Bangladesh: ধর্ষণের মামলায় বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ, ‘সাময়িকভাবে প্রত্যাহার’ বাংলাদেশের বিচারকের ক্ষমতা
Bangladesh Lower Court Judge: স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টার পর যদি মামলা নেওয়া হয়, তাহলে নাকি আদালতের সময় নষ্ট হয়। আর এই 'ভয়ঙ্কর' পর্যবেক্ষণের মাশুল দিতে হল নিম্ন আদালতের ওই বিচারককে।
ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) দুই পড়ুয়াকে ধর্ষণের মামলা বিচারকের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভের আঁচ বাড়ছে পড়শি দেশে। বাংলাদেশের এক হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াকে ধর্ষণের (Physical Assault) মামলায় রায় জানানো হয় গত বৃহস্পতিবার। রায়ে অভিযুক্তদের প্রত্যককে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত (Lower Court of Bangladesh)। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করার সময় বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে পুলিশকে পরামর্শ দিয়েছেন, ধর্ষণের পর ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে যেন আর মামলা নেওয়া না হয়। আর এই মন্তব্যের জেরেই তোলপাড় হচ্ছে বাংলাদেশ।
আর শুধু এইটুকু বলেই থামেননি বিচারক। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টার পর যদি মামলা নেওয়া হয়, তাহলে নাকি আদালতের সময় নষ্ট হয়। আর এই ‘ভয়ঙ্কর’ পর্যবেক্ষণের মাশুল দিতে হল নিম্ন আদালতের ওই বিচারককে। ঢাকার নিম্ন আদালতের ওই বিচারকের ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। আজ সে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহারের এই রায়ের তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছিল গোটা বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, এই ধরনের রায়কে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে। তাদের বক্তব্য, আদালতের এই ধরনের পর্যবেক্ষণ অভিযুক্তদের শুধু সুরক্ষিতই করবে না, সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নির্যাতিতার জন্য সামাজিক ও আইনি প্রতিবন্ধকতাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। পাশাপাশি, এই ধরনের পর্যবেক্ষণ সমাজে ভুল বার্তা দেবে ও ধর্ষণের বিচার পাওয়ার পথকে আরও কঠিন করে তুলবে।
বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকালই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছিলেন, নিম্ন আদালতের ওই বিচারকের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য। আর তার পর আজকেই সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট, নিম্ন আদালতের ওই বিচারকের ভূমিকা মোটেই ভাল চোখে দেখছে না বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মহম্মদ সাইফুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং অন্যান্য বিচারপতিরা আলোচনাক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশ আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই বিচারক আইন এবং সংবিধান দুটিই লঙ্ঘন করেছেন। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দেওয়া। তিনি কেন বলেছেন, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া আছে, সেটাই তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।”
আরও পড়ুন : Bangladesh: বাংলাদেশের প্রথম হিন্দু বিচারপতিকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ
আরও পড়ুন : Pakistan: করাচিতে অজানা জ্বরে বাড়ছে আতঙ্ক, মিলছে না প্লেটলেট, আক্রান্ত অনেকে