Elon Musk, Tesla Gigafactory in India: ভারতে না এসে চিনে গিয়ে ‘ফেঁসে’ গেলেন ইলন মাস্ক?
Elon Musk: ভূ-রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভারত ও চিন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। ভারতে না এসে ইলন মাস্কের চিনে চলে যাওয়া ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই। কিন্তু ইলন মাস্কের প্রতি পদক্ষেপই যে 'আনপ্রেডিক্টেবল', এই প্রথমবার নয়, এর আগেও ভারতে আসার কথা দিয়েও আসেননি মাস্ক। ভারতে বিনিয়োগ না করায় ইলন মাস্ক সত্যিই 'হারতে যাচ্ছে'ন কি না তা হয় তো সময়ই বলবে।
তাঁর আসার কথা ছিল ভারতে। কিন্তু ইলন মাস্কের প্রতি পদক্ষেপই যে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’, তাই ভারতে না এসে তিনি দৌড়ালেন চিনে। এই প্রথমবার নয়, এর আগেও ভারতে আসার কথা দিয়েও আসেননি মাস্ক। সূত্রের খবর, ভারতে গাড়ির একটি কারখানা তৈরি নিয়ে কথাবার্তা চলছিল কেন্দ্র ও টেসলার মধ্যে। মনে করা হচ্ছিল, ভারতে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছেন ইলন।
ভূ-রাজনৈতিক দিক দিয়ে ভারত ও চিন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। ভারতে না এসে ইলন মাস্কের চিনে চলে যাওয়া ভাল চোখে দেখছেন না অনেকেই। যদিও চিনের সাংহাইতে টেসলার একটি গিগাফ্যাকট্রি রয়েছে। আর এবার বেজিং গিয়ে মাস্ক চিনের প্রিমিয়ার লি কিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি চালকের সহায়তায় এক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি তাঁর কোম্পানির গাড়িতে চালু করার ব্যাপারে কথা বলেন। ইলনের চিনে যাওয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, সেখানে ইতিমধ্যে টেসলার একটি কারখানা থাকায় তাঁকে নতুন করে সমস্ত কিছু পত্তন করতে হবে না। দ্বিতীয়ত, ইলেক্ট্রিক ভেহিকলের ক্ষেত্রে চিনের বাজার ইতিমধ্যে পরীক্ষিত বাজার। এছাড়াও চিনে, প্রশিক্ষিত শ্রমিক পাওয়া ভারতের তুলনায় অনেক সহজ। সে দেশে বিদেশি গাড়ি কোম্পানি নিয়ে ভারতের মতো কড়া কোনও নিয়ম নেই। ফলে, ভারত সরকারের বিদেশি গাড়ি কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে যে নীতি তাও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
ভারত সরকার ইলেকট্রিক ভেহিকল পলিসিতে পরিবর্তন নিয়ে কথাবার্তা চালাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। আর সেই কারণেই মনে করা হচ্ছিল ভারতে বিনিয়োগ করতে পারে এই মার্কিন সংস্থা। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অনেক কোম্পানি তাদের ম্যানুফ্যাকচারিং ফেসিলিটি চিন থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তা ছাড়াও ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিন থেকে আমদানি করা সমস্ত ইলেকট্রিক গাড়িতে ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসাতে চলেছেন। ফলে, চিনে তৈরি হওয়া টেসলা আমেরিকায় আমদানি করতে গেলে ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে পারে টেসলা, সে দিক থেকে ভারতে বিনিয়োগ টেসলার জন্য অনেক নিরাপদ ছিল। এ ছাড়াও, চিনের অনেক ইলেকট্রিক গাড়ি তৈরির কোম্পানি টেসলার থেকে অনেক কম দামে ভাল ফিচারযুক্ত গাড়ি তৈরি করে। আর এই কারণেই চিনের অভ্যন্তরে ক্রমশ বাজার হারাচ্ছে টেসলা।
ব্লুমবার্গ নিউজ এজেন্সির খবর অনুযায়ী, ভারতে বিদেশি গাড়ি কোম্পানিগুলো নিজেদের ব্যবসা অনেকক্ষেত্রে টিকিয়ে রাখতে পারেনি। আবার অনেক কোম্পানি নিজেদের ব্যবসা কোন মতে টিকিয়ে রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ফিয়াট, শেভ্রোলে, ফোর্ডের মতো বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে ভারত থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছে। ফলে, টেসলা ভারতে এলে কতটা সফল হবে সেটা তারা ভারতের বাজারে পা না রাখলে আগে থেকে অনুধাবন করা যাবে না।
ভারতে বিনিয়োগ না করে চিনে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে মুখ খুলে ইলন মাস্ককে সরাসরি ‘হেরো’ বলে দিলেন ভারতীয় বংশদ্ভূত আমেরিকান শিক্ষাবিদ, উদ্যোগপতি ও লেখক বিবেক ওয়াধা। ভারতের বদলে চিনে টেসলার ম্যানুফ্যাকচারিং ফেসিলিটি তৈরির কারণে বিবেক লিখছেন, “ইলন হারতে যাচ্ছে”। যদিও ইলন মাস্ক ভারতে এখনও বিনিয়োগ না করায় ও জো বাইডেন চিন থেকে আমদানি করা সমস্ত ইভিতে ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোয় চিনে তৈরি টেসলার ভাগ্যে কী রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ফলে ইলন মাস্ক সত্যিই ‘হারতে যাচ্ছে’ন কি না তা হয় তো সময়ই বলবে।