‘পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে ও…’, স্বামীর কথায় তাজ্জব গোটা পাড়া

Sonarpur: তাঁরাই প্রথমে বাড়িতে ঢোকেন। দেখেন বিছানায় তনিমার দেহ পড়ে রয়েছে। পরে তাঁরা তনিমার বাপেরবাড়িতে খবর দেন।

'পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে ও...', স্বামীর কথায় তাজ্জব গোটা পাড়া
নিহত গৃহবধূ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2021 | 1:14 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিয়ের পর থেকেই অত্যাচার শুরু হয়েছিল। দাবিমতো পণ দেওয়ার পরও চলত বারবার টাকা আদায়ের চেষ্টা। বাপের বাড়ি থেকে যেন তেন প্রকারণে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকতেন স্বামী। এরই মাঝে হয় প্রথম সন্তান। অত্যাচার কমেনি, বরং বাড়ে। এইভাবে চলে বছর নয়েক। এরপর আবারও অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু অত্যাচারের মাত্রা তখন আরও ছাড়িয়েছে। তারপরই একদিন হঠ করে বাপেরবাড়িতে খবর যায়, বধূর মৃত্যু হয়েছে! আর তার কারণ নিয়েও রয়েছে গাঢ় ধোঁয়াশা। ঘটনাটি ঘটেছে মগরাহাটের (Mograhat) গোলবাড়ি এলাকায়। মৃতের নাম তনিমা ঢালি।

মগরাহাট থানার গোলাবাড়ির এলাকার তনিমার সঙ্গে বছর নয়েক আগে দক্ষিণ জগদ্দলের বাসিন্দা সাবির ঢালির বিয়ে হয়। তাঁদের ৮ বছরের এক সন্তানও রয়েছে ৷ সম্প্রতি ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তনিমা ৷ প্রথম সন্তান হওয়ার পর থেকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য তনিমার উপর চাপ দিতেন সাবির আলি। টাকা না আনতে পারে তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হত বলেও অভিযোগ ৷

পরিবারের অভিযোগ,  সেই অত্যাচারের মাত্রা ইদানীং আরও বেড়েছিল। মাঝেমধ্যেই সাবির মদ খেয়ে বাড়ি ফিরতেন। মত্ত অবস্থায় রাতে বাড়ি ঢুকে তনিমাকে বেধড়ক মারধর করতেন বলে অভিযোগ ৷ শনিবারও তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়। সাবিরের বাড়ি থেকে চিত্কার চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু রোজকার ঘটনা ভেবে তাতে বিশেষ আমল দেননি। পরে তাঁদের সব নিঃস্তব্ধ হয়ে যায়। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, সব ঠিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরও কোনও আওয়াজ না হওয়ায়, সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের।

তাঁরাই প্রথমে বাড়িতে ঢোকেন। দেখেন বিছানায় তনিমার দেহ পড়ে রয়েছে। পরে তাঁরা তনিমার বাপেরবাড়িতে খবর দেন। তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যরা গিয়ে তনিমাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। মেয়ের মৃত্যুর কারণ জামাইয়ের কাছে জানতে চান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু জামাইয়ের কথায় অসঙ্গতি থাকে।

তনিমার এক আত্মীয়ের কথায়, “তনিমা খুব ভালো মেয়ে। শান্ত মেয়ে। গ্রামে ভালো মেয়ে নামেই পরিচয় ছিল তাঁর। মেয়েটার স্বামী-শ্বশুর মত্ত থাকত। মেয়েটাকে সব সময়ই অত্যাচার করত ওরা। আমরা খবর পাই, গলায় ফাঁস লাগানো ছিল। আমার স্বামী সাবির বলছে, গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার জন্য ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে তনিমা। কিন্তু এটা আমরা মানছি না।”

কী ভাবে মৃত্যু, তা নিয়ে তনিমার স্বামীর কথায় একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। তনিমার বাপেরবাড়ির দাবি, একবার তনিমার স্বামী জানিয়েছিলেন, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। অন্য সময় বলছে আগের রাতে নাকি গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে। এখানেই সন্দেহ পরিবারের। পরিবারের অভিযোগ বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তনিমাকে।

ইতিমধ্যে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ ৷ ঘটনায় মৄতার বাবা সোনারপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ ঘটনার তদন্‌ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ এর পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত সাবির ঢালি ৷ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ৷ আরও পড়ুন: ভেবেছিলিস বেঁচে যাবি? বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে থ্রেট! সামনে চলে আসে বাস, পরের ঘটনা পুরো সিনেমা…