Kali Puja 2023: সূর্যের সঙ্গে ‘আড়ি’ কালীর, রাতেই প্রতিমা গড়ে রাতেই হয় বিসর্জন
Kali Puja 2023: কথিত আছে, সেই সময় ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালীর আরাধনা করত। 'মা'-কে সন্তুষ্ট করার জন্য কখনও পশুবলি আবার কখনও নরবলি দেওয়া হত। একদা এই জঙ্গলে ভরা কুলিকপাড়ে গড়ে উঠেছে বর্তমানের রায়গঞ্জ শহর।
রায়গঞ্জ: প্রাচীনকালে কালীপুজোর ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় ডাকাতরাই মূলত এই শক্তির আরাধনা করত। এখন সেই ডাকতদের পুজোই রূর নিয়েছে সর্বজনীনের। উত্তর দিনাজপুরের জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত ছাদ বিহীন মন্দিরেই পূজিতা হন দেবী কালিকা। এই পুজোর বিশেষত্বই যে, একরাতে প্রতিমা গড়ে, সুর্যোদয়ের আগেই হয় বিসর্জন। পাঁচশো বছরের বহু ইতিহাস জড়িয়ে আছে রায়গঞ্জের দেবীনগর কালীবাড়িতে।
কথিত আছে, সেই সময় ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে কালীর আরাধনা করত। ‘মা’-কে সন্তুষ্ট করার জন্য কখনও পশুবলি আবার কখনও নরবলি দেওয়া হত। একদা এই জঙ্গলে ভরা কুলিকপাড়ে গড়ে উঠেছে বর্তমানের রায়গঞ্জ শহর। কিন্তু এখন ডাকাতরা না থাকলেও দেবীনগরের কালীবাড়িতে এখনও অতীতের রীতি মেনেই চলে পুজো। তবে কত সাল আগে বা কে এই পুজো প্রচলন করেছিলেন তা জানা যায়নি।
আনুমানিক এই পুজোর বয়স পাঁচ শতাধিক। জানা যায়, ডাকাতরা এই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পর অবিভক্ত বাংলাদেশের দিনাজপুরের জমিদার গিরিজানাথ রায় বাহাদুর ( যিনি ১৮৮২ – ১৯১৯ পর্যন্ত দিনাজপুরের জমিদার ছিলেন) দেবীর স্বপ্নাদেশে এই বেদীতে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে এখানে পূজা দিতে আসতেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর পরবর্তী জমিদার মহারাজা জগদীশ নাথ রায় বাহাদুর এই পুজোর দেখভাল শুরু করেন। এরপর জমিদারি প্রথা লুপ্ত হয়। দেশভাগের পর দিনাজপুরের যাঁরা কর্মচারী ছিলেন তাঁদের মধ্যেই কিছু মানুষ এদেশে চলে আসেন। এখানকার সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পান।এদেরই কয়েকজন বংশধর ও জমিদার পরিবারের পক্ষ থেকে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়। বর্তমানে এই ট্রাস্টি বোর্ড এবং কালীবাড়ি ও দুর্গামন্দির সমন্বয় কমিটি আজ এই পুজোর আয়োজন করেন।
অতীতে জমিদারদের প্রচলিত নিয়ম মেনে কালীপুজোর দিন সূর্যাস্তের পর গড়া হয় মূর্তি। সেই মূর্তিতেই রাতভর চলে পূজা। তারপর সূর্যোদয়ের আগেই বিসর্জন দেওয়া হয়। এখানে মন্দিরে কোনও ছাদ নেই। খোলা আকাশের নীচে দেবীর স্থান। ভক্তদের বিশ্বাস, কালী খুব জাগ্রত। নানা অলৌকিক ঘটনা এই মন্দিরের প্রতি ভক্তি আর আস্থা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই পূজার দিন ম এখানে। তাই মনের ইচ্ছা পূরণে বহু মানুষের ঢল নামে মন্দিরে।