Digha Death: ‘ও ছোট মা সুগম আর বেঁচে নেই গো’, স্বামীর মৃতদেহের সামনে বসে বুকফাটা কান্না স্ত্রীর, দিঘায় বেড়াতে এসে মৃত্যু হালিশহরের যুবকের

Digha Sea Beach: বছরখানেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। সুগমের এইভাবে চলে যাওয়া, মেনেই নিতে পারছেন না তিনি।

Digha Death: 'ও ছোট মা সুগম আর বেঁচে নেই গো', স্বামীর মৃতদেহের সামনে বসে বুকফাটা কান্না স্ত্রীর, দিঘায় বেড়াতে এসে মৃত্যু হালিশহরের যুবকের
হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিয়াশা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2022 | 12:44 AM

পূর্ব মেদিনীপুর: রথের দিন ভয়ঙ্কর অঘটন ঘটে গেল দিঘায়। সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিলেন বন্ধুরা। এরপরই আচমকা বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে বাজের ঝলকানি। সেই বাজেই প্রাণ গেল দুই পর্যটকের। শুক্রবার নিউ দিঘার ক্ষণিকা ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের নাম সুগম পাল (২৪) ও শুভজিৎ পাল (২৫)। সুগমের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হালিশহরের বাঁধাঘাটে। অন্যদিকে শুভজিৎ পালের বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীর শহিদপল্লি এলাকায়। এদিনই সকালে দিঘায় পৌঁছন পাঁচ বন্ধু। দেবাশিস বিশ্বাস নামে তাঁদের এক বন্ধু জানান, তিনি, সুগম, সুগমের স্ত্রী তিয়াশা, শুভজিৎ এবং সমীর পাত্র নামে আরও এক বন্ধু এদিন সকালেই দিঘায় পৌঁছন। সমুদ্রে স্নান করতে নামার পরই ঘটে বিপত্তি। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে যায় দিঘা উপকূল থানার পুলিশ। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া হয়েছে নিহতদের বাড়িতে।

এই ঘটনার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিয়াশা। জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। সুগমের এইভাবে চলে যাওয়া মেনেই নিতে পারছেন না তিনি। বাড়িতে ফোন করে সমানে কেঁদে চলেছেন। এদিন তাঁরা পাঁচজন সমুদ্রে নামার পর নিউ দিঘার বাসিন্দা ক্যামেরাম্যান অভিজিৎ মাইতি তাঁদের ছবি তুলছিলেন। সে সময় হঠাৎই বৃষ্টি শুরু হয়। তার মধ্যেই বাজ পড়ে। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন দু’জন। বাকিরাও কম বেশি আহত হন। নুলিয়া ও পুলিশ কর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে। সেখানে সুগম ও শুভজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

দেবাশিস বিশ্বাস নামে সুগমের বন্ধু জানান, “আমরা কল্যাণী শহিদপল্লি থেকে এসেছি আজই। সুগম থাকে হালিশহর। আমরা আজ সকাল ৮টায় এখানে নামি। আমরা যখন সমুদ্রে নেমেছিলাম তখন বৃষ্টি ছিল না। পরে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। আমরা উঠে আসার পর এই ঘটনা ঘটে। বাজ পড়ে খুব জোরে। শুভজিৎ আমাদের পাড়াতেই থাকে। বাগমোড়ে বাড়ি সুগমের। ওদের একজন ক্যুরিয়ার ডেলিভারির কাজ করে। একজনের গাড়ির ব্যবসা।” চোখের সামনে দুই বন্ধুকে শেষ হয়ে যেতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন দেবাশিসও।

হাসপাতালে বসেই বাড়িতে ফোন করেন তিয়াশা। ওপার থেকে ফোনটা ধরতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি, “ও ছোট মা আমরা হাসপাতালে। সুগম আর নেই ছোট মা। আমি দিঘা হাসপাতালে। সুগমের বাজ পড়েছে গায়ে। সুগম আর বেঁচে নেই গো।” ফোনের ওপারে যিনি, তিনি শুধুই চিৎকারই করে চলেছেন। তাঁর জন্যও যে এই খবর বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো, তা বোঝা যাচ্ছিল স্পষ্ট।

এদিনই পুরুলিয়ায় তিনটি আলাদা জায়গায় তিনজন মহিলা বজ্রপাতে মারা গিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার টকরিয়া মোড়ে বাস ধরতে আসার সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় মঙ্গলি মুর্মুর (৬২)। মাঠে কাজ করার সময় মারা যান আড়শা থানার বলিয়া গ্রামের চন্দনা মাহাতো (৫৫)। কোটশিলা থানার চাতরানি গ্রামে পুকুর থেকে স্নান সেরে ফেরার পথে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় হীরা কুমার (৩৫) নামে আরও এক মহিলার।