সুজাতাকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস সৌমিত্রর
সোমবারই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলেন সৌমিত্র। অভিযোগ, তোলেন তৃণমূল তাঁর ঘর ভেঙেছে।
কলকাতা: স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদের আইনি নোটিস পাঠালেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে সুজাতাকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। সোমবারই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে সৌগত রায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে শরিক হন তিনি। এরপরই সাংবাদিক বৈঠক করে সৌমিত্র জানান, সুজাতার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখবেন না তিনি। ডিভোর্স দেবেন। এদিন তারই প্রক্রিয়া শুরু হল।
আরও পড়ুন: বড়দিনের আগে দক্ষিণেশ্বরের পথে মেট্রো, আগামিকাল থেকেই ট্রায়াল রান
সোমবার দুপুরে হঠাৎই খবর ছড়ায়, তৃণমূল ভবনে গিয়েছেন সুজাতা মণ্ডল। শুরু হয় চাপানউতোর। যে সুজাতা দু’দিন আগেও ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গলা ফাটিয়েছেন, হঠাৎ তৃণমূলের কার্যালয়ে তাঁর কী দরকার পড়ল! কিছুক্ষণের মধ্যেই দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায় গোটা ছবিটা। তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায় জানান, সুজাতা তাঁদের দলে যোগ দিচ্ছেন। এরপর দিনভর সংবাদমাধ্যমে ঘুরেছে সুজাতা-সৌমিত্রর বিচ্ছেদের উপাখ্যান।
আরও পড়ুন: কয়লা-কাণ্ডে কলকাতায় সিবিআই হানা, একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে শুরু তল্লাশি
সৌমিত্রের দাবি, তৃণমূল তাঁর বউ ‘চুরি’ করেছে। ‘ঘরের লক্ষ্মী’কে ঘরছাড়া করেছে। সোমবারই কাঁপা কাঁপা গলায় সংবাদমাধ্যমের সামনে সৌমিত্র বলেছেন, “দশ বছর আগে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছিলাম তোমায়। জেনে রেখো সৌমিত্র খাঁ তোমাকে ভালবেসেছিল। ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও মেয়ের দিকে আমি তাকাইনি।” পাল্টা সুজাতার অভিযোগ, ঘরে, দলে কোথাওই যোগ্য সম্মান পাননি তিনি। লক্ষ্মী চঞ্চলা, তাই সে আর থেমেও থাকেনি। এরপরই সুজাতাকে মিউচুয়াল ডিভোর্সের নোটিস পাঠান সৌমিত্র খাঁয়ের আইনজীবী।
সৌমিত্র খাঁয়ের আইনজীবীর তরফে পাঠানো ডিভোর্সের নোটিসে বলা হয়েছে-
* আমার মক্কেল জানিয়েছেন, গত ছ’মাস ধরে আমার মক্কেল ও আপনি একসঙ্গে থাকছেন না। গত ছ’মাস ধরে আপনাদের আন্তরিক সম্পর্ক নেই। * আমার মক্কেলের মনে হয়েছে আপনি হাইপারটেনসিভ এবং ঝগড়ুটে একজন মানুষ। * বিবাহ সূত্রে একসঙ্গে থাকাকালীন আমার মক্কেলকে আপনি জোর করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যদের থেকে দূরে থাকতে। আপনি আমার মক্কেলের সঙ্গে শুধু ঝগড়াই করেননি আমার মক্কেলকে নিগ্রহ, মারধরও করেছেন। তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও একই ব্যবহার করেছেন। *আমার মক্কেলের চরিত্র নিয়ে আপনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তাঁর বাড়ি থেকেই তাঁকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। * ২০১৯ সালে আমার মক্কেল লোকসভা ভোটে জেতার পর আপনি নিজে বিজেপির উঁচু পদে বসতে চেয়ে আমার মক্কেলকে বারবার জোর করেছেন। বিজেপিতে যোগ্যতাই শেষ কথা, তারা পরিবারতন্ত্রকে উৎসাহ দেয় না। * বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য আমার মক্কেলকে বারবার আপনি চাপ দিয়েছেন। বিজেপির প্রতি সৎ আমার মক্কেল যখন তাতে রাজি হননি, আপনি তাঁকে হেনস্তা করেছেন, শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেছেন। * আপনার এই আচরণ আমার মক্কেলের জন্য মানসিক নির্যাতনের সমান। এর ফলে শুধু আমার মক্কেলের ব্যক্তিগত জীবনই নয়, সামাজিক জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সমাজে আমার মক্কেলের একটা স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্যতা আছে। * উপরোক্ত কারণগুলির জন্যই আমার মক্কেল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এই ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যদিও এই নোটিস সুজাতা মণ্ডল পেয়েছেন কি না, সে বিষয়ে এখনও প্রকাশ্যে তিনি কিছু জানাননি।