Iran: মানবাধিকার লঙ্ঘন ভয়ঙ্কর ছবি, নিজের মাকেই ফাঁসি দিতে বাধ্য হল মেয়ে

TV9 Bangla Digital

TV9 Bangla Digital | Edited By: Amartya Lahiri

Updated on: Aug 31, 2022 | 9:07 AM

Iran ইরানের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা নিয়ে গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ বাড়ছে। তার মধ্য়েই জানা গেল ভয়ঙ্কর ঘটনা, নিজের মাকেই ফাঁসি দতে একপ্রকার বাধ্য করা হল তাঁর মেয়েকে।

Iran: মানবাধিকার লঙ্ঘন ভয়ঙ্কর ছবি, নিজের মাকেই ফাঁসি দিতে বাধ্য হল মেয়ে
ইরনে ক্রমেই বাড়ছে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা

তেহরান: ইরানের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা নিয়ে গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষ করে মহিলাদের মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা গত কয়েক বছৎে উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আর এর অন্যতম কারণ ইরানের আইন, যেখানে গার্হস্থ হিংসাকে এখনও অপরাধ বলে ধরাই হয় না। পারিবারিক বিবাদ বলে লঘু করে দেখানো হয়। আর এবার সামনে এল আরও এক ভয়ঙ্কর তথ্য। স্বামীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এক মহিলাকে ফাঁসি দিতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁর মেয়েকেই। গলায় ফাঁস লাগানো মায়ের পায়ের নিচ থেকে লাথি মেরে চেয়ার সরিয়ে দিয়েছিল তাঁর কন্যাই।

ডেইলি মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মরিয়ম করিমি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে গার্হস্য হিংসার শিকার ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে তাঁকে নির্যাতন করেছিল তাঁর স্বামী। মরিয়মের বাবা ইব্রাহিম, তাঁর জামাইকে বলেছিলেন তাঁর মেয়েকে বিবাহবিচ্ছেদ দিতে। কিন্তু, মরিয়মের স্বামী তাতেও রাজি হয়নি। এরপরই মরিয়ম এবং তাঁর বাবা ইব্রাহিম দুজনে মিলে তাকে হত্যা করেছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইরানের আইন অনুসারে দুজনকেই মত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই, মরিয়মের ১৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে আসা হয়েছিল রাশত কেন্দ্রীয় কারাগারে, তাঁর মায়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য! কারণ, ইরানের চরপমপন্থী ইসলামিক আইন অনুসারে, হত্যাকারীর শাস্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারে না রাষ্ট্র। পরিবর্তে হত্যার শিকার যে, তাঁর আত্মীয়রাই এই সিদ্ধান্ত নেয়। মরিয়মের ক্ষেত্রে, তাঁর মেয়েই ছিলেন তাঁর নিহত স্বামীর একমাত্র আত্মীয়। আর এই ভাবেই ইরানের বিচার ব্যবস্থার ক্রমে হত্যার শিকারদের জল্লাদে রূপান্তরিত করছে বলে দাবি করেছেন ইরানের মানবাধিকার কর্মী মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম।

গলায় ফাঁস মায়ের, পায়ের নিচ থেকে চেয়ার সরিয়ে দিতে একপ্রকার বাধ্য মেয়ে

মাহমুদ মোগাদ্দাম বলেছেন “ইরানের দণ্ডবিধিতে শুধু অমানবিক শাস্তিই নেই, এটি সমাজে হিংসাকেও উৎসাহিত করে। হত্যার ক্ষেত্রে ইরানের আইনে ‘কিসাস’ বা ‘প্রতিশোধ’-এর কথা বলা হয়েছে। এটা আসলে হত্যার শিকারের পরিবারের কাঁধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দায় চাপিয়ে দেওয়া। তাই হত্যার শিকার হওয়া থেকে, সাধারণ মানুষ পরিণত হচ্ছে জল্লাদে। বিষয়টা আরও নৃশংস হয়ে ওঠে, যখন পরিবারের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডগুলি ঘটে। যেমনটা ঘটেছে মরিয়ম ও তাঁর মেয়ের ক্ষেত্রে। মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাঁর পরিবারের সদস্যের ভাগ্য নির্ধারণ করতে হয়েছিল। তারা শিশুটিকে একটি অসম্ভব পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছিল। তাঁকে বলা হয়েছিল ‘তোমার মা তোমার বাবাকে খুন করেছে’, এবং তুমিই তোমার মায়ের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।”

কিন্তু, মেয়েটি তো মাকে ক্ষম করা দিতেও পারত? মাহমুদের মতে, জরিমানা গ্রহণ বা ক্ষমা বেছে নেওয়ার পরিবর্তে যাতে পরিবারগুলি মৃত্যুদণ্ডই ​​বেছে নেয়, তার জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হয়। মানববাধিকার কর্মীটির দাবি, কেউ প্রতিশোধ না চাইলে তাঁদেরকেই দোষী বোধ করানো হয়। খুব সূক্ষ্ম উপায়ে মানসিক চাপ দেওয়া হয়। তাই মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানা বা ক্ষমা বেছে নেওয়ার সংখ্যা বেশি হলেও, শেষ পর্যন্ত নিজেদের পরিবারের লোকজনকে ফাঁসি দিতেই বাধ্য হয় তারা। সমস্যাটা আরো গভীরের, কারণ ইরানের আইনে গার্হস্থ হিংসার কোনও শাস্তি নেই। তাই মরিয়মের মতো পরিস্থিতিতে বহু মহিলাই স্বামীর অত্যাচার সহ্য না করতে পারে, তাকে হত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। আর তারপর, তাঁদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে বাধ্য হন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই। এই ভাবেই প্রতিদিন মানববাধিকারের ভয়ঙ্কর লঙ্ঘন ঘটে চলেছে ইরানে।

Latest News Updates

Follow us on

Related Stories

Most Read Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla