Akhil Giri: দুর্গম গিরি Vs কান্তার বীরবাহা! অখিলকে ‘টাইট’ দিতে কড়া পদক্ষেপের পথে বনমন্ত্রী
Akhil Giri: বনমন্ত্রী বলেন, "আমার সে বিষয়ে কিছু বলার নেই। কারণ আমি ৬ মাস দায়িত্বে এসেছি। আমি ১০০ শতাংশ মন দিয়ে কাজ করি। কিন্তু আমার এরকম কোনও দুর্নীতির কথা জানা নেই। বনদফতরে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা ২৪ ঘণ্টাই কাজ করেন। নিজের জীবন বিপন্ন রেখে কাজ করেন।"
পূর্ব মেদিনীপুর: মহিলা পদাধিকারীকে অপমান। এবার কারামন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাতে চলেছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। রাজ্যে এবার দুই মন্ত্রীর মধ্যেই নজিরবিহীন সংঘাত। বনমন্ত্রী বলেন, “বনদফতরের পক্ষ থেকেই লিখিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা লোকাল সিসিএফ, ডিএফও, রেঞ্জ অফিসারের কাছ থেকেও রিপোর্ট চেয়েছি। সেই রিপোর্ট আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেব।” তবে অখিল গিরি যে বনদফতরের দুর্নীতি ফাঁস করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সে ব্যাপারে বনমন্ত্রী বলেন, “আমার সে বিষয়ে কিছু বলার নেই। কারণ আমি ৬ মাস দায়িত্বে এসেছি। আমি ১০০ শতাংশ মন দিয়ে কাজ করি। কিন্তু আমার এরকম কোনও দুর্নীতির কথা জানা নেই। বনদফতরে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা ২৪ ঘণ্টাই কাজ করেন। নিজের জীবন বিপন্ন রেখে কাজ করেন।”
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাঁথিতে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলেন বনদফতরের আধিকারিকরা। তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা আধিকারিকও ছিলেন। সেখানে রামনগরের বিধায়ক তথা শাসকমন্ত্রী অখিল গিরির বাধার মুখে পড়েন তাঁরা। ওই মহিলা পদাধিকারীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে দেখা যায় অখিল গিরিকে। অখিল গিরিকে বলতে শোনা যায়, “আপনার আয়ু ৭-৮ দিন, ১০ দিন।” মহিলা অফিসারকে জানোয়ার, বেয়াদব বলেও মন্তব্য করতে ছাড়েননি অখিল। সূত্রের খবর, অখিলের এই মন্তব্যে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত বিরক্ত, অসন্তুষ্ট, তা তিনি ঘনিষ্ঠমহলেই প্রকাশ করেছেন। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দলও যে অখিলের পাশে নেই, তা আগেই স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “তিনি যেভাবে কথা বলছেন, তা কোনও অবস্থাতেই দল অনুমোদন করে না, শরীরি, মুখের ভাষা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি।”
তবে গোটা ঘটনার পরও বনদফতরের উদ্দেশে অখিলের বক্তব্য, “শঙ্করপুরের জঙ্গলে এলাকার মধ্যে গাছগুলো যখন শুকিয়ে যায়, যেগুলো জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। বন দফতর সরকারি ট্রেজারির টাকা সরকারি হিসাবে দেখায় না। বন দফতরের অনেক রকম কাজকর্ম রয়েছে। বনদফতরের কাজের হিসাব পঞ্চায়েতে রয়েছে। আপনারা কীভাবে দুর্নীতি করছেন, সাধারণ মানুষ এসে বলছেন, এবার আপনাদের কাজের খতিয়ান আমরা পঞ্চায়েত দেখব।”
তাজপুরের যে এলাকা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত, সেই এলাকা রাতভর পাহারা দিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা। তবে সেখানে যাঁরা অস্থায়ী চালাঘর তৈরি করছিলেন, তাঁদের বক্তব্য, বন দফতরের কাছ থেকে তাঁরা ২ মাসের জন্য ওই এলাকা লিজ নিয়েছিলেন। কারণ তাজপুরে বাঁধ নির্মাণের জন্য সেচ দফতরের কাজ চলছে। সেই কাজ সম্পন্ন হলেই, তাঁরা উঠে যেতেন।
তবে অখিলের আচরণ নিয়ে বিতর্ক উঠতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বড় ভাই, ছোট ভাই, বোনের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি। যিনি বনমন্ত্রী ছিলেন, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে তদন্ত করবেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত হল না। এক মন্ত্রী আরেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুলবে, এটাই তো তৃণমূল।” কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মহিলা পদাধিকারীকে হুমকির ২৪ ঘণ্টা পরও কেন অখিলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নয়?