Purulia: পায়ে চোট নিয়ে ১০ বছর মাঠ থেকে দূরে, বিক্রি করেছেন সবজি; সফল অস্ত্রোপচারে ফের স্বপ্ন দেখছেন পুরুলিয়ার তাপস
Purulia News: নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন গরীব ঘরের ওই ছেলে। আবার মাঠে ফিরবেন।
পুরুলিয়া: হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফুটবল খেলা। শেষ হতে বসেছিল দরিদ্র পরিবারের ওই যুবকের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন। পুরুলিয়া শহরের এক বেসরকারি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ফের নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ২২ বছর বয়সী পুরুলিয়ার কুকুরগড়িয়া গ্রামের প্রতিভাবান ফুটবলার তাপস বাউরি। সফল হয়েছে অস্ত্রোপচার। মাস ছয়েকের মধ্যে মাঠেও ফিরতে পারবেন তিনি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হয়েছে তাঁর। তাই খরচও লাগেনি। সম্পূর্ণ নিখরচায় নিজের জেলাতেই এমন অস্ত্রোপচারে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে তাঁর পরিবারও।
আট বছর আগেও মাঠে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ছেলেটি। দু’চোখে স্বপ্ন ছিল ফুটবল পায়ে নিয়ে মাঠময় ছুটে বেড়াবেন তিনি, গ্যালারি থেকে কানে আসবে শুধুই হাততালির শব্দ। কিন্তু বিধি বাম। একদিন খেলতে খেলতেই পায়ে চোট লাগে। হাঁটুতে যন্ত্রণা। গেলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার জানালেন, হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে। খরচ করতে পারলে চিকিৎসাও আছে। কিন্তু সামর্থ্য ছিল না। তাই চিকিৎসা করানো হয়নি। এরপর আটটা বছর এলাকাতেই বাজারে সব্জি বিক্রি করছেন। কিন্তু রাতে চোখ বুজলেই বিস্তীর্ণ মাঠ, ফুটবল ডাক পাঠায় তাঁকে।
চিকিৎসা করেছেন চিকিৎসক জয়দীপ মণ্ডল। তিনি বলেন, শনিবারই অস্ত্রোপচার হয়েছে। রবিবার থেকেই হাঁটতে পারছেন তিনি। এই দিনটার জন্য আটটা বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে তাপসকে। আট বছর আগে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ের লিগামেন্ট ছিড়ে যায় ওই যুবকের। বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ বলে দূরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেননি। খেলার আশা ছেড়ে একরাশ দুঃখ নিয়ে পুরুলিয়া শহরের বড়হাটে সবজি বিক্রি করতে শুরু করেন। এরইমধ্যে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ আসে।
অর্থপেডিক সার্জেন জয়দীপ মণ্ডল বলেন, “ফুটবল খেলার সময় লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছিল আট বছর আগে। কিন্তু অর্থনৈতিক কারণে চিকিৎসা করাতে পারেননি। গতকাল আমরা এখানে চিকিৎসা করি। একটা মাইক্রো সার্জারি করি। ছিঁড়ে যাওয়া লিগামেন্টটা রিকনস্ট্রাকশন করি। অস্ত্রোপচার সফল, রোগীও ভাল আছেন। উনি এখন হাঁটাচলা করতে পারবেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ফুটবল মাঠেও তিনি ফিরতে পারবেন বলেই আমরা আশা রাখছি।”
ওই চিকিৎসক জানান, “পুরুলিয়াতে এর আগেও আমি এরকম চিকিৎসা করেছি। তবে এই রোগী আমাদের কাছে স্পেশাল। কারণ, তিনি দীর্ঘদিন খেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই সমস্যার কারণে খেলা থেকে এতদিন বাইরে। আশা রাখছি ওনাকে ওনার ময়দানে আবার ফিরিয়ে দিতে পারলাম। মোটামুটি ছ’মাস সময় লাগবে খেলাধূলায় ফিরতে। তবে হাঁটাচলা শুরু হয়ে যাবে আজ থেকেই। ঘণ্টা দেড়েকের অপারেশন।” ডাক্তারবাবু নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছেন তাপসকে। মাঠে ফেরার দিন গুনছেন এখন।”