বৈধ কাগজ থাকলে দেশ ছাড়তে পারবেন আফগানরাও, জার্মানিকে প্রতিশ্রুতি তালিবানের
জার্মান প্রতিনিধি মাকৃর্কাস পোটজ়েল টুইটারে জানান, তিনি তালিবানের ডেপুটি চিফ শের মহম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজ়াইয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন।
বার্লিন: মঙ্গলবারই তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ (Jabidullah Mujahid) জানিয়েছিলেন, কাবুল বিমানবন্দর(Kabul Airport)-র রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশীদের যেতে দেওয়া হলেও আফগান নাগরিকদের বিমানবন্দরে দেশ ছেড়ে যেকে দেওয়া হবে না। তবে বুধবারই জার্মানি(Germany)-র তরফে জানানো হয়, তারা এই বিষয়ে তালিবানিদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বৈধ কাগজ থাকলে আফগান নাগরিকদের অন্য দেশে যেতে দিতে রাজিও হয়েছে তালিবান (Taliban)।
গত সপ্তাহ থেকেই আফগানিস্তানে উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, দূতাবাসের কর্মী ও আটকে পড়া নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ দিকে, তালিবানও হুঁশিয়ারি দিয়েছে, আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে যাবতীয় উদ্ধারকার্য শেষ করে বিমানবন্দর খালি করে দিতে হবে। এরপরই আরও দ্রুতগতিতে উদ্ধারকার্য শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
তবে এত দিন ধরে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বহু আফগানবাসীকেও উদ্ধার করে আনা হচ্ছিল। ভারত, আমেরিকা, ব্রিটেন সহ একাধিক দেশে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশীদের বিমানবন্দরে যেতে দেওয়া হলেও আফগানবাসীদের ওই রাস্তা ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না, বিমানবন্দরেও যেতে দেওয়া হবে না।”
একসঙ্গে মুজাহিদ বলেন, “আমরা আফগান নাগরিকদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না আর। যেভাবে তাদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতেও আমরা খুশি নই। আফগানিস্তানের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। তাদের নিজেদের কর্মক্ষেত্রেই কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত।”
যারা বিগত এক সপ্তাহ ধরে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন, তাদেরও শহরে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে তালিবান। একইসঙ্গে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, শহরে ফিরলেও কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হবে না তাদের। চাকরিরত মহিলাদের জন্যও ফতেয়া জারি করেছে তালিবান। বলা হয়েছে, সুষ্ঠ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি না করা অবধি মহিলারা যেন বাড়িতেই থাকেন, অফিসে না যান।
এরপরই জার্মানির তরফে তালিবানদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। জার্মান প্রতিনিধি মার্কাস পোটজ়েল টুইটারে জানান, তিনি তালিবানের ডেপুটি চিফ শের মহম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজ়াইয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। দুই পক্ষের আলোচনার পর তালিবানের তরফে আশ্বাস দিয়ে জানানো হয়েছে, যে সমস্ত আফগান নাগরিকদের কাছে বৈধ কাগজ থাকবে, তাদের আগামী ৩১ অগস্টের পর দেশ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
তালিবারের তরফে এও জানানো হয়েছে, আমেরিকা তাদের গোটা বাহিনীকে সরিয়ে ফেললে ন্যাটো বাহিনী আফগান নাগরিকদের উদ্ধারকার্যের যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তার প্রয়োজন থাকবে না। আফগান নাগরিকরা পূর্ম স্বাধীনতাই উপভোগ করবেন।
জার্মানির তরফেও তালিবানের কাছে অনুরোধ রাখা হয়েছে, জার্মান সংস্থাগুলিতে কর্মরত আফগান, মানবাধিকার কর্মীদের আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যেই দেশে নিয়ে যাওযার জন্য় যেন “সেফ প্যাসেজে”র ব্য়বস্থা করে তালিবান।
মঙ্গলবারই জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হেইকো মাস জানিয়েছেন, বার্লিনের তরফে অনুরোধ করা হবে যাতে ৩১ অগস্টের পরেও আফগানিস্তান থেকে নাগরিকদের দেশে ফেরানোর কাজ জারি রাখা যায়। আরও পড়ুন: চপ্পল-সালোয়ার ছেড়ে বুট-জ্যাকেটে সজ্জিত তালিবান! মার্কিন ‘উচ্ছিষ্টে’ আধুনিক হওয়ার চেষ্টা