ঘানির মতোই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেহ? জল্পনা উড়িয়ে বললেন…
আমিরুল্লাহ সালেহ জানান, সংঘর্ষে প্রতিরোধ বাহিনীর কয়েকজন সেনার মৃত্যু হলেও তালিবানের মৃত্যু সংখ্যাই ঢের গুণ বেশি।
পঞ্জশীর: তালিবানের সামনে টিকতে পারল না প্রতিরোধ বাহিনী। শুক্রবার রাতেই তালিবানের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল যে, দীর্ঘ কয়েকদিনের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পঞ্জশীরের দখল নিয়েছে তারা। যদিও নর্দান অ্যালায়েন্সের তরফে দাবি করা হয়েছে, তালিবানের কাছে মোটেও নতিস্বীকার করেনি তারা, প্রতিরোধ জারিই রয়েছে। এরই মাঝে খবর মিলেছিল, প্রতিরোধ বাহিনীর প্রাচীরে চিড় ধরতেই প্রেসিডেন্ট ঘানির মতোই নাকি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ। শুক্রবার সমস্ত জল্পনার অবসান করে তিনি বার্তা দিলেন, “দেশ ছেড়ে কোথাও যাননি তিনি। পঞ্জশীরের প্রতিরোধ বাহিনীও তালিবানের কাছে হার মানেনি।”
দেশ ছেড়ে পালানোর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে আমিরুল্লাহ সালেহ জানান, তিনি পঞ্জশীরেই রয়েছেন। প্রতিরোধ বাহিনীর কম্যান্ডার ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তিনিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “একাধিক সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে যে আমি দেশ ছেড়ে পালিয়েছি। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমি পঞ্জশীরেই রয়েছি। আমি আমার ঘাঁটিতেই রয়েছি। তালিবান ছাড়াও পাকিস্তানি ও আল কায়েদা জঙ্গিরাও একযোগে হামলা চালাচ্ছে। পরিস্থিতি অবশ্যই কঠিন, তবে আমাদের কম্যান্ডার ও রাজনৈতিক নেতারা তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে একচুল জমিও আমরা তালিবানের কাছে হারাইনি।”
বিগত কয়েকদিন ধরে চলা সংঘর্ষে তালিবানরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান সালেহ। তিনি জানান, সংঘর্ষে প্রতিরোধ বাহিনীর কয়েকজন সেনার মৃত্যু হলেও তালিবানের মৃত্যু সংখ্যাই ঢের গুণ বেশি।
শুক্রবারই আমিরুল্লাহ সালেহ টুইট করে লিখেছিলেন, “তালিবানরা পঞ্জশীরে সমস্ত কিছুর প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। সকলের বর্ণবিভাজন করছে, পঞ্জশীরের সেনা বাহিনীর সদস্যদের খনি খোঁড়ার কাজে ব্যবহার করছে। ফোন, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, এমনকি ওষুধও পৌঁছতে দিচ্ছে না। সাধারণ মানুষ খুব অল্প সংখ্যক নগদ টাকা নিয়েই চলাফেরা করতে পারছেন।” রাষ্ট্রপুঞ্জ যাতে তালিবানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়, সেই অনুরোধও জানান তিনি।
এ দিকে, বৃহস্পতিবারই একাধিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচার হয়ে যায় যে তালিবানের সঙ্গে আল কায়েদাও হাত মেলানোয় পঞ্জশীরের কম্যান্ডারদের সঙ্গে দুটি বিমানে করে আমিরুল্লাহ সালেহ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে আপাতত আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। কিন্তু গত ১৫ অগস্ট কাবুলের পতনের পরই আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশে ছেড়ে পালানোর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ পঞ্জশীরে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই তিনি বার্তা দেন, ঘানির অবর্তমানে তিনিই দেশের প্রেসিডেন্ট এবং তালিবানের আধিপত্য তিনি মানছেন না। প্রতিরোধ বাহিনীর সাহায্যে তিনি তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবেন। আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল শেষ দুর্গ? ‘পঞ্জশীর আমাদের দখলে’, সদর্পে ঘোষণা তালিবানের!