ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তানে যে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, তা দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, তালিবান সরকার তদেশের অধিকাংশ জায়গা থেকেই দায়েশদের নিকেশ করেছে। তিনি বলেন, “আগে আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ ছিল ইসলামিক এমিরেটসের হাতে। আগের আফগান সরকারের হাতে যে অঞ্চলগুলির শাসনভার ছিল, কেবল সেখানেই দায়েশরা উপস্থিত ছিল। তালিবান গোটা দেশের দায়িত্বভার নেওয়ার পরই এই  জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

আফগান বিদেশমন্ত্রী জানান, তারা বর্তমানে পাকিস্তান সরকার ও নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP)-র মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর কাজ করছে। দুই পক্ষের ইচ্ছাতেই এই দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এই বিষয়ে মুত্তাকী আরও বলেন, “দুই পক্ষ এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি। তবে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার ভাল সূচনা হয়েছে বলা যায়। আপাতত তারা এক মাসের জন্য যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছে। আগামিদিনে কোনও বাধা সৃষ্টি না হলে, পাকিস্তান সরকার ও টিটিপির মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হবে।”

আফগান মহিলাদের শিক্ষা ও কাজ থেকে বঞ্চিত করার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মহিলাদের ১০০ শতাংশ যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও তাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। যে যে ক্ষেত্রে প্রয়োজন, সেখানে মহিলাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগের সরকারের অধীনে যে সমস্ত মহিলা কর্মচারী ছিলেন, তাদের কাউকেই কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়নি। আমাদের এমন কোনও নীতি নেই যেখানে মহিলাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের পর তাদের বেতনে যেমন কোনও প্রভাব পড়েনি, তেমনই শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত সুযোগের ব্য়বস্থা রাখা হয়েছে।”

মুত্তাকি জানান, আন্তর্জাতিক মহলের তরফে আফগানিস্তান সরকার গঠন নিয়ে যা যা শর্ত রাখা হয়েছিল, তার সবকটিই পূরণ করেছে তালিবান। এবার বিশ্বেরও উচিত নতুন আফগানিস্তান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। তিনি বলেন, “বর্তমান আফগান সরকারে আগের সরকারের প্রায় ৫০ হাজার কর্মী রয়েছে। যদি আগের সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তবে আমাদের দেওয়া হবে না কেন? মন্ত্রিসভায় সমস্ত প্রদেশের প্রতিনিধির কথা যদি বলা হয়, তবে আমাদের এক মন্ত্রী পঞ্জশীরে। বাদাখিস্তান, ফারইয়াব, কান্দাহার, নানগরহর ও কাবুলের বাসিন্দাদেরও মন্ত্রিসভা ও সরকারে স্থান দেওয়া হয়েছে।”