Mamata Banerjee: ‘মহিলা ডিএম-এর বিরুদ্ধে যদি কূটকাচালি কর, আমি কিন্তু একদম ভেঙে দেব সব’, কড়া ধমক মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee: এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুর কিছুটা পরেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে দাঁড় করান তিনি। আলোচনার শুরুটা হয় টেন্ডার নিয়ে।

Mamata Banerjee: ‘মহিলা ডিএম-এর বিরুদ্ধে যদি কূটকাচালি কর, আমি কিন্তু একদম ভেঙে দেব সব’, কড়া ধমক মুখ্যমন্ত্রীর
পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 31, 2022 | 4:51 PM

পুরুলিয়া: প্রশাসনিক সভায় বরাবরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বিরোধী নেত্রী’র ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। বিশ্লেষকদের কথায়, প্রশাসনিক কর্মী, তাঁদের কাজের খুঁটিনাটি বিচার-সমালোচনার মাধ্যমে আক্ষরিক অর্থে তিনি প্রশাসনিক প্রধানের পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকাও পালন করে থাকেন। অন্ততপক্ষে জনমানসের কাছে তাঁর সেই ভাবমূর্তি প্রতীয়মান। বাংলার উচ্চ পদস্থ কর্তা, বিশেষত মহিলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের ক্ষমতা ও মর্যাদা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, তা এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কার্যত সাফ জানালেন তিনি। “জেলাশাসকদের বিরুদ্ধে কোনও কূটকাচালি শুনব না, সব ভেঙে দেব।” পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে দাঁড় করিয়ে সরাসরি বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুর কিছুটা পরেই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে দাঁড় করান তিনি। আলোচনার শুরুটা হয় টেন্ডার নিয়ে। প্রশ্ন করেন, “জেলা পরিষদ কী কাজ করছে? জেলা পরিষদের সভাধিপতি? ১৫ শতাংশ টাকা তো আপনারা এখন পাচ্ছেন, কমিশন থেকে।”

টাকা ঠিক কোন কোন খাতে ব্যবহার করা হয়েছে, তার বর্ণনা দেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কো-অর্ডিনেশন রয়েছে?” ইতিবাচক উত্তর পেয়েছিলেন তিনি। এরপরও মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, “ডিএম-এর সঙ্গে সহযোগিতা করছেন?” এরপরই জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে টেন্ডার নিয়ে প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনাদের সব টেন্ডার কি পিডব্লুউডি নিয়ে চলে যায়?” ফের প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ত দফতর কি সময়মতো টেন্ডার করে? জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ উত্তর দিয়েছিলেন, “আমাদের ওপেন টেন্ডার তো…” মুখ্যমন্ত্রী ফের প্রশ্ন করেন, “নিজের কনডাক্টরকে দেবে বলে ফেলে রাখেন?” মুখ্যমন্ত্রী কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলেন, “এইভাবে আমার নিজের লোককে দেওয়ার জন্য প্রজেক্টটা ছ’মাস ফেলে রাখলাম। তাতে আমার দলের বদনাম হল। আমার সরকারের বদনাম হল। আমি কি তার অনুমতি দেব?”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। তিনি দাবি করছিলেন, নিয়ম মেনেই কাজ হচ্ছে। কিন্তু তখনই মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “আমি যদি বলি, আমার কাছে সব খবর আছে।” টেন্ডার নিয়ে যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখে রিপোর্ট মলয় ঘটকের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

তখনই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিএম-এর কাছ থেকেও একটা রিপোর্ট চাই।’ এরপরই জেলাশাসকদের প্রসঙ্গে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। সোজাসুজি তিনি বলেন, “কেউ কেউ যদি ভেবে থাক, আমি দুদিন অন্তর ডিএম-এসপি চেঞ্জ করব, সেটা কিন্তু আমি করছি না। এই ডিএম-এসপির সঙ্গেই কাজ করতে হবে। এসপি অনেক ভাল কাজ করেছেন। অনেকদিন সুন্দরবনে কাজ করেছেন, এখন এখানে এসেছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডিএম-এর হাসব্যান্ডও ডিএম আছেন, এটা মাথায় রাখবেন। আমার ৮জন মহিলা ডিএম আছেন। তাঁদের জন্য আমার গর্ব হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে যদি কূটকাচালি কর, আমি কিন্তু একদম ভেঙে দেব সব।” জেলা পরিষদের সভাধপতিকে তিনি নির্দেশ দেন, “ইউ লিড দ্য টিম। তোমাকে বলেছি টিম চালাতে, অন্য কেউ চালাবে না। তুমি শিবাজীর কথায় চলবে না। ডিএমকে কনফিডেন্সে নিয়ে সব কাজ করবে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এর থেকে বেশি আর কিছু বললাম না। হাটে হাঁড়ি ভাঙলাম না।”