TMC Viral Audio: ‘সিপিএমের দখলে চলে যাচ্ছিল, গণনাকেন্দ্রে জোর করে জেতানো হয়েছে’, ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ ঘিরে বিতর্ক

TMC: ১৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই অডিয়ো ক্লিপটি ভাইরাল হয় বৃহস্পতিবার। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, কথোপকথনের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি, তিনি তন্ময় ঘোষ। বাড়ি বর্ধমান-১ ব্লকের কামনাড়াতে। পরিবার তৃণমূল করে।

TMC Viral Audio: 'সিপিএমের দখলে চলে যাচ্ছিল, গণনাকেন্দ্রে জোর করে জেতানো হয়েছে', ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ ঘিরে বিতর্ক
পূর্ব বর্ধমানের গণনাকেন্দ্রের ছবিImage Credit source: নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2023 | 6:49 PM

বর্ধমান: পঞ্চায়েতে গ্রাম বাংলার রায়ে একতরফাভাবে জয় এসেছে তৃণমূলের। কিন্তু বিরোধীরা বার বার দাবি করে আসছে, গণনায় কারচুপি করা হয়ে থাকতে পারে। ভোটের গণনাকর্মীদের উপর চাপ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। আর এরই মধ্যে ভাইরাল হল এক অডিয়ো ক্লিপ। যেখানে গণনায় কারচুপির অভিযোগ আরও জোরাল হচ্ছে বলেই দাবি বিরোধীদের। অডিয়ো ক্লিপে দু’জনের কথোপকথনে উঠে এসেছে, তৃণমূলকে ‘জোর করে’ জেতানো হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ওই দুই ব্যক্তি তৃণমূল কর্মী। যদিও ওই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি টিভি নাইন বাংলা।

উল্লেখ্য, এবারের ভোটে পূর্ব বর্ধমানের ক্ষেতিয়ায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অশোক দত্ত নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। ক্ষেতিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর বুথ থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে উঠে এসেছে তাঁর নামও। কথোপকথনে প্রথম ব্যক্তি বলছেন, ‘অশোক দত্ত তো গোহারা।’ দ্বিতীয় ব্যক্তি শুনে কিছুটা অবাক। বলছেন, ‘না না জিতেছে তো।’ তারপর প্রথম ব্যক্তি বলছেন, ‘ওটা তো গণনাকেন্দ্রে জেতানো হয়েছে। গণনাকেন্দ্রে জোর করে জেতানো হয়েছে। মানস ভট্টাচার্য ও রবীন নন্দী জোর করে জিতিয়েছেন।’ প্রসঙ্গত, এই মানস ভট্টাচার্য হলেন এলাকায় যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। আর রবীন নন্দী রয়েছেন এলাকার জয় হিন্দ বাহিনীর দায়িত্বে।

অডিয়ো ক্লিপে প্রথম ব্যক্তিকে আরও বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ক্ষেতিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে গিয়েছে। সেটাকে ঘুরিয়ে আনা হয়েছে। শুনে রাখো। বাঘা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতও সিপিএমের দখলে গিয়েছিল। ঘুরিয়ে আনা হয়েছে।’ গণনাকেন্দ্রে কর্মীদের ধমকে-চমকে ফল নিজেদের পক্ষে আনা হয়েছে, এমন কথাও উঠে আসছে ওই কথোপকথনে। এ-যাত্রার বিরোধীদের গণনাকেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে জেতা গেলেও লোকসভায় যে বেগ আসতে চলেছে, এমন কথাও বলতে শোনা যাচ্ছে।

১৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই অডিয়ো ক্লিপটি ভাইরাল হয় বৃহস্পতিবার। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, কথোপকথনের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি, তিনি তন্ময় ঘোষ। বাড়ি বর্ধমান-১ ব্লকের কামনাড়াতে। পরিবার তৃণমূল করে। এই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপের বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, তিনি লোকমুখে কিছু কথা শুনেছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আলোচনা করছিলেন। কিন্তু পরে জানতে পারেন, যা সব বলা হয়েছে, পুরোটাই মিথ্যা। ঠিকঠাকভাবে গণনা হয়েই তৃণমূল জিতেছে বলে দাবি তাঁর।

তৃণমূল যুবর বর্ধমান-১ ব্লকের সভাপতি মানস ভট্টাচার্যর কথাও শোনা গিয়েছে ওই অডিয়ো ক্লিপে। তাঁর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে তিনিও বলছেন, ওই অডিয়ো ক্লিপের কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। এদিকে অডিয়ো ক্লিপের বিষয়টি দলকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে তা বোঝাই যাচ্ছে। তৃণমূলের ব্লক সভানেত্রী কাকলি তা গুপ্ত জানাচ্ছেন, অডিয়ো ক্লিপের বিষয়টি তাঁর কানেও গিয়েছে। দলের তরফে দু’জনকে চিহ্নিতও করা হয়েছে বলে দাবি ব্লক সভানেত্রীর। তাঁর দাবি, গণনা নিরপেক্ষভাবেই হয়েছে এবং অডিয়ো ক্লিপে মিথ্যা বলা হয়েছে। কেন এইভাবে মিথ্যা কথা বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে এমন হাতে-গরম ইস্যু পেয়ে শাসক শিবিরকে আক্রমণের সুযোগ ছাড়ছে না বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের বক্তব্য, ওই অডিয়ো ক্লিপই প্রমাণ করে শাসক দল পঞ্চায়েতের গণনার সময়ে ভোট ‘লুঠ’ করেছে এবং অন্যায়ভাবে পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে। শাসক-বিরোধী এই চাপানউতরের মধ্যেই ভাইরাল অডিয়ো ঘিরে সরগরম জেলার রাজনীতি।