বঙ্গোপসাগরের মাঝে ‘ভাসান চরে’ দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের পাঠাল বাংলাদেশ
একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগ, জোর করে আপত্তি উপেক্ষা করেই অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। যদিও এই কথা মানতে নারাজ বাংলাদেশ সরকার।
চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের ‘ভাসান চরে’ ঠাঁই হল আরও একদল রোহিঙ্গার। মায়ানমার থেকে প্রায় ৭ লক্ষ মুসলিম রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশে। উদ্বাস্তু শিবির থেকে আগেও একদল রোহিঙ্গাকে ‘ভাসান চর’-এ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। হাসিনা প্রশাসন জানিয়েছে স্বেচ্ছায় ‘ভাসান চরে’ থাকতে চেয়েছেন রোহিঙ্গারা। কিন্তু উঠছে অন্য প্রশ্নও। একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগ, জোর করে আপত্তি উপেক্ষা করেই অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের।
কোথায় এই ‘ভাসান চর’?
বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপ হল ‘ভাসান চর।’ দু’দশক আগেও সমুদ্রের নীচে তলিয়ে ছিল এই দ্বীপটি। আসতে আসতে পলি জমে গড়ে উঠেছে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ। ভারতীয় মুদ্রায় ৮০০ কোটিরও অধিক টাকা খরচ করে সেখানে হাসপাতাল, মসজিদ গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ সরকার। সেখানেই ঠাঁই হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। ডিসেম্বরের শুরুতে ১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাদের পাঠানো হয়েছিল সেই দ্বীপে। এবার দ্বিতীয় দফায় সেখানে গেলেন আরও একদল রোহিঙ্গা।
কোন পথে ‘ভাসান চরে’?
কক্সবাজারের উদ্বাস্তু শিবির থেকে প্রথমে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রামের অস্থায়ী শিবিরে। চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯ টার পর যাত্রা শুরু করে নৌবাহিনীর জাহাজ, সঙ্গে ৪০০ পরিবারের ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা।
আরও পড়ুন: ‘নাটকের’ যবনিকা পতন! অবশেষে ‘নাপসন্দ’ করোনা রিলিফ বিলেই সই করলেন ট্রাম্প
রোহিঙ্গা তরজা:
মায়ানমার থেকে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার পর তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয় মায়ানমারের সঙ্গে। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মালম্বী অধ্যুষিত মায়ানমারে ফিরতে নারাজ রোহিঙ্গারা। অভিযোগ ওঠে সে দেশে রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর অত্যাচারের কথাও উঠে আসে। বাংলাদেশ সরকারের দাবি, স্বেচ্ছায় যেসব রোহিঙ্গা পরিবার ‘ভাসান চরে’ যেতে চান, তাঁদের নাম জমা দিতে হয়েছিল। তারপরই ওই দ্বীপে পাঠানো হয়েছে তাঁদের। জোর করে পাঠানোর কথা অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের এক মন্ত্রী।