Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Elon Musk: ইলন মাস্কের রকেটে বমি করলেন চিনা কোটিপতি! কারণ জানলে চমকে উঠবেন

চুন ওয়াং, বিটকয়েন সংস্থা F2Pool-এর মালিক। বিশ্বের ১১ শতাংশ বিটকয়েন তাঁর কম্পিউটারে তৈরি হয়। তিনি বিলিয়নিয়ার, যদিও তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ অজানা। শুধু বিটকয়েনই নয়, ব্লকচেন নেমকয়েনেও হাত পাকিয়েছেন।

Elon Musk: ইলন মাস্কের রকেটে বমি করলেন চিনা কোটিপতি! কারণ জানলে চমকে উঠবেন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 03, 2025 | 5:40 PM

পৃথিবীর উত্তর আর দক্ষিণ মেরুর ওপর দিয়ে মানুষের প্রথম বাণিজ্যিক উড়ান! একজন বিটয়েনে বিনিয়োগকারী কোটিপতি চিনা নাগরিক, নরওয়ের এক চলচ্চিত্র নির্মাতা, একজন রোবটিক্স গবেষক ও আরেকজন গাইডকে নিয়ে মেরু কক্ষপথের উদ্দেশ্যে উড়ে গেল ধনকুবের ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতা ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের মহাকাশযান। শুধু উড়েই গেল না, যাত্রাপথে একের পর এক মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো ছবি-ভিডিও পাঠাচ্ছে চার যাত্রী নিয়ে উড়ে যাওয়া ‘ড্রাগন ক্রিউ’। এই মিশনের পোশাকি নাম ফ্র্যাম ২ (Fram2 mission)। এই চারজন যাবেন এমন সব জায়গায়, যেখানে আগে কেউ যায়নি। সাধারণত, আর্থ-ম্যাপিং, আবহাওয়া উপগ্রহের জন্য মেরু কক্ষপথ ব্যবহৃত হয়। মেরু কক্ষপথ ব্যবহার করে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের ছবি তোলার জন্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়।

এখন ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রার কথা জানলে আপনার মনেও প্রশ্ন জাগবে—এরা কারা, আর কেন এমন অভিযানে গেলেন?

এককথায় এর একটাই উত্তর! বড়লোকেদের বড়লোকি খামখেয়ালিপনা। ইলন মাস্ক, যিনি সুনীতা উইলিয়ামসকে মহাকাশে পাঠিয়ে ফেরত আনতে নাকানি-চোবানি খাচ্ছিলেন, এমনিতেই এক বিতর্কিত চরিত্র। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার, সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রশাসনিক পরামর্শদাতা। সুনীতাকে ফেরত আনতে পারছিলেন না বলে শেষ পর্যন্ত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-কে হস্তক্ষেপ করতে হয় ট্রাম্পের আবেদন (পড়ুন নির্দেশ) মেনে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নিরাপদেই পৃথিবীতে ফিরে আসেন সুনীতা, বুচরা। কিন্তু তারপর থেকেই মাস্কের সময়টা ভাল যাচ্ছে না। তাঁর গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা টেসলা-র বাজারদর হু হু করে নামছিল। লোকসান হচ্ছিল কোটি কোটি ডলারের। সেই ফাঁড়া কাটাতেই কি এবার কোটিপতিদের মহাকাশযানে চাপিয়ে মেরু কক্ষপথ ঘুরিয়ে আনছেন ইলন? যাতে খানিকটা তাঁর মুখরক্ষা ও তাঁর আরেকটি সংস্থা স্পেস এক্সের বাজারদর বাড়ে? মার্কিন গণমাধ্যম কিন্তু চাঁচাছোলা ভাষায় এমনটাই বলছে।

এবার প্রশ্ন হচ্ছে কারা গেলেন মাস্কের ফ্যালকন রকেটে চেপে পৃথিবীর উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুর উপর দিয়ে প্রদক্ষিণ করতে? তালিকাটা দেখে নিন একবার!

চুন ওয়াং: বিটকয়েন সংস্থা F2Pool-এর মালিক। বিশ্বের ১১ শতাংশ বিটকয়েন তাঁর কম্পিউটারে তৈরি হয়। তিনি বিলিয়নিয়ার, যদিও তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ অজানা। শুধু বিটকয়েনই নয়, ব্লকচেন নেমকয়েনেও হাত পাকিয়েছেন।

ইয়ানিকে মিকেলসেন: নরওয়ের ফিল্মমেকার। উত্তর মেরুর কাছেই থাকেন। এই মিশন সেরে এসে নাকি তা নিয়ে সিনেমা বানাবেন।

রাবিয়া রগে: জার্মানির গবেষক। রোবট নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা। প্রথম জার্মান মহিলা হিসেবে মহাকাশে যাচ্ছেন।

এরিক ফিলিপস: অস্ট্রেলিয়ার অভিযাত্রী। ৩০ বার মেরু অভিযানে গেছেন।

গোটা মহাকাশযানটি ভাড়া নিয়েছেন চুন ওয়াং। তবে কত টাকায়? তা কেউ জানেন না! তবে আনুমানিক এক একটি আসনের দাম ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন দলের। টাকায় হিসাব করলে ৪৬৯,৮৪,৬১,২৯৫.০০ টাকা। ওয়াং তাঁর তিন বন্ধুকে নিয়ে গেছেন। তিনিই এই মিশনের ‘কমান্ডার’! যদিও এর আগে তিনি কোনওদিনও মহাকাশে যাননি। তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে শুধুই ‘ডলার’। ৩-৫ দিন তাঁরা পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবেন। ইতিমধ্যেই আন্টার্টিকার উপর দিয়ে ঘুরে তার ছবি পোস্ট করেছেন চুন।

সেই সঙ্গে লিখে পাঠিয়েছেন, ”মাধ্যাকর্ষণের বাধা ধীরে ধীরে কাটানোর অভ্যাস করছি। বিশ্বাসই করতে পারছি না এই মুহূর্তে আমি ওজনশূন্য। প্রথমদিকের যাত্রা অবশ্য সহজ ছিল না। স্পেস মোশন সিকনেস জোরাল আঘাত করেছিল। বেশ কয়েকবার বমি করে ফেলেছিলাম আমরা। আইপ্যাডে আমাদেরই উড়ে যাওয়ার ভিডিও দেখে প্রথম দিনটা কাটালাম। তবে দ্বিতীয় দিন থেকে অনেকটাই ঝরঝরে লাগছে আমাদের।’ শুধু ছবি, লেখায় নয়, ভিডিও-ও পোস্ট করেছেন চুন। এক্স হ্যান্ডেলে(যারও মালিক ইলন মাস্ক) সেই ভিডিওয় লাইকের বন্যা। এখন প্রশ্ন হল, মানুষের প্রথমবার মেরুর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া—এটা কি শুধু মজার জন্য, নাকি মহাকাশের নতুন দরজা খুলবে? এই চারজনের গল্প শুনে আপনার কী মনে হয়—এরা কি সত্যিই ভবিষ্যতের নায়ক? মহাকাশে ২২টি গবেষণা করবে এই ক্রিউ, বেশিরভাগই শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে। কিন্তু এগুলো যে কোনও পথেই করা যেত। তাহলে কি এটা শুধুই একটা আলাদা অভিজ্ঞতা বা মজার জন্য? স্পেস এক্সের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘এটা এমন একটা ব্যক্তিগত মিশন যা মানুষকে চমকে দেবে। মেরুর ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার মতো সাহস বা দক্ষতা আগে কোনও মানুষ করে দেখায়নি- এটাই এর বড় কথা।’