Xi Jinping: ‘বিশৃঙ্খলা রুখে প্রতিষ্ঠা হয়েছে সুশাসনের’, কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনের শুরুতেই হংকং নিয়ে বিস্ফোরক জিনপিং
Chinese Communist Party Meeting: চিনের করোনা নীতি, যা নিয়ে গোটা বিশ্বেই সমালোচনা হয়েছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন জিনপিং। তিনি বলেন, "চিনের কঠোর কোভিড নীতি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে।"
বেজিং: মহানতম নেতা হয়ে ওঠাই লক্ষ্য শি জিনপিংয়ের। সেই লক্ষ্য পূরণেই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম সম্মেলন শুরু হল বেজিংয়ে। সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে দেশ-বিদেশ থেকে উপস্থিত হয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি অতিথি। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনেই মঞ্চে উঠে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি জানালেন হংকংয়ের উপরে নিন্ত্রয়ণ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে চিন। বিশৃঙ্খলা রুখে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সুশাসনের।
প্রতি পাঁচ বছর অন্তরই চিনের কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসের তরফে গণসম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আজ থেকেই শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী ২০ তম সম্মেলন। এদিন প্রেসিডেন্ট তথা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি জিনপিং মঞ্চে উঠতেই হাততালিতে ফেটে পড়ে বেজিংয়ের গ্রেট হল অব পিপল সভাগৃহ। এই সম্মেলন অনুষ্ঠান থেকেই তৃতীয়বারের জন্য চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসাবে জিনপিংকে নির্বাচিত করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে শি জিনপিং বলেন, “হংকংয়ের পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বিশৃঙ্খলা থেকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাইওয়ানের স্বশাসিত দ্বীপে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম চালাতে হচ্ছে। তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে কী করা হবে, তা সম্পূর্ণভাবেই চিনের মানুষের উপরে নির্ভর করছে। আমরা আন্তরিকতা এবং সর্বশ্রেষ্ঠ প্রচেষ্টার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব, তবে শক্তির ব্যবহার ত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দেব না।”
চিনের করোনা নীতি, যা নিয়ে গোটা বিশ্বেই সমালোচনা হয়েছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন জিনপিং। তিনি বলেন, “চিনের কঠোর কোভিড নীতি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। এপিডেমিক নিয়ন্ত্রণে এর ইতিবাচক ফলও পাওয়া গিয়েছে।”
দেশের অর্থনীতি, উন্নয়ন, বিশ্বায়ন নিয়েও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, “বেজিং সক্রিয়ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে অংশগ্রহণ করবে। আগামিদিনে চিন কয়লার স্বচ্ছ ব্যবহারের উপরও জোর দেবে। একইসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধেও কঠোর অভিযান চালানো হবে। দেশের অর্থনীতি ও মিলিটারির জন্য যারা ক্ষতিকর, তাদের নির্মূল করা হবে। বিশ্বমানের সামরিক শক্তি গড়ে তুলবে চিন। অর্থনৈতিক উন্নতি ও আধুনিক সামাজিক ক্ষমতা তৈরির জন্য আগামী ৫ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
এক সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলনে তাইওয়ান ইস্যু থেকে শুরু করে রাশিয়া তথা পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক, জিরো কোভিডের লক্ষ্যে এগোনো, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চলবে আলোচনা। তবে পার্টির সমস্ত চোখই এখন জিংপিংয়ের দিকে। রীতি ভেঙে তিনি তৃতীয়বার পার্টির প্রধানের কুর্সিতে বসবেন, এমনই জল্পনা।
এদিকে, সম্মেলন শুরুর আগেই শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। বেজিং সহ দেশের একাধিক জায়গায় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার দেখা গিয়েছে। তবে দেশের শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হতেই ফের স্বমহিমায় ফিরেছে চিন। জিনপিং-বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধ করতে তৎপর বেজিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সমালোচনায় করা পোস্ট, হ্যাশট্যাগ ও কি-ওয়ার্ড মুছে ফেলা হচ্ছে।