Deadbody of Son: কোলে শুয়ে ‘জীবিত’ ছেলে! গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল, আসল ঘটনা জেনে শিউরে উঠলেন প্রতিবেশীরা
Deadbody of Son: বাইরে থেকে ছেলের গলার আওয়াজ না পেয়েই বাড়িতে হাজির হন প্রতিবেশীরা। তার আগেই মৃত্যু হয়েছে ছেলের।
মহেশতলা : এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে আগেই। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে আরও আগে। সম্বল বলতে ছিলেন বড় ছেলে। সেই ছেলের মৃত্যু কোনও মতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বৃদ্ধা। স্বামী- ছেলেকে হারিয়ে মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন অনেক দিন আগেই। আর এবার আরও এক পুত্রশোক মানতেই নারাজ মহেশতলার বাসিন্দা বকুল সেনগুপ্ত। তাই ছেলে মারা গেলেও সে খবর কাউকে জানাননি তিনি। ছেলের দেহ আগলে বসেছিলেন বাড়িতেই। ছেলে বেঁচে আছেন, ভেবে নিয়েই খাওয়ানোর চেষ্টাও করছিলেন তিনি। অবশেষে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হতেই সামনে আসে আসল ঘটনা। প্রতিবেশীদের চেষ্টায় চিকিৎসক এসে জানান যে কৌশিক সেনগুপ্ত নামে ওই বৃদ্ধার ছেলের মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলা থানার অন্তর্গত মহেশতলা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চককেন্দুয়ার ঘটনা। এই এলাকার একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন বকুল সেনগুপ্ত নামে ওই বৃদ্ধা। তাঁর পুত্র কৌশিক সেনগুপ্তের মৃত্যু হয়েছে সম্প্রতি। মৃত্যুর অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর সেই খবর প্রকাশ্যে আসে।
স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবর্তে বকুল সেনগুপ্ত আয়কর বিভাগে একটি কাজ করতেন। তাঁর ছেলে কৌশিক অতিরিক্ত নেশা করতেন ও তেমন কোনও কাজই করতেন না। দীর্ঘদিন নেশা করতে করতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘরেই থাকতেন কৌশিক। এমনকি তাঁর কোনও আধার বা ভোটার কার্ডও ছিল না বলেই জানা গিয়েছে। সেই কারণে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও ভর্তি করানো যায়নি।
প্রতিবেশীরা জানান, রবিবার সকাল থেকেই বৃদ্ধার ছেলের কোনও কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল না। রবিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ পাড়ার কিছু যুবক ঘরের ভিতরে ঢুকলে দেখতে পান বৃদ্ধা তাঁর কোলে শুয়ে থাকা ছেলেকে গ্লুকোজ মেশানো জল খাওয়াচ্ছেন। যদিও গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে যাচ্ছে সেই জল। এই দৃশ্য দেখে বৃদ্ধাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান তাঁর ছেলে গ্লুকোজ খাচ্ছেন এবং ঘুমোচ্ছেন। মায়ের দৃঢ়বিশ্বাস ছেলে এখনও বেঁচে আছেন।
বিষয়টি নজরে আসতে পাড়ার বাসিন্দারা ওয়ার্ডের পুরপিতা মুকুল মণ্ডলকে পুরো ঘটনা জানান। তাঁর উদ্যোগে একজন চিকিৎসক আনা হয়। চিকিৎসক জানান, ছেলে মারা গিয়েছে। চিকিৎসকের প্রাথমিক অনুমান অন্ততপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে মারা গিয়েছেন ছেলে। আকরা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। যদিও মায়ের বিশ্বাস তাঁর ছেলেকে চিকিৎসার জন্যই পাড়ার লোকেরা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছেন। বছর দশেক আগে ছোট ছেলের মৃত্যুর পর থেকেই আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন বকুল সেনগুপ্ত, স্বামীও মারা যান বহু বছর আগেই। এমনকি ছোট ছেলের মৃত্যুর কথাও স্বীকার করেন না তিনি।