Fraud Case: অচেনা মেয়ের সঙ্গে ফোনেই মাখামাখি, ছুটলেন দেখা করতেও; মোহিনী জালে জড়িয়ে ব্যবসায়ীর যা হল…
Uttar Dinajpur: উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকে বেশ কিছু দিন ধরেই একটি প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ আসছিল।
উত্তর দিনাজপুর: হঠাৎই চোপড়ার এক ব্যবসায়ীর মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন। ওপারে মিষ্টিভাষী এক মহিলা। এদিক সেদিক দু’ এক কথা, ফোনেই সোহাগে মাখামাখি। এরপরই বলেন, দেখা করতে চান। ব্যবসায়ীরও খুব তাড়া। তখনও ওই ব্যবসায়ী বুঝতে পারেননি মোহিনী ফাঁদ যে কত গভীরে পাতা। ‘ব্লাইন্ড ডেটে’ গিয়ে ২ লক্ষ টাকার উপরে খুইয়ে সে কথা বুঝতে পারেন তিনি। শুধু একজন নয়। চোপড়া পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, একটি প্রতারণা চক্র কাজ করছে এলাকায়। চারজনের টিম। একজন মেয়ে, তিনজন যুবক। মেয়েটি এলাকার ব্যবসায়ী, যুবকদের ফোন করে মিষ্টি কথার জালে জড়ান। এরপরই ডাকেন দেখা করার জন্য। যেখানে দেখা করার কথা বলেন, সেখানে থাকেন বাকি তিনজন। ব্যবসায়ীদের মারধর, নানারকম ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়ে চম্পট দেন তাঁরা। এদিকে লোকলজ্জার ভয়ে প্রতারিতরাও পুলিশকে কিছু জানাতে পারেন না। তবে সম্প্রতি সাহস করে এক যুবক চোপড়া থানায় যান। এরপরই সামনে আসে গোটা ঘটনা। ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন ধৃতদের ইসলামপুর আদালতে তোলা হয়।
উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকে বেশ কিছু দিন ধরেই একটি প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ আসছিল। এরা বিভিন্ন এলাকার সাধাসিধে ছেলে, মূলত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করত। সবরকম রেইকির পর এক চক্রের মহিলা সদস্যকে দিয়ে ফোন করাত। মিষ্টি মিষ্টি কথার ফাঁদে ফেলে ওই ব্যবসায়ীকে সর্বস্বান্ত করে ছেড়ে দেওয়াই ছিল টার্গেট। গত ২৫ শে মে চোপড়ায় এরকম একটি ঘটনা ঘটে। এক যুবক থানায় বিষয়টি জানান।
পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই দল শুধুমাত্র নগদ টাকা নেয় এমনই নয়, ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমেও টাকা নিয়ে নেয়। ফোনের অ্যাপের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করিয়ে নেয় তারা। এদিকে মহিলা সংক্রান্ত বিষয় সামনে থাকায় প্রতারিতরা পুলিশের কাছে যেতে সাহসও পায় না। চোপড়া থানার পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে চোপড়া থানায় নিয়ে যায়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই সামনে আসে আসল ঘটনা। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা যুক্ত, তা জানতে তদন্ত করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে চোপড়া এলাকায়। ইসলামপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “বুধবার বিকেলে এক যুবক আমাদের সবটা জানান। তাঁকে ফাঁদে ফেলে চোপড়ায় নিয়ে গিয়ে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করিয়ে নেয়। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা নগদ ছিল, তাও নিয়ে নেয়। এরপরই আমরা দু’জনকে ধরি। জানতে পারি রামগঞ্জের এক মহিলা এই চক্রে রয়েছেন। তিনজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অল্পবয়সী ছেলে, ব্যবসায়ীকে ভাল ভাল কথা বলে ডেকে পাঠায়। ডাকার পর সঙ্গীরা ধরে টাকা নেয়। অনেকে লজ্জায় বলতে পারে না।”