ডিসেম্বরেও উধাও শীত, কেন পারদের এত ওঠানামা?
আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিলেও ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত সেভাবে শীতের আমেজ পায়নি দক্ষিণবঙ্গবাসী।
কলকাতার পারদ নেমেছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আলিপুরের পূর্বাভাস ছিল যে এবছর জাঁকিয়ে শীত পড়বে রাজ্যে। মৌসম ভবনও জানিয়েছিল এবছর শীত নির্ধারিত সময়েই আসবে। তবে দক্ষিণবঙ্গে এখনও সেভাবে শীত পড়েনি। যদিও হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হবে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। শহরের তুলনায় জেলাগুলোতে তাপমাত্রা ফারাক থাকবে ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি।
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে কলকাতায় বেশ কয়েকবার তাপমাত্রা একধাক্কায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি কমেছে। ভোরের দিকে শীতের আমেজও রয়েছে ভরপুর। তবে বেলা গড়ালেই বাড়ছে উষ্ণতা। অত্যধিক আর্দ্রতার কারণে ভ্যাপসা, গুমোট গরমও টের পাওয়া যাচ্ছে ভালই।
আরও পড়ুন, বিএসএনলের নতুন পোস্টপেড প্ল্যান, গ্রাহকদের জন্য কী সুবিধে?
আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিলেও ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত সেভাবে শীতের আমেজ পায়নি দক্ষিণবঙ্গবাসী। একলাফে মাঝে মাঝে পারদ পতন হলেও, কনকনে ঠান্ডা নেই। তার বদলে তাপমাত্রার ওঠানামা অর্থাৎ ফ্লাকচুয়েশনই বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাতাসে হাল্কা শিরশিরানির আমেজেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আমজনতাকে।
কিন্তু পারদের কেন এত ওঠানামা?
এর প্রধান কারণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অসংখ্য নিম্নচাপ এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। এই দুইয়ের কারণেই এখনও পর্যন্ত জাঁকিয়ে শীত পড়েনি দক্ষিণবঙ্গে।
নিম্নচাপের প্রভাব:
চলতি বছর দেশে এবং রাজ্যে বর্ষা এসেছিল নির্ধারিত সময়ের কয়েকদিন আগেই। তবে সঠিক সময়ে বিদায় নেয়নি বর্ষা। বরং মরশুমের বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিম্নচাপের প্রভাবেও বর্ষণ হয়েছে বাংলায়। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গেও। সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর সঙ্গে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একাধিক নিম্নচাপ।
আরও পড়ুন, ভারতে শাওমির ফোন বিক্রি বন্ধ করতে চায় ফিলিপস, দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের মামলা
মূলত এইসব নিম্নচাপের ফলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। যেমনটা এবছরও হয়েছে। আমফানের দাপটে তছনছ হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। এছাড়াও একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। যার প্রভাবে আমফানের মতো শক্তিশালী না হলেও ছোটখাটো ঝড় হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। আর এই নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবেই এখনও সেভাবে শীত আসেনি বাংলায়।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝা:
শীতের পথে মূল বাধা এই পশ্চিমী ঝঞ্জা। কারণ হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা কনকনে উত্তুরে হাওয়াকে দেশে ঢুকতে দেয় না এই পশ্চিমী ঝঞ্জা। যার ফলে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বাড়ে। ফলে শীতের আমেজ অনুভূত হয় না।
চলতি বছর নিম্নচাপ এবং পশ্চিমী ঝঞ্জা এই দুই শত্রুর কারণেই এখনও শীতের দাপুটে ব্যাটিং শুরু হয়নি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। তবে আলিপুর জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই হয়তো কনকনে শীতের আমেজ থাকবে শহর এবং শহরতলিতে।