Gosaba: এবার রোগী নিয়ে ছুটবে ‘ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স’, ৫১ লাখি এই জলযান ঘিরেও বিতর্ক

Abhijnan Naskar

Abhijnan Naskar | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Updated on: Mar 20, 2023 | 12:05 AM

Sundarban: দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও বাংলাদেশ জল সীমান্তের শেষ ব্লকের নাম গোসাবা। সুন্দরবনের এই ব্লকে ১৪টি গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে। দ্বীপের মধ্যে একাধিক গ্রামপঞ্চায়েত।

Gosaba: এবার রোগী নিয়ে ছুটবে 'ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স', ৫১ লাখি এই জলযান ঘিরেও বিতর্ক
এই স্পিডবোট নিয়েই বিতর্ক।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নদীমাতৃক সুন্দরবনের গোসাবায় (Gosaba) বিধায়ক তহবিল থেকে কেনা হল অত্যাধুনিক স্পিডবোট। চারদিক নদীতে ঘেরা এই এলাকায় একমাত্র ভরসা জলযান। রাতবেরাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা প্রসূতি মায়েদের কোনও সমস্যা হলে হাসপাতালে যেতেই চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। জলপথে গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালই এত দূর! সেইসব কথা মাথায় রেখেই গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল ২০২১- ২২ অর্থবর্ষে তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকায় এই স্পিডবোট কিনেছেন বলে জানান। ৫১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই স্পিডবোর্ড নিয়ে যদিও ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিরোধীরা তো বিঁধছেই, দলের অন্দরেও প্রচুর কথা শোনা যাচ্ছে। এত খরচ করে ‘ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স’ না এনে নদীবাঁধ সারালে উপকার হতো বলে দাবি করেছেন জেলা পরিষদের সদস্য।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ও বাংলাদেশ জল সীমান্তের শেষ ব্লকের নাম গোসাবা। সুন্দরবনের এই ব্লকে ১৪টি গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে। দ্বীপের মধ্যে একাধিক গ্রামপঞ্চায়েত। সব মিলিয়ে গোসাবা ব্লক এলাকায় বসবাস করেন ২ লক্ষ ৪৭ হাজারের মতো মানুষ। এই মানুষগুলোর মাঝ রাতে বিপদের সমাধান তো দূরঅস্ত, দিনেরবেলাও বিপদ কড়া নাড়লে নাগাল ঠেলে পালানোর পথ নেই। কেউ যদি অসুস্থ হন, প্রমাদ গুনতে থাকেন বাড়ির লোকেরা। মনে প্রশ্ন ঘোরে, চিকিৎসাটুকুর সুযোগ দেবে তো?

গোসাবা ব্লকে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যেতে এখনও মানুষের ভরসা সেই নৌকা। এই গোসাবার একেবারে দূরবর্তী শেষ গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা কুমিরমারি, পাশেই পঞ্চায়েত আমতলি। এখান থেকেই জলপথে গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হলে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লাগে। সেই সমস্যাকে মাথায় রেখেই সুব্রত মণ্ডল এই স্পিড বোড কেনার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান। ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স হিসাবে এটি ব্যবহার করতে চাইছেন তিনি।

এই খবরটিও পড়ুন

ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচ থেকে গোসাবার বিডিও ঘাটে ২০ আসন বিশিষ্ট এই স্পিডবোটটি চলেও এসেছে। মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যেই চার ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে রোগীকে পৌঁছে দিতে পারবে এই জলযান। শুধু গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালই নয়, অর্ধেকেরও অর্ধেক সময় ছোট মোল্লাখালি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে রোগী নিয়ে। গোসাবা ব্লক এলাকার মধ্যে থাকা সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও সুন্দরবন উপকূল থানার পুলিশের জন্য স্পিডবোট থাকলেও গোসাবার বিডিও কিংবা হাসপাতালের জরুরি ভিত্তিতে কাজের ক্ষেত্রে কোনও স্পিডবোট এতদিন ছিল না।

বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের কথায়, “গোসাবায় ৯টা দ্বীপ, ১৪টা গ্রামপঞ্চায়েত। শেষ গ্রাম কুমীরমারি থেকে আসতে গেলে তিনটে নদী পার করতে হয়। খেয়া পেরিয়ে আসেন মানুষ। এরকম আমতলি, রাধানগর তারানগর আছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলির মানুষের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। এই ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সে প্রসূতি মায়েরা তো আসতে পারবেনই। হঠাৎ কারও স্ট্রোক হল, হার্ট অ্যাটাক হল, সাপে কামড়াল বা অ্যাক্সিডেন্ট হল, তার জন্যও এটা কাজে লাগবে। এর ফলে দ্রুত গদখালিতে এনে প্রয়োজনে কলকাতাও পাঠানো যাবে। আমরা মূলত স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য এটা কাজে লাগাব। কোনও দুর্যোগ, বিপর্যয়ে প্রয়োজন হলেও কাজে লাগবে।”

যদিও জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের অনিমেষ মণ্ডলের বক্তব্য, “উনিই বলতে পারবেন কেন এটা কিনেছেন। আগে জয়ন্তবাবু (জয়ন্ত নস্কর) যখন ছিলেন, বিধায়ক তহবিলের টাকা এলে তা নিয়ে সকলের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন। এক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আর দেড় বছর আগে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর একটা ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছিল। তবে সেটা কে দেখবে, কার রক্ষণাবেক্ষণে থাকবে এ নিয়ে আর পথ চলতেই পারেনি। সেটা বন্ধ হয়ে যায়। এটা না করে সব দ্বীপে মাতৃযান আনা, জেটিগুলি দেখলে ভাল হতো।”

Latest News Updates

Follow us on

Related Stories

Most Read Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla