টি রেশ রয়ে গিয়েছিল দীর্ঘদিন। ছবিতে ফুলেরা গ্রামে নতুন চাকরি পাওয়ার পর পঞ্চায়েত সচিবের জীবন কীভাবে নিত্যনতুন মোড় নেয় তাই ছিল ছবির মূল গল্প। পঞ্চায়েতের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক জটিলতা ছবিতে নিয়েছিল এক মিষ্টি ছবি। সেখানেও খাতায় কলমে এক প্রধান থাকলেও তাঁর স্বামীই ছিল সর্বেসর্বা। সদ্য এই ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজন মুক্তির পর থেকে তা নতুন করে হিন্দোল তুলছে দর্শক মহলে। এবার যেন সেই ছবিরই প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া গেল জামালপুরে। উপ-প্রধানের জীবনে বেজেছে বিয়ের সানাই। আর তাতেই সাজ সাজ রব একেবারে পঞ্চায়েত দফতরে। আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠানও হল পঞ্চায়েতের কার্যালয়েই। 

অনুষ্ঠানের আয়োজক আবার খোদ পঞ্চায়েত প্রধান। সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছুপঞ্চায়েত সদস্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ব বর্ধমান জেলা সফরের প্রক্কালে শুক্রবার এই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে জামালপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। যা নিয়েই জেলার রাজনৈতিক মহলে চলছে জোরদার চর্চা। সরকারি জায়গায় এ ধরনের অনুষ্ঠানের জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিরোধীরাও। প্রসঙ্গত, জামালপুর (Jamalpur) ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসন ক্ষমতা রয়েছে তৃণমূল-কংগ্রেসের (Trinamool Congress) হাতে। পঞ্চায়েতের মোট সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। তার মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা সদস্য। পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন ডলি নন্দি। উপ-প্রধান শেখ সাহাবুদ্দিন মণ্ডল। সূত্রের খবর, কাগজে কলমে ডলি নন্দি প্রধান হলেও পঞ্চায়েতের সর্বময় কর্তা হলেন সাহাবুদ্দিনই। অন্য সদস্যদের থেকে বয়সেও তিনি অনেক ছোট। 

পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন সেলিমাবাদ গ্রামে বাড়ি সাহাবুদ্দিনের। আগামী ৫ জুলাই উপ-প্রধান সাহাবুদ্দিন মণ্ডলের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছে। তাঁরই আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান হয়ে গেল একেবারে পঞ্চায়েত অফিসে। এদিকে জামালপুরের এ পঞ্চায়েত অফিসের কার্যকলাপ দেখে অনেকেই বলছেন পঞ্চায়েত অফিসে কীভাবে হতে পারে এ ধরনের কাজ?

তবে সমালোচকদের মুখে ছাই দিয়ে মহাসমারোহে চলল আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান। আয়োজনও ছিল একেবারে এলাহি। কাঁসার বাটিতে ও কাঁসার থালায় ভাত সহ হরেক রকম রান্না খাবার সাজিয়ে খেতে বসেন উপ-প্রধান। ভাত, মাংস,ডাল,তরকারি ছাড়াও মেনুতে ছিল বড় মাছের মুড়ো,পায়েস, দই, মিষ্টি ও চাটনি সহ একাধিক রকমারি পদ। প্রধান ছাড়াও পঞ্চায়েত সদস্য চন্দনা পান,সৈয়দ মল্লিক রুপালি বিশ্বাস এবং সমিতির সদস্য মণিরা বেগমরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

রাজনৈতিক মহলে চাপান-উতর

এদিকে উপ-প্রধানের এই আইবুড়ো ভাতের ছবি দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল শুরু হয়ে যায় ব্যাপক শোরগোল। বিকালে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে আইবুড়ো ভাত অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রধান ডলি নন্দি ও উপ-প্রধান সাহাবুদ্দিন মণ্ডল মুখে কুলুপ আঁটেন। এ প্রসঙ্গে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন,“ঘটনার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই । তবে এমনটা হয়ে থাকলে বাজে কাজই হয়েছে। কেন এমনটা হল সেই বিষয়ে খোঁজ নেব।” এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার মুখপত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “সবটাই মিথ্যা অপপ্রচার । আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান নয় । উপ-প্রধান পঞ্চায়েত অফিসে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজ খাচ্ছিলেন।” তবে তোপ দাগতে ছাড়েনি বিজেপি। ঘটনার কথা শুনে জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন ,“এটাই তৃণমূল কংগ্রেসের আসল স্বরুপ। দেশের মধ্যে একমাত্র তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরাই পঞ্চায়েত অফিসে সানাইয়ের সুর বাজিয়ে ও উলুধ্বনি দিয়ে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজ সারেন। এদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কর্মসংস্কৃতি ফেরানোর কথা বলছেন!”