‘টিকা দিচ্ছেন না কেন?’, রাস্তায় ‘হেনস্তা’ মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে, বন্ধ টিকাকরণ!

COVID Vaccination:ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ অগস্ট সুরেন্দ্রনগরের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ চলছিল। সরকারি নির্দেশমতো ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মায়েদের টিকাকরণ চলছিল। টিকাকরণ কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী।

'টিকা দিচ্ছেন না কেন?', রাস্তায় 'হেনস্তা' মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে, বন্ধ টিকাকরণ!
আক্রান্ত নমিতা মণ্ডল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 18, 2021 | 10:03 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: টিকা (COVID Vaccination) নিয়ে অসন্তোষের জেরে এক মহিলা স্বাস্থ্য়কর্মীকে মারধর ও হুমকির ঘটনায় ৫দিন ধরে বন্ধ টিকাকরণ কেন্দ্র। ঘটনায় অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ, জামিন পাওয়ার পর ফের সঙ্গীকে নিয়ে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর উপর হামলা করেন অভিযুক্ত। লাগাতার হুমকির জেরে আতঙ্কে আর কাজে যোগ দেননি আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী। ঘটনায় পাথরপ্রতিমার ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি পাথরপ্রতিমার হেড়ম্বগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুরেন্দ্রনগরে ঘটেছে।

ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ অগস্ট সুরেন্দ্রনগরের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ চলছিল। সরকারি নির্দেশমতো ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মায়েদের টিকাকরণ চলছিল। টিকাকরণ কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন দুই স্বাস্থ্যকর্মী। অভিযোগ, টিকাকরণ চলার সময়ে আচমকা এক ব্যক্তি সেখানে এসে টিকা দেওয়ার জন্য জোরাজুরি শুরু করে। স্বাস্থ্য়কর্মীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে কেবল মায়েদেরই টিকাকরণ হচ্ছে। এরবাইরে আর কাউকেই টিকা দেওয়া হবে না। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি তা মানতে চাননি। সময়ে দেখে নেবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।

সেদিন টিকাকরণ সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুপুরে নমিতা মণ্ডল নামের ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে সেই ব্যক্তি তাঁর দুই সঙ্গীকে নিয়ে ঘিরে ধরেন। টিকা কেন দেওয়া হয়নি, এই নিয়ে বচসা শুরু হলে নমিতাদেবীকে মারধর ও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, তারপর থেকেই বাড়ি গিয়েও নমিতাদেবীকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই ভয়ে পেয়ে আর কাজে আসেননি ওই স্বাস্থ্যকর্মী। পাথরপ্রতিমার ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের কাছে ও সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নমিতা।

অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পাথরপ্রতিমা থানার পুলিশ। ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মাধাই বর নামে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু একদিন পরেই জামিন পেয়ে যান ওই ব্যক্তি। জামিন পেয়েই নিজের দুই সঙ্গীকে নিয়ে গিয়ে ফের নমিতার বাড়িতে হুমকি দেন মাধাই বলে অভিযোগ। এরপর আতঙ্কে, নিজের পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কাজে যাওয়াই বন্ধ করে দেন নমিতা। ঘটনাটি জানানো হয় ব্লক স্বাস্থ্য দফতরেও। সেখান থেকে অভিযোগ পেয়ে ধৃত মাধাই বর, রাজেশ বর ও বলাই বরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আক্রান্ত নমিতার কথায়, “আমাকে রাস্তায় মারধর করেছে। এসে হুমকি দিয়ে বলেছে, ‘টিকা কোথায়, টিকা দিন’। বোঝানোর চেষ্টা করেছি। লাভ হয়নি। আমার বাড়িতেও হামলা করেছে। হুমকি দিয়েছে। ছোট বাচ্চা নিয়ে থাকি। এরকমভাবে চললে কাজ করব কী করে! তাই কাজে আসা বন্ধ করেছিলাম। স্বাস্থ্য় দফতরেও জানিয়েছি। তারপরেই পুলিশ ওদের গ্রেফতার করেছে।”

ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা খবর পাওয়ামাত্রই আর দেরি করিনি। সরাসরি থানায় অভিযোগ করেছি। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা লাগাতার সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন তাঁদের নিরাপত্তা আগে সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। যে মহিলার উপর হামলা করা হয়েছে তিনি খুব সাধারণ ঘরের মহিলা। এই ধরনের হামলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। ফলে আমরা পদক্ষেপ করেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। টিকাকরণের কাজও খুব দ্রুত শুরু হবে।” ঘটনার খবর পাওয়ার পর আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাশনাল হেলথ মিশনের রাজ্য সংগঠনের সদস্যরা। আরও পড়ুন: ‘ঝেঁকে ধরেছিল তালিবান, ভারতের পাসপোর্ট দেখাতেই…’ গলা ধরে আসে চুঁচুড়ার কাবুলিওয়ালার