France: পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর, দুদিন ধরে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে প্যারিস

France violence: ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ না মানায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করা হল ১৭ বছরের কিশোরকে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগুন জ্বলছে গোটা ফ্রান্স জুড়ে।

France: পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর, দুদিন ধরে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে প্যারিস
একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতাImage Credit source: AFP
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2023 | 12:17 PM

প্যারিস: ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ১৭ বছরের এক কিশোরের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তাল ফ্রান্স। একের পর এক বাসে-গাড়িতে আগুন, বাড়িতে আগুন, দোকান লুটপাট, আতশবাজি ছোড়াছুড়িতে প্যারিস এবং শহরতলী এলাকা প্রায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। শুধু প্যারিস নয়, বিক্ষোভ ছড়িয়েছে অশনিয়েরস, কলম্বস, সুরেসনেস, অবারভিলিয়ার্স, ক্লিচি-সুস-বোইস এবং মান্তেস-লা-জোলি শহরেও। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন জানিয়েছেন, ফ্রান্স জুড়ে চলা বিক্ষোভের ঘটনায়, এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৪২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জনগণের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে বলে মেনে নিলেও, বিক্ষোভকারীদের হিংসার আশ্রয় না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। এই হিংসা ‘একেবারে অযৌক্তিক’ বলেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ টুইট করেছেন, “পুলিশ স্টেশন, স্কুল, টাউন হল, দেশের বিরুদ্ধে হিংসা অযৌক্তিক।” এক যুবকের মৃত্যুতে জনগণের রাগ হওয়া স্বাভাবিক জানিয়ে, ম্যাক্রঁ শান্তি ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এই বিক্ষোভ ও অস্থিরতার শুরু হয় মঙ্গলবার রাতে। ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে, নাহেল নামে এক ১৭ বছর বয়সী কিশোরের মৃত্যু হয়। প্যারিসের নান্টেরে এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের তাকে গাড়ি থামাতে বলেছিল। সে গাড়ি থামানোর পর, পুলিশ যখন তার গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় সে গাড়িটি চালিয়ে সেকান থেকে চলে যেতে চেয়েছিল। আর সেই সময়ই তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। প্রথমে ফরাসি পুলিশ দাবি করেছিল, পুলিশ কর্মীদের চাপা দিতেই তাদের দিকে গাড়িটি চালিয়েছিল নাহেল। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এক পুলিশ অফিসার গাড়ির চালকের আসনে বসে থাকা নাহেলের দিকে বন্দুক তাক করে আছেন। নাহেল গাড়িটি চালাতে যেতেই, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালান ওই অফিসার। গুলিটি নাহেলের বুকে লেগেছিল। চিকিৎসার সুযোগও পাওয়া যায়নি, তার আগেই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে নাহেলকে নিয়ে দুই ব্যক্তির ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল। গত বছর ঠিক একইভাবে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের।

গুলি চালানোর সময় গাড়িতে আরও দু’জন ছিল। তাদের একজন পালায়। অপরজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেও এক নাবালক। এই ঘটনাটি রাতারাতি ব্যাপক ক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ফ্রান্সে। বুধ, বৃহস্পতিবার – দুদিন ধরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ফ্রান্স। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের গোলা ছুড়েছে ফরাসি পুলিশ। জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। কিশোরীর মৃত্যুর পর কর্তৃপক্ষ দুটি পৃথক তদন্ত শুরু করেছে। একটি তদন্ত চলছে সরকারি কর্মকর্তার হাতে সম্ভাব্য হত্যার বিষয়ে। অপরটি, নিহত কিশোরে গাড়ি না থামানো এবং এক পুলিশ অফিসারকে হত্যা করার চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে।

এদিকে, গুলি চালিয়েছেন যে পুলিশ অফিসার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নিহত কিশোরের পরিবারের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাঁর আইনজীবী দাবি করেছেন, তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে, তাঁর মক্কেলকে ‘রাজনৈতিক’ কারণে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, “সেকেন্ডের ভগ্নাংশে তিনি গুলি চালিয়েছিলেন। সম্ভবত তিনি ভুল করেছেন, তা বিচারের পর জানা যাবে।তবে, নাহেলের মৃত্যুতে তিনি পুরো বিধ্বস্ত। তিনি ওই কিশোরকে হত্যা করতে চাননি।” তবে, এই ঘটনা এবং তার পরবর্তী বিক্ষোভ, চেকপয়েন্টগুলিতে পুলিশের বন্দুক ব্যবহারের নিয়মগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মানবিধাকার কর্মীরা বলছেন, ট্রাফিক কন্ট্রোলে গাড়ি না থামানো গুরুতর অপরাধ। এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু গত বছর এই রকম ১৩টি ক্ষেত্রে আইনভঙ্গকারীদের গুলি করে হত্যা করেছে ফরাসি পুলিশ।