Nuclear war: ভারত-পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধে মৃত্যু ঘটবে ২০০ কোটি মানুষের! মেরুদণ্ডে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিল গবেষণা

India-Pakistan nuclear war: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে মৃত্যু হবে অন্ততপক্ষে ২০০ কোটি মানুষের! এমনই সতর্কবার্তা দিল এক সাম্প্রতক গবেষণা।

Nuclear war: ভারত-পাকিস্তান পারমাণবিক যুদ্ধে মৃত্যু ঘটবে ২০০ কোটি মানুষের! মেরুদণ্ডে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিল গবেষণা
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে মৃত্যু হবে অন্ততপক্ষে ২০০ কোটি মানুষের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2022 | 9:01 AM

ওয়াশিংটন: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ হলে মৃত্যু হবে অন্ততপক্ষে ২০০ কোটি মানুষের! এমনই সতর্কবার্তা দিল এক সাম্প্রতক গবেষণা। ঠান্ডা যুদ্ধের অবসানে বিশ্ববাসী একটু নিশ্চিন্ত হয়েছিল। পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা প্রায় নেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, ঠান্ডা যুদ্ধের অবসানের ৩০ বছর পর অবস্থাটা পুরো পাল্টে গিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফের বিশ্বের উপর পরমাণু যুদ্ধের কালো ছায়া ফেলতে শুরু করেছে। বস্তুত, মনে করা হচ্ছে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা বর্তমানে বিশ্বের ইতিহাসে সবথেকে বেশি। রাশিয়া-ইউক্রেন (বকলমে আমেরিকা), ভারত-পাকিস্তান, চিন-তাইওয়ান (বকলমে আমেরিকা), চিন-ভারত, উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়া (বকলমে আমেরিকা) – বর্তমানে বেশ কয়েকটি পরমাণু শক্তিধর দেশ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে। এগুলির যে কোনওটিই ডেকে আনতে পারে পুরো গ্রহব্যাপী বিপর্যয়।

এমন পরিস্থিতিতেই আমেরিকার নিউ জার্সির রুটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী, পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে এক নতুন আন্তর্জাতিক গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বে বর্তমানে আনুমানিক যে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, তার ৩ শতাংশেরও কম ব্যবহার হলেই মাত্র দুই বছরের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের মৃত্যু ঘটবে! ছয়টি বিকল্প পারমাণবিক যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ‘নেচার ফুড জার্নালে’ এই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। তা বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি পূর্ণ মাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধ হলে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পড়বে মানব সভ্যতা। বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। গবেষণা অনুসারে যদি সত্যি সত্যিই সেই অবস্থা তৈরি হয়, তাহলে দুই বছরের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশের মৃত্যু ঘটতে পারে। পারমাণবিক বিস্ফোরণে সরাসরি মৃত্যুর পাশাপাশি, ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটবে স্রেফ অনাহারে।

আসলে, এই গবেষণায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক উঠে এসেছে। এই গবেষণা ইঙ্গিত দিয়েছে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে সামান্য সংঘর্ষ হলেও বিশ্বজুড়ে ব্যাপক খাদ্য সংকট দেখা দেবে। এমনকি, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশের মধ্যে একটি ছোট আকারের পরমাণু যুদ্ধও বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহের উপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে সমগ্র গ্রহ জুড়ে ব্যাপক সংখ্যক মৃত্যু ঘটতে পারে। গবেষকরা বিভিন্ন আকারের পারমাণবিক যুদ্ধের ফলে উত্পাদিত ছাইয়ের পরিমাণ গণনা করেছেন। সেই সঙ্গে ভারত, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার মতো পরমাণু শক্তিধর দেশের বড় শহরগুলির অবস্থা হিরোশিমা বা নাগাসাকির মতো হলে, খাদ্য উৎপাদনের উপর কী প্রভাব পড়বে তাও বিবেচনা করেছেন। তাতেই এই ফল পাওয়া গিয়েছে।

গবেষকরা দেখেছেন, পারমাণবিক যুদ্ধের তিন থেকে চার বছর পরও, বিশ্বব্যাপী কৃষিজ খাদ্য, প্রাণীজ খাদ্য এবং মৎস্যের ফলন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। ফলে বিশ্বব্যাপী অনাহার অবশ্যম্ভাবী। তাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বে বর্তমানে যে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, সেগুলির ক্ষুদ্র অনুপাতে বিস্ফোরণ ঘটালেই একটি বিরাট অগ্নিঝড় তৈরি হতে পারে। যা দ্রুত এত পরিমাণ ছাই ও ধোঁয়া আকাশে উড়িয়ে দেবে। গবেষকরা জলবায়ু মডেলগুলি ব্যবহার করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, বিপুল পরিমাণ ছাই ও ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলের স্ট্রাটোস্ফিয়ার স্তরে পৌঁছবে। এর নিচের স্তরে হলে, তা বৃষ্টিতে ধুয়ে যেতে পারত। কিন্তু, বায়ুমণ্ডলের ওই উপরের স্তরে কোনও বৃষ্টিপাত নেই। যার ফলে বেশ কয়েক বছর ধরে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছবে না সূর্যালোক। ফলে, হঠাৎ করেই জলবায়ু শীতল হয়ে যাবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে কৃষি উত্পাদনে। সমুদ্রে মাছের পরিমাণও বিপুল হারে কমে যাবে। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে কয়েক কোটি মানুষের মৃত্যুর পর, বিশ্বজুড়ে অনাহারে মৃত্যু ঘটবে আরও কোটি কোটি মানুষের।