Erdogan: ‘হামাস কোনও জঙ্গি দল নয়, মুক্তিকামী সংগঠন’

Erdogan on Hamas: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোগানও হামাসকে মুক্তি বাহিনী বলে সার্টিফিকেট দিলেন। বুধবার তুরস্কের সংসদে, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে একটি বক্তৃতা দিয়েছেন এর্দোগান। তিনি বলেন, হামাস কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়। তারা একটি মুক্তিকামী সংগঠন। নিজভূমি রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে তারা।

Erdogan: 'হামাস কোনও জঙ্গি দল নয়, মুক্তিকামী সংগঠন'
গাজায় চলছেই বোমা বর্ষণ, চুপ করে আন্তর্জাতিক মহলImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 25, 2023 | 8:45 PM

আঙ্কারা এবং দোহা: ৭ অক্টোবর, ইজরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল হামাস গোষ্ঠী। শয়ে শয়ে মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল তারা। আরও অন্তত দেড়শো মানুষকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে গাজা ভূখণ্ডে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে তারা। ভারত-সহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই, এমনকি মুসলিম বিশ্বের বেশ কিছু দেশও দ্যর্থহীনভাবে হামাসের এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অধিকাংশ দেশই জানিয়েছে, প্যালেস্তাইনের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিকে তারা সমর্থন করলেও, হামাসের হত্যালীলাকে কেউই সমর্থন করেনি। তবে, TV9-এর প্রতিনিধি ইজরায়েলে গিয়ে দেখেছিলেন, গাজা বা ওয়েস্টব্যাঙ্কের অধিকাংশ প্যালেস্তাইনি নাগরিকই হামাসকে সন্ত্রাসবাদী বলে মনে করেন না। তাঁদের কাছে হামাস তাদের মুক্তিযোদ্ধা। এবার, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোগানও হামাসকে মুক্তি বাহিনী বলে সার্টিফিকেট দিলেন।

বুধবার তুরস্কের সংসদে, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে একটি বক্তৃতা দিয়েছেন এর্দোগান। তিনি বলেন, হামাস কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়। তারা একটি মুক্তিকামী সংগঠন। নিজভূমি রক্ষার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে তারা। ইজরায়েল ও হামাস – দুই পক্ষকেই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি। এর্দোগান আরও বলেন, পশ্চিম এশিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আনার জন্য মুসলিম দেশগুলির একত্রিতভাবে কাজ করা উচিত। বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলিকে তিনি অনুরোধ করেছেন, যাতে তারা গাজায় হামলা বন্ধের জন্য ইজরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এর্দোগান আরও জানিয়েছেন, গাজা ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাফাহ সীমান্ত খোলা রাখতে হবে। ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে বন্দি বিনিময় করারও ডাক দিয়েছেন তিনি। আরও জানিয়েছেন, ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধ বন্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘অক্ষমতায়’ তিনি হতাশ।

ইজরায়েলের সঙ্গে এক সময় খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল তুরস্কের। কিন্তু, গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে এর্দোগানের আমলে তেল আবিবের সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্ক বারবার ওঠানামা করেছে। ২০১০-এ গাজায় সহায়তা নিয়ে যাচ্ছিল তুরস্কের একটি জাহাজ। সেই জাহাজে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ১০ তুর্কি নাগরিককে হত্যা করেছিল। তারপর থেকে ইজরায়েলের সঙ্গে যাবতীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক ঘুচিয়ে দিয়েছিল তুরস্ক। ২০১৬ সালে সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল। ২০১৮ সালে গাজা সীমান্তে ইজরায়েলি বাহিনীর দমন-পীড়নের জেরে ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে আঙ্কারা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিল তুরস্ক। সম্প্রতি ফের এই সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছিল। ইজরায়েল সফরে যাওয়ার কথাও ছিল এর্দোগানের। এদিন এর্দোগান জানিয়েছেন, তুরস্কের ভালোমানুষির সুযোগ নিয়েছে ইজরায়েল। পূর্ব পরিকল্পনাও বাতিল করেছেন, ইজরায়েলে যাবেন না।

তবে, শুধু এর্দোগান নয়, ইজরায়েলের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিও। মঙ্গলবার শুরা কাউন্সিলের বার্ষিক অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আল থানি, হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইজরায়েলকে সংযত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীকে নিঃশর্ত হত্যার জন্য সবুজ সঙ্কেত দেওয়া উচিত নয়। এই যুদ্ধ চলতে থাকলে হুমকির মুখে পড়বে গোটা মধ্য ও পশ্চিম এশিয়াই। তিনি বলেন, “আমরা বলছি যথেষ্ট হয়েছে। ইজরায়েলকে হত্যার নিঃশর্ত সবুজ সঙ্কেত এবং লাইসেন্স দেওয়া ঠিক নয়। দখলদারি, অবরোধ এবং বসতি স্থাপনের বাস্তবতাকেও উপেক্ষা করে যাওয়াও উচিত নয়। ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই নৌকায় পা দিয়ে চলছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এমন একটা ভাব করছে যে, প্যালেস্তিনীয় শিশুদের জীবনের কোনও দাম নেই। যেন তারা মুখহীন, নামহীন।”