লক্ষ্য ‘মিনি ব্রিগেড’! পাঁচ বছরে এই প্রথম নন্দীগ্রামে পা দিতে চলেছেন মমতা

সোমবার যে 'নিউটনের তৃতীয় সূত্র'এর পূর্ণ প্রয়োগ দেখতে চলেছে বঙ্গ রাজনীতি, তা স্পষ্ট রাজনীতির কুশীলবদের কাছে।

লক্ষ্য 'মিনি ব্রিগেড'! পাঁচ বছরে এই প্রথম নন্দীগ্রামে পা দিতে চলেছেন মমতা
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 17, 2021 | 10:57 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: ২০১৬ থেকে ২০২১। মাঝের ব্যবধান পাঁচ বছর। এই পাঁচ বছরে এই প্রথম আবার নন্দীগ্রামের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ৭ জানুয়ারি বাতিলের পর আগামিকাল, ১৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের (Nandigram) গোপালনগর মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা। আর শুভেন্দু গড়ে মমতার এই সভাকেই ‘মিনি ব্রিগেড’এ পরিণত করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

একেবারে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তায় নন্দীগ্রামের গোপালনগর মাঠ। পুলিসে পুলিস ছয়লাপ চর্তুদিক। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পালা। একেবারে নীচুস্তরে কর্মী সমর্থক থেকে শুরু করে স্থানীয় উচ্চস্তরীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যেও তৎপরতা তুঙ্গে। এই সভা তৃণমূলের কাছে এক নয়া চ্যালেঞ্জ।

শুভেন্দু অধিকারী চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, ৮ জানুয়ারির সভাকে ‘ঐতিহাসিক সভা’ করে তোলার। লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করার ডাক দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন জমায়েত হয়েছিল বটে, তবে ‘অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়’এ শুভেন্দুর সেই সভা ঐতিহাসিক হয়ে উঠতে পারেনি। মমতার সভায় তিন গুণ অর্থাৎ তিন লক্ষ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, এ যেন ক্ষমতা প্রদর্শনের সভা! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মাঠে সভা করছেন, তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় তার আক্ষরিক অর্থ।

সভাস্থল পরিদর্শন করছেন পুলিস কর্তারা

নন্দীগ্রাম তেখালির মাঝে গোপালনগর মাঠ। পাশেই সেই জনতা ইটভাটা। যেখানে চাপা পড়ে রয়েছে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ইতিহাস। তৎকালীন সময়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করতেন, এখানেই বাম আমলে দেওয়া হত আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ। ঠিক তার পাশেই সভা করবেন মমতা।

তৃণমূলের জমি আন্দোলনের ইতিহাসের পাতা ওল্টালে বেরিয়ে আসবে আরও একটি বিষয়। ২০১৬ সালে এই মাঠেই সভা করেছিলেন মমতা। আর এখান থেকেই বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সেই শুভেন্দু আজ তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে সভা করে দাবি করেছেন, দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে ৩৫টি আসনের ৩৫টিতেই তৃণমূল কংগ্রেস হারবে। তারই জবাব দিতে এদিন মমতার সভা। নন্দীগ্রামের মাটিতে এখন অধিকারী বনাম মমতা লড়াই!

সভামঞ্চ

নেত্রীর এদিনের সভার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জেলা পরিষদের সহ সভাপতি শেখ সুফিয়ান বলেন, “তিন লক্ষ মানুষের ভিড় হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়।” জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তিনটি বিষয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস পেতে উৎগ্রীব নন্দীগ্রামবাসী। এক. কর্মসংস্থান, দুই. নন্দীগ্রামে ফের শিল্প, তিন. কৃষির জন্য ক্যানেলগুলি সংস্কার। তবে ৩ লক্ষের লক্ষ্যপূরণে সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। তবে উল্লেখ্য, এদিন মমতার সভায় ডাক পাননি জেলার দুই সাংসদ। কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও অন্যজন পুত্র তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন: এবার কি হিন্দু ভোটে কোপ! ‘জয় বাংলা’ ডাক দিয়ে শিবসেনার বঙ্গে পা

অন্যদিকে, মমতা গড়ে আবার রোড শো করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবারই দক্ষিণ কলকাতায় জোড়া কর্মসূচি রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। অর্থাৎ সোমবার যে ‘নিউটনের তৃতীয় সূত্র’এর পূর্ণ প্রয়োগ দেখতে চলেছে বঙ্গ রাজনীতি, তা স্পষ্ট রাজনীতির কুশীলবদের কাছে।