Katwa: ১৫ বছর আগের সেই ঘটনা, আজও ভাবলে শিউরে ওঠেন হতভাগ্য বাবা… কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হয়েছিল মেয়েটার
Katwa: খবর পেয়ে পরদিন খাজুরডিহি গ্রাম থেকে অমিতার বাবা খোকন প্রধান বাগটোনা যান। এর দু'দিন পর কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
পূর্ব বর্ধমান: ১৫ বছর আগের ঘটনা। মেয়েটার তখন ২৬ বছর বয়স। মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন যায় বাবার কাছে। জানানো হয়, পুড়ে মারা গিয়েছে তাঁদের মেয়ে। এই ঘটনায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। শুরু হয় তদন্ত। অবশেষে সেই মামলায় ইতি পড়ল। রায় দিলেন কাটোয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সুকুমার সূত্রধর। মোট ৬ জন অভিযুক্তের মধ্যে তিনজনের যাবজ্জীবন, তিনজন বেকসুর খালাস। বাড়ির বউকে পুড়িয়ে মারার দায়ে স্বামী, দেওর ও শাশুড়ির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। এছাড়াও গৃহবধূকে নির্যাতনের দায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা-সহ তিন বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয় এদিন।
২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বরের ঘটনা। কাটোয়া থানার বাগটোনা গ্রামের দাসপাড়ার অমিতা প্রধানকে (২৬) খুনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, অতিরিক্ত পণের দাবিতে স্বামী, শাশুড়ি ও দেওর অমিতাকে পুড়িয়ে মারে। আদালতে শুনানিপর্বে উঠে আসে ভয়ঙ্কর সত্য। ঘটনার দিন অমিতার স্বামী তপন প্রধান, দেওর ধুলো প্রধান ও শাশুড়ি লজ্জা প্রধান অমিতাকে আটকে মারধর করে। এরপরই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।
খবর পেয়ে পরদিন খাজুরডিহি গ্রাম থেকে অমিতার বাবা খোকন প্রধান বাগটোনা যান। এর দু’দিন পর কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মেয়েকে খুন করা হয়েছে বলে কাটোয়া থানায় খোকন প্রধান অভিযোগ জানান। ১৩ জন সাক্ষী দেন আদালতে। এতদিন পর বিচার পেলেন সন্তানহারা বাবা। এদিন বারবার মনে পড়ছিল মেয়ের সেদিনের সেই মুখটা।
আসামী পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত দে বলেন, “আদালত আজ এই মামলার রায় দেন। ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ৬ জনের মধ্যে ৩ জন বেকসুর খালাস হয়েছেন। তিনজন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁরা হলেন তপন প্রধান যিনি ওই মহিলার স্বামী, লজ্জা প্রধান শাশুড়ি এবং ধূলো প্রধান দেওর। আদালত এই ঘটনাকে বিরলতম বলে মনে করেনি। তাই সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। যদি ১০ হাজার টাকা জরিমানা না দেন, আরও এক বছর জেল খাটতে হবে।”
সরকারি আইনজীবী প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বধূ নির্যাতন ও বধূ হত্যার মামলায় তিনজন আসামীই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ২০০৭ সালের মামলা। মোট ১৩ জন আদালতে সাক্ষী দেন। তাঁদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”