Sea level rise: ধেয়ে আসছে সমুদ্র, ডেডলাইন ২০৫০, তেরা কেয়া হোগা কলকাতা?

Sea level rise: নতুন বিশ্লেষণে জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১২টি উপকূলীয় শহরে বসবাসকারী ৫০ জনের মধ্যে একজন ২০৫০ সালের মধ্যে ভয়ঙ্কর বন্যার মুখে পড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি উপকূলীয় শহরগুলির মধ্যে বর্তমানে ২৪টি প্রতি বছর ২ মিলিমিটার করে ডুবে যাচ্ছে। এতো গেল আমেরিকার কথা। আমাদের কলকাতার কী হবে?

Sea level rise: ধেয়ে আসছে সমুদ্র, ডেডলাইন ২০৫০, তেরা কেয়া হোগা কলকাতা?
শিল্পীর কল্পনায় ডুবে যাওয়া কলকাতা, এই কল্পনা বাস্তব হতে খুব বেশি দেরি নেইImage Credit source: Pinterest
Follow Us:
| Updated on: Mar 09, 2024 | 9:21 AM

কলকাতা: বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে দ্রুত গলে যাচ্ছে হিমবাহ। ফলে জল বাড়ছে সাগরে। যার জেরে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশে বেশ কয়েকটি উপকূলীয় শহর ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। উপকূলীয় শহরগুলির এক নতুন বিশ্লেষণে জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১২টি উপকূলীয় শহরে বসবাসকারী ৫০ জনের মধ্যে একজন ২০৫০ সালের মধ্যে ভয়ঙ্কর বন্যার মুখে পড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি উপকূলীয় শহরগুলির মধ্যে বর্তমানে ২৪টি প্রতি বছর ২ মিলিমিটার করে ডুবে যাচ্ছে। এতো গেল আমেরিকার কথা। আমাদের কলকাতার কী হবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। মার্কিন বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন পঞ্জাবের ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের গবেষকরাও। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মার্কিন উপকূলরেখা বরাবর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২০৫০ সালের মধ্যে ০.২৫ মিটার থেকে ০.৩০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে উপকূলীয় শহরগুলি তলিয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই শহরগুলির মধ্যে রয়েছে বস্টন, নিউ ইয়র্ক সিটি, জার্সি সিটি, আটলান্টিক সিটি, ভার্জিনিয়া বিচ, উইলমিংটন, মার্টেল বিচ, চার্লসটন, সাভানা, জ্যাকসনভিল, মায়ামি, নেপলস, বিলোক্সি, নিউ অরলিন্স, টেক্সাস সিটি, রিচমন্ড, সান ফ্রান্সিসকো, লং বিচ, সান্টা ক্রুজের মতো বেশ কিছু শহর।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ভূমিক্ষয়ের সমস্যার প্রভাব, চলতি শতাব্দীর শেষদিকে দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হত। কিন্তু, এই বিপদ এখন শিয়রে, অত বেশি দূরে নেই। গবেষকদের মতে, অবস্থাটা এমন, যেন আমরা একটা ফুটোওয়ালা নৌকায় বসে আছি, ধীরে ধীরে সেটা ডুবে যাচ্ছে। এই ফুটো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার বা ব্যাপক বন্যার প্রতীক। এর উপর বৃষ্টি শুরু হলে কী হবে? সামান্য বৃষ্টি এমনকি, গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও নৌকোটি অনেক তাড়াতাড়ি ডুবে যাবে। এই বৃষ্টি এই ক্ষেত্রে হল ভূমিক্ষয়। এমনকি কয়েক মিলিমিটার ভূমিক্ষয়ও উপকূলীয় শহরগুলির বিপদ অনেকগুণে বাড়িয়ে তুলছে।

তেরা কেয়া হোগা কলকাতা?

নেচার জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে কলকাতা বা ভারতের কোনও শহরের কথা আলাদা করে বলা হয়নি। তবে, ২০২১ সালের ক্লাইমেট সেন্ট্রালের প্রতিবেদনে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ২০৩০ সালে বিশ্বের মানচিত্র কেমন হতে পারে, তার একটা আভাস দেওয়া হয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘দ্য ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর তথ্য ব্যবহার করে মানচিত্রটি তৈরি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল কলকাতা-সহ বিশ্বের ছয়টি শহর এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে জলের নীচে চলে যেতে পারে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০৩০ সালের আগে কলকাতার একটা বড় অংশ একের পর এক বন্যা হতে পারে। যার ফলে গোটা শহর ডুবে যেতে পারে।

২০২৩-এ নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণাতেও বলা হয়েছিল, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে ভারতের চেন্নাই এবং কলকাতা ডুবে যাবে। গবেষণায় বলা হয়েছিল, এই শতাব্দীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে, এশিয়ার বেশ কিছু বড় শহর, গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলি ডুবে যেতে পারে। চেন্নাই এবং কলকাতা ছাড়াও, ইয়াঙ্গন, ব্যাংকক, হো চি মিন সিটি এবং ম্যানিলার মতো এশিয় শহরগুলিও এই ঝুঁকিতে রয়েছে। রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সলিউশনস-এর বিশ্লেষণ অনুসারে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে মুম্বই, কোচি, ম্যাঙ্গালোর, বিশাখাপত্তনম এবং তিরুবনন্তপুরমও।