বিজয় উৎসবে মেতে তালিবান, রাতভর চলল এলোপাথাড়ি গুলি! নিহত কমপক্ষে ১০

আসভাকার তরফে জানানো হয়, পঞ্জশীর দখলের আনন্দে তালিবানরা প্রায় গোটা রাত ধরেই এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। ওই গুলি লেগেই কাবুলের একাধিক বাসিন্দা আহত হন। শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। 

বিজয় উৎসবে মেতে তালিবান, রাতভর চলল এলোপাথাড়ি গুলি! নিহত কমপক্ষে ১০
তালিবানের বিজয় উৎসব।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 04, 2021 | 9:36 AM

কাবুল: প্রায় ২০ দিন আগেই আফগানিস্তানের রাজধানী দখল করে নিলেও দেশের উত্তরেই অবস্থিত পঞ্জশীরে দাত ফোটাতে পারছিল না। আফগানবাসীর মধ্যে প্রতিরোধ বাহিনীর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতেই রণাত্মক ভঙ্গি নেয় তলিবান। মঙ্গলবার রাত থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয় মাসুদ বাহিনীর সঙ্গে। এরপরই শুক্রবার রাতে তালিবান দাবি করে, অবশেষে তারা পঞ্জশীর দখল করে নিতে পেরেছে। এরপরই রাতভর গুলি চালিয়ে বিজয় উৎসব পালন করে তালিবান। সেই আনন্দেরই বলি হল একাধিক মানুষ। শিশু সহ কমপক্ষে আট-দশজন গুলির আঘাতে মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আসভাকার তরফে জানানো হয়, পঞ্জশীর দখলের আনন্দে তালিবানরা প্রায় গোটা রাত ধরেই এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। ওই গুলি লেগেই কাবুলের একাধিক বাসিন্দা আহত হন। শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।  যদিও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য়মগুলির তরফে এই খবর এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োয় দেখা যায়, তালিবানদের গুলি  চালানোর শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং স্থানীয় বাসিন্দা ছোটাছুটি করছে। অপর একটি ভিডিয়োয় আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতেও দেখা যায়।

কার্যত গোটা আফগানিস্তানের দখল নিতে পারলেও এতদিন পঞ্জশীরকে নিজের হাতের মুঠোয় আনতে পারছিল না তালিবানরা। সেখানে আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ বাহিনী লাগাতার তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরই ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহও পঞ্জশীরে আশ্রয় নেন।  আফগান সেনা থেকে সাধারণ মানুষ এই প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দেন, প্রায় ৯ হাজারের বেশি সৈন্য রয়েছে প্রতিরোধ বাহিনীর।

শুক্রবারই তালিবানের এক প্রতিনিধি বলেন, “আল্লাহের কৃপায় আমরা গোটা আফগানিস্তানের দখল নিতে পেরেছি। যারা সমস্যা সৃষ্টি করছিল, তাদোর পরাজিত করা হয়েছে এবং পঞ্জশীর আমাদের দখলে চলে এসেছে।” যদিও প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে এই দাবিকে অস্বীকার করা হয়েছে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ জানিয়েছেন, তালিবানরা পঞ্জশীর দখল করেনি। এখনও প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে পঞ্জশীর। তালিবান ছাড়াও পাকিস্তানি ও আল কায়েদা জঙ্গিরাও একযোগে হামলা চালানোয় পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠলেও কম্যান্ডার ও রাজনৈতিক নেতারা তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান আমিরুল্লাহ সালেহ।

তিনি টুইটেও লেখেন, “পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলিতে পঞ্জশীর দখল করার খবর প্রচার করা হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যেদিন পঞ্জশীর দখল হবে, সেদিনই আমার শেষদিন হবে।” আমিরুল্লাহ সালেহের ছেলে ইবাদুল্লাহ সালেহও জানান, তালিবানরা পঞ্জশীর দখল করার যে দাবি জানাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তালিবানরা প্রতিরোধ বাহিনীকে একাধিকবার আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিলেও আহমেদ মাসুদ তা খারিজ করে দেন। সম্প্রতিই দুই শক্তি মুখোমুখি আলোচনায় বসে, কিন্তু সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়। এরপরই মঙ্গলবার রত থেকে একটানা হামলা চালাচ্ছে তালিবানরা। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তালিবানরা। অন্যদিকে, আল কায়েদা জঙ্গিরাও তালিবানদের সঙ্গে মিলিত হয়ে হামলা চালাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আরও পড়ুন: ঘানির মতোই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সালেহ? জল্পনা উড়িয়ে বললেন…