Japan menstrual pain: দেখ কেমন লাগে, ‘পিরিয়ডসের ব্যথা’য় ছটফট করলেন পুরুষরা!
Japan men feels menstrual pain: কিশোরী বয়স হওয়ার পর থেকে 'মেনস্ট্রুয়াল পেইন', অর্থাৎ, মাসিকের ব্যথা বিশ্বের সকল মেয়ে-মহিলার সঙ্গী হয়। কিন্তু, পুরুষরা কি কখনও মাসিকের ব্যথার খিঁচুনি অনুভব করতে পারেন? শারীরিকভাবে সম্ভব নয়। কিন্তু, যন্ত্র থাকতে অসম্ভব বলে কিছু হয় কি?
টোকিয়ো: কিশোরী বয়স হওয়ার পর থেকে ‘মেনস্ট্রুয়াল পেইন’, অর্থাৎ, মাসিকের ব্যথা বিশ্বের সকল মেয়ে-মহিলার সঙ্গী হয়। কিন্তু, পুরুষরা কি কখনও মাসিকের ব্যথার খিঁচুনি অনুভব করতে পারেন? শারীরিকভাবে সম্ভব নয়। কিন্তু, যন্ত্র থাকতে অসম্ভব বলে কিছু হয় কি? শুক্রবার (৮ মার্চ), আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তার একদিন আগে, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ), এই ব্যথা অনুভব করার এক অনন্য সুযোগ পেলেন জাপানের এক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার পুরুষ কর্মচারীরা। নারী দিবসের আগের দিন, ‘পেরিওনয়েড’ নামে এক যন্ত্র ব্যবহার করে প্রথমবার তাঁদের মহিলা সহকর্মীরা মাসিকের সময় তলপেটে কী নিদারুণ যন্ত্রণা সহ্য করেন, তার অভিজ্ঞতা লাভ করলেন তাঁরা।
মহিলাদের মাসিকের ব্যথা পুরুষদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। মাসিকের সময় অনেক মহিলাই এই ব্যথার জেরে কাজ করতে পারেন না। তাঁদের ছুটি নিয়ে হয়। অনেক সময়ই কর্মস্থলে এই নিয়ে উপহাসের মুখেও পড়তে হয় মহিলাদের। প্রতি মাসে যে ব্যথা হয়, তার জন্য আবার ছুটি নেওয়ার কি আছে? বুঝতেই পারেন না পুরুষ কর্মীরা। নারী দিবসের প্রাক্কালে পুরুষ কর্মীদের এই বিষয়টিই বোঝানোর চেষ্টা করেছে সংস্থা। টোকিয়োর ইএক্সইও (EXEO) গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন কর্মীকে পেরিওনয়েড যন্ত্র দিয়ে মাসিকের ব্যথার স্বাদ দেওয়া হয়। বিস্মিত হয়ে যান পুরুষ কর্মীরা। মাসায়া শিবাসাকি নামে এক কর্মী তো ব্যথায় হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন। বাকিদের অবস্থা ততটা খারাপ না হলেও, তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না, প্রতি মাসে মহিলাদের এই ভয়ঙ্কর যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। এই কর্মীরা জানিয়েছেন, “ব্যথা হয় জানতাম, কিন্তু, এতটা!”
পেরিওনয়েড যন্ত্র কি? এটা একটি অত্যন্ত ‘কমপ্যাক্ট’ যন্ত্র। নারা উইমেনস ইউনিভার্সিটির এক মহিলা গবেষক এই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। ২০১৯ সালে ‘ওসাকা হিট কুল’ (Osaka Heat Cool) নামে এক সংস্থার সহায়তায় তিনি এই যন্ত্রটি তৈরি করেন। ওই মহিলা গবেষকের নাম প্রকাশ করেনি সংস্থাটি। তবে জানা গিয়েছে, তিনি নিজেই গুরুতর মাসিকের ব্যথায় ভোগেন। প্রাথমিকভাবে, যন্ত্রট বহরে অনেক বড় ছিল। ব্যবহার করাটা কঠিন ছিল। তবে, ধীরে ধীরে এই যন্ত্রের আকার ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। তলপেটে একটি আঠালো প্যাড লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর, একটি বোতামে চাপ দিলেই, একটি বৈদ্যুতিক সংকেত যায় তলপেটের পেশীতে। মাসিকের ব্যথার অনুভূতি অনুকরণ করে ওই বৈদ্যুতিক সংকেত।
‘ওসাকা হিট কুল’ একটি স্টার্টআপ সংস্থা। তাদের মূল কাজ হল, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজন করা। মহিলাদের অনেক অসুবিধাই, পুরুষরা বুঝতে পারেন না। এই বোঝানোর কাজটাই করে থাকে ওসাকা হিট কুল। স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য যৌন শিক্ষা পরিচালনাও করে এই সংস্থা। ২০২৩ সালে মোট ৪০টি সংস্থা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্যবস্থা করেছিল এই স্টার্টআপ সংস্থা।
নারী দিবসের আগে, ইএক্সইও সংস্থার কর্মীরা মাসিকের ব্যথা অনুভব করার পর, ওসাকা হিট কুল-এর ব্র্যান্ড ম্যানেজার তথা প্রশিক্ষক চিয়াকি কুবোটা বলেছেন, “আশা করি যাঁরা আজ মাসিকের ব্যথা অনুভব করলেন, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে গিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা বাকিদের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। মহিলাদের সম্পর্কে তাঁদের বোঝা, না বোঝার বিষয়গুলি বাকিদেরও জানাবেন। তাঁরা সেই কাজ করলে, কর্মক্ষেত্রে মহিলারা একটা ভাল পরিবেশ পাবেন। মহিলাদের বিভিন্ন বিষয়ে সমর্থন করবেন পুরুষ সহকর্মীরা। আমরা বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের সংস্থাকে প্রশিক্ষণ দিই। পুরুষ এবং মহিলা দুই সম্প্রদায়কেই আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। তবে, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য স্কুল শিক্ষার্থীদের যৌন শিক্ষা প্রদান করতে চাই, তাদের নারী-পুরুষের পার্থক্য বোঝাতে চাই। আমাদের আশা, এর ফলে সমাজ আরও সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।”