‘মানবিকতার খাতিরে’ অবশেষে এই দেশে ঠাঁই পেলেন আসরাফ ঘানি
Ashraf Ghani: 'মানবিকতার খাতিরে' তাঁকে সে দেশে জায়গা দিয়েছে সরকার।
চার গাড়ি ভর্তি টাকা সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তান থেকে চম্পট দিয়েছিলেন সে দেশের রাষ্ট্রপতি আসরাফ ঘানি। কিন্তু তারপর থেকে কোনও ঠিক-ঠিকানা ছিল না তাঁর। তিনি কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যাচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি। প্রথমে জানা গিয়েছিল, কিন্তু তাজিকিস্তানে পালিয়েছেন। যদিও সেই জল্পনায় দ্রুতই জল পড়ে যায়। তারপর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তবে কি আমেরিকায় গা ঢাকা দিলেন ঘানি? কারণ আমেরিকাই তাঁকে আফগান রাষ্ট্রপতির কুর্সি দিয়েছিল। সেই সম্ভাবনাও নস্যাৎ হয় দ্রুতই। অবশেষে তিনদিন পর জানা গেল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ঠাঁই পেয়েছেন তিনি। ‘মানবিকতার খাতিরে’ তাঁকে সে দেশে জায়গা দিয়েছে সরকার।
বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি আসরাফ ঘানি ও তাঁর পরিবারকে মানবিকতার খাতিরে সেই দেশে স্বাগত জানানো হয়েছে। দেশ ছাড়ার পর থেকেই অবশ্য ঘানির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘানি দেশবাসীর উদ্দেশে লিখেছেন, যে তাঁর সামনে এদিন দুটো কঠিন বিকল্প ছিল। হয় তালিবানের মুখোমুখি হতে হত অথবা তাঁর ‘প্রিয় দেশ’ ছেড়ে পালিয়ে আসতে হত। গত ২০ বছর ধরে এই দেশ রক্ষার স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন ঘানি। কেন চলে এলেন, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাঁর দাবি, তিনি যদি থাকতেন তাহলে বহু আফগানের মৃত্যু হত আর কাবুল শহর ধ্বংস হয়ে যেত। কার্যত বিপর্যয় হতে পারত ৬০ লক্ষ মানুষের এই শহরে।
২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আসরাফ ঘানির এভাবে দেশ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক অবশ্য সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে। এমনকী, ঘানির মন্ত্রিসভায় থাকা অনেকেও এভাবে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে তাঁর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। এর জবাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে আসরাফ ঘানি বলেছিলেন, রক্তপাত এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন তিনি। ঘানি লেখেন, ‘তরবারি আর বন্দুকের বিচারে তালিবান জিতে গিয়েছে। এখন দেশের মানুষের সম্মান রক্ষার দায় তাদের।’ তবে তিনি মনে করেন, ক্ষমতায় এলেও হৃদয় জিততে পারেনি এই সন্ত্রাসবাদী শক্তি। তাঁর মতে, এমন রুক্ষ ক্ষমতা কখনোই মানুষের হৃদয়ে বৈধতা পায় না। তাই তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানের মহিলা-সহ দেশের সব মানুষের হৃদয়ে যাতে তারা বৈধতা পায় সেই, পরীক্ষাই এখন দিতে হবে তালিবানকে। আরও পড়ুন: সরকার গঠন শীঘ্রই! প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠকে তালিবানের প্রতিনিধি