‘সরকার বদলেছে, তোমাকে দরকার নেই’, অফিসে এসে হতভম্ব অ্যাঙ্কর শবনম
শবনমের একটি ভিডিয়োই তালিবানদের সমস্ত মিথ্যাকে সামনে এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি যে কেবল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল।
কাবুল: রাতারাতি ঘানি সরকারের পতনের পরই তালিবানরা জানিয়েছিল, নারী সুরক্ষা ও অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে শরিয়া আইন মেনেই। আফগান মহিলাদের চাকরি করার ক্ষেত্রেও কোনও বাধা দেওয়া হবে না। তবে এগুলি কেবল প্রতিশ্রুতিই। বাস্তবে ঘটছে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনাই। মহিলা সংবাদ পাঠিকা অফিসে ঢুকতে গিয়েই দেখলেন তাঁর জন্য গেট খুলছে না অফিসের। প্রশ্ন করাতেই জবাব মিলল, “সরকার বদলে গিয়েছে, তোমার প্রবেশাধিকার নেই আর।”
শরিয়া আইন মেনে স্বাধীনতার কথা বলা হলেও আরটিএ পাস্তো টিভি চ্যানেলের মহিলা সংবাদ পাঠিকা শবনম দাওরান যখন অফিসে যান, তাঁর অফিসের পরিচয় পত্র দিয়ে গেট খোলে না। এ দিকে বাকি পুরুষ কর্মীরা কিন্তু ঢুকতে পারছেন। কেন তিনি ঢুকতে পারছেন না, জানতে চাইলে তাঁকে বলা হয়, “রাজত্ব বদলে গিয়েছে। তোমার আর প্রবেশাধিকার নেই। বাড়ি যাও।”
Shabnam Dawran, Afghanistan’s National Radio Television news presenter: “I went to #RTA but they told me that the regime has changed. you are not allowed, go home". pic.twitter.com/xJ4XcpamRo
— Muslim Shirzad (@MuslimShirzad) August 18, 2021
শবনমের একটি ভিডিয়োই তালিবানদের সমস্ত মিথ্যাকে সামনে এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি যে কেবল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা, তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল। ভিডিয়োয় শবনমকে বলতে শোনা যায়, “যদি কেউ আমার কথা শুনছেন, যদি বিশ্বের কাছে আমার কন্ঠস্বর পৌঁছচ্ছে, তবে আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের সকলের প্রাণ সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে।”
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল অবধি যখন আফগানিস্তানে তালিবানের শাসন চলত, সেই সময়ের নিয়মে মহিলাদের শিক্ষা বা চাকরির কোনও অধিকার ছিল না। বাড়ি থেকে বেরোনোর জন্য সঙ্গে সবসময় পুরুষসঙ্গী থাকতে হত। বুরখা ও হিজাবে মাথা থেকে পা অবধি ঢেকে রাখতে হত। গলার স্বর, পায়ের শব্দ যাতে পরপুরুষের কানে না যায়, সেই সতর্কতাও নিতে হত মহিলাদের। এছাড়াও তালিবানদের লালসার শিকার হত নাবালিকারা। জোর করে বিয়ে বা যৌনদাসী বানানো হত।
গত ১৫ অগস্ট কাবুলে তালিবানরা প্রবেশ করতেই দেশ ছেড়ে পালান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। পতন হয় আফগান সরকারের। গোটা দেশের দখল নেয় তালিবানরা। বর্তমানে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন সরকারের ঘোষণা কেবল সময়ের অপেক্ষা। এই পরিস্থিতিতেই তালিবানরা নিজেদের মুক্ত চিন্তাধারার পরিচয় দিতে চেয়ে তারা বলেছিল যে নারী সুরক্ষা ও অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তারা কেবল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্যই যে এই কথাগুলি বলেছিল, তা ফের প্রমাণ হল। আরও পড়ুন: বাড়ি বাড়ি ঘুরছে তালিবান, প্রাণ খোয়াতে পারেন মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীকে সমর্থনকারীরা