আফগান সীমান্তে মানব বোমায় ছাড়খাড় ৩ পাক নিরাপত্তা রক্ষী

পুলিশের ডেপুটি জেনারেল আজ়হার আক্রম জানান, বিস্ফোরণে তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশেপাশের অংশ পুরো ঝলসে দিয়েছে। বাইকটিও প্রায় গলে গিয়েছে।

আফগান সীমান্তে মানব বোমায় ছাড়খাড় ৩ পাক নিরাপত্তা রক্ষী
পাক-আফগান সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীরা। ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 1:54 PM

ইসলামাবাদ: কাবুল বিমানবন্দরের পর এ বার আত্মঘাতী হামলা পাকিস্তানেও। রবিবার দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েতায় একটি বাইকে বিস্ফোরণ হয়, ঘটনায় মৃত্য়ু হয়েছে কমপক্ষে পাক আধাসামরিক বাহিনীর তিন রক্ষীর। আহতও হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।

স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আফগানিস্তান সীমান্তের কাছেই অবস্থিত মিঞা ঘুন্দি অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। ওই অঞ্চলেই হাজারা শিয়া ব্যবসায়ীরা শাক-সবজি বিক্রি করে থাকেন। এদিন সকালে ওই আত্মঘাতী বোমারু একটি বাইকে করে আসে। বাইকের উপর বসেছিল ওই ব্যক্তি। এর কিছুক্ষণ পরই আচমকা বিস্ফোরণ হয়। আধা সামরিক বাহিনী কাছেই দাড়িয়ে থাকায় তারা আহত হন। তিনজনের মৃত্যুও হয়।

পুলিশের ডেপুটি জেনারেল আজ়হার আক্রম জানান, বিস্ফোরণে তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশেপাশের অংশ পুরো ঝলসে দিয়েছে। বাইকটিও প্রায় গলে গিয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা সহ মোট ২০ জন আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ বিভাগের তরফেও আহত ও মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হামলার পিছনে বালুচিস্তানের সুন্নি মুসলিমদের হাত থাকতে পারে। সুন্নি ইসলামপন্থীরা প্রায় সময়ই শিয়া মুসলিমদের উপর হামলা চালিয়ে থাকে। তারা শিয়া মুসলিমদের বিধর্মী বলেই মনে করে থাকে। বালুচিস্তানের এই উগ্রপন্থীদের নিশানায় পাক সীমান্তরক্ষী বাহিনীও রয়েছে। একাধিকবার তাদের উপর হামলাও চালানো হয়েছে।

সূত্রের খবর, বালুচিস্তানের এই উগ্রপন্থী সুন্নি ইসলামপন্থীরা দেশের সীমান্ত পার করে আশেপাশের প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়তে চায়। সেই লক্ষ্যেই প্রায়সময়ই পাক সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে। প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানে তালিবানদের ক্ষমতা দখলের পরই এই ধরনের উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলেও দাবি।

গত ১৫ অগস্ট আফগানিস্তান দখল করে তালিবানরা। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাতে দেশের শাসনভার চলে যাওয়ায় বাকি দেশগুলিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। তাদের আশঙ্কা, তালিবানের দেখাদেখি বাকি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিও অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করার চেষ্টা করতে পারে। এরফলে গোটা বিশ্ব জুড়েই অশান্ত পরিবেশের সৃষ্টি হতে পারে।

আফগানিস্তান সীমান্তের কাছেই এই বিস্ফোরণ হওয়ায় এর পিছনে অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের মদত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। কারণ সম্প্রতিই আফগানিস্তানে কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের কাছেও একইভাবে আত্মঘাতী জোড়া বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেই ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, আহত হয়েছিলেন কমপক্ষে দেড়শো জন। এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নেয় আইসিস-খোরাসান গোষ্ঠী। এই হামলার পিছনেও তারা কোনওভাবে মদত করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও পড়ুন: তালিবদের কাছে আত্মসমর্পণের আগেই যেন তাঁকে গুলি করে মারা হয়, পঞ্জশীরে দাঁড়িয়ে নিজের দেহরক্ষীকে নির্দেশ সালেহর