Durga Puja 2021: ভাটিয়ালি সুরে ভরে ওঠে চণ্ডীমণ্ডপ, এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনেই চলে দেবীর আরাধনা…

Kanthi: রাজবাড়ির সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবীর নির্দেশেই পুজোতে ভাটিয়ালি গান গাওয়া হয়।

Durga Puja 2021: ভাটিয়ালি সুরে ভরে ওঠে চণ্ডীমণ্ডপ, এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনেই চলে দেবীর আরাধনা...
কিশোরনগর রাজবাড়ি, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 08, 2021 | 12:01 AM

পূর্ব মেদিনীপুর: পুজো শুরু হলেই মণ্ডপ ভরে ওঠে ভাটিয়ালি সুরে। জেলেদের গান না হলে নাকি পুজোই অস্পূর্ণ! অন্যান্য পুজোর মতো চালায় নয়, পঞ্চমুণ্ডির আসন তৈরি করে সেখানে চলে দেবীর আরাধনা। অবাক হচ্ছেন? তবে এটাই সত্যি। কাঁথির কিশোরনগর রাজবাড়ির পুজো জুড়ে রয়েছে এমন নানা ইতিহাস, গল্পকথা।

রাজবাড়ির সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবীর নির্দেশেই পুজোতে ভাটিয়ালি গান গাওয়া হয়। কথিত রয়েছে, কয়েকশো বছর আগে ঝড়জলের রাতে এক সুন্দরী রমণী জেলেদের মশাগাঁ খাল পার করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। জেলেরা তাঁর অনুরোধ মেনে খাল পার করে দিয়ে পয়সা চান। কিন্তু, সেই রমণী বলেন, “তোরা রাজবাড়িতে গিয়ে পুজোতে গান করবি। সেখান থেকেই পয়সা পাবি।” পাল্টা জেলেরা জানান, তাঁরা মূর্খ মানুষ। তাঁরা গান গাইতে জানেন না। তখন সেই নারী জানান তিনি তাঁদের জিভে গান লিখে দেবেন।

জেলেরা বুঝতে পারেন দেবী তাঁদের কৃপা করেছেন। এরপরেই দেবীর নির্দেশে তাঁরা কাশীনগর রাজবাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু, রাজবাড়ির কর্তা তথা রাজা স্পষ্টই জানিয়ে দেন জেলেদের রাজবাড়িতে বসে গান গাওয়ার অধিকার নেই। রাজাকে সব কথা খুলে বলতে তখন জেলেদের বাড়ির পশ্চিমদিকে বসে গান গাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। জেলেরা গান শুরু করলে দেখা যায়, দেবীর অধিবাসের ঘটটি  পশ্চিম দিকে ঘুরে গিয়েছে। এরপর থেকেই এই রাজবাড়ির পুজোয় চালু হয় জেলেদের গান। সে নির্দেশ আজও মেনে চলে রাজ পরিবার।

রায় পরিবারের সদস্য সৌমেন্দ্রকুমার রায় জানিয়েছেন, রাজা যাদবরাম রায়ের আমলে এই পুজোর শুরু। তবে কবে থেকে ঠিক পুজো শুরু হয়েছিল তার যথার্থ তারিখ এখন ইতিহাসের আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে। তবে, এই দেবীর পুজো পঞ্চমুণ্ডির আসন পেতে করা হয়। ঘট বসে পশ্চিমদিকেই। রাজবাড়ির বাইরে প্রথা মেনেই মূল মন্দির আজও পাকা করা হয়নি। খড়ের চালের মণ্ডপেই হয় পুজো। একসময় বলিপ্রথা চালু থাকলেও এখন তা উঠে গিয়েছে। পুজোয় এখনও চলে জেলেদের গান।

সৌমেন্দ্রবাবুর কথায়, “জেলেগানের পাশাপাশি এখানকার পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এখানে আখের মেলা বসে।  চারদিন আখের মেলা হয়ে। লক্ষ টাকার আখ বিক্রি হয় এই মেলায়। তবে গতবছর আখের মেলা বসেনি। ভিনরাজ্যে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠানোর জন্যে অনেকে প্রসাদ সংগ্রহ করেন। ছানা, চিনি, কাজু দিয়ে আমাদের এখানে দেবীর প্রসাদ তৈরি হয়। তবে চলতি বছর প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সব আয়োজন করা হবে।”

আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘এঁরা থাকতে কাজ করতে পারিনি’ সব্যসাচীর ঘরওয়াপসি-তে মুখ খুললেন সুকান্ত