করোনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের তুলনা টেনে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনকে কটাক্ষ জয়শঙ্করের, উঠল আফগান প্রসঙ্গও
ভারত মনে করে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ধর্ম, সীমান্ত বা সভ্যতার কোনও সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসবাদের যে কোনও রূপ নিন্দনীয়।
নয়া দিল্লি: তালিবানের নাম না করেও রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কড়া বার্তা দিতে শোনা গেল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কররে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, কাবুলে তালিবান দখল নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রথম বক্তব্যেই ভারত লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের মতো পাক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিয়ে সরব হয়। চলতি মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতিত্ব করছে ভারতই। সেখানেই জয়শঙ্করকে বলতে শোনা যায়, বর্তমান সময়েও লস্কর ও জইশের মতো সংগঠন নির্ভয়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ভারত মনে করে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ধর্ম, সীমান্ত বা সভ্যতার কোনও সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসবাদের যে কোনও রূপ নিন্দনীয়।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর এই বক্তব্যে তালিবানের নাম না করা হলেও কৌশলে তাদেরকেই বার্তা দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। নিউইর্য়কে অনুষ্ঠিত হওয়া এই সম্মেলনে তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, “আফগানিস্তানে হোক বা ভারতের বিরুদ্ধে, লস্কর ও জইশের মতো সংগঠন কোনও ভয়ডর ছাড়াই নিজেদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ জারি রেখেছে।” করোনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের তুলনা টেনে জয়শঙ্কর বলেন, “করোনার মতোই সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রেও যতক্ষণ না আমরা সবাই সুরক্ষিত হচ্ছি, ততক্ষণ কেউ সুরক্ষিত হতে পারব না। কিন্তু কিছু দেশ আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এটা বরদাস্ত করা যায় না।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে নাম না করে যেন পাকিস্তানকেই নিশানায় নেন তিনি।
এরপরেই তাঁর আক্রমণের তির ঘোরে চিনের দিকে। নাম না করেই তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “কিন্তু যখন আমরা দেখতে পাই যে যাদের হাতে রক্ত লেগে রয়েছে, তাদের উদ্দেশেই (কিছু দেশ) আতিথেয়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে, তখন তাদের প্রকৃত রূপ প্রকাশ্যে আনা জরুরি হয়ে পড়ে।” আফগানিস্তান যাতে কোনও ভাবে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য না হয়ে ওঠে সেই বিষয়টির উপরও নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান জয়শঙ্কর। ভারতে সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বলতে শোনা যায় ব্রিটেনকেও।
যদিও বিদেশমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই তালিবানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ভারত সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জয়শঙ্কর এ দিন বলেন, “এটা খুবই প্রাথমিক সময়। এই মুহূর্তে কাবুলের পরিস্থিতির দিকেই আমরা নজর রাখছি।” আপাতত যে ভারতীয়দের নিরাপত্তাই কেন্দ্রের একমাত্র লক্ষ্য, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। আরও পড়ুন: শাসককে ‘তালিবানি’ খোঁচা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথের, মুখ খুললেন নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও