‘মাঝ রাতে মেয়ে বাছাই করে ধর্ষণ করে প্রশাসন’
মাঝ রাতে এসে মেয়ে বাছাই করে নিয়ে যান। তারপর অন্ধকার ঘরে চলে ধর্ষণ।
জিয়ানজিয়ান: করোনা থাকুক বা না থাকুক, তাঁরা সব সময় মাস্ক পরে থাকেন। তাঁরা রক্ষক, তবে পুলিশের পোশাক তাঁদের পরনে থাকে না। এক অন্য ধরনের পোশাক পরে মাঝ রাতে এসে মেয়ে বাছাই করে নিয়ে যান। তারপর অন্ধকার ঘরে চলে ধর্ষণ। এই বর্ণনাই দিয়েছেন চিনে (China) ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবিরে থাকা মুসলিম মহিলা। অনেক রাতে তাঁদের পছন্দের শিকার হয়েছেন তিনিও। আর সেই ভয় এখনও ছেড়ে যায়নি তাঁকে। জিয়ানজিয়াং থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আমেরিকা পালিয়ে এসেছেন তিনি। আর তাঁর সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশিত হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
জিয়ানজিয়ানের পুনঃশিক্ষণ কেন্দ্রে ৯ মাস কাটিয়েছেন এই মহিলা। তাঁর দাবি, জিয়ানজিয়াংয়ের পুনঃশিক্ষণ শিবিরে বন্দি আছেন লক্ষাধিক উইঘুর মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন একাধিকবার উইঘুর মুসলিমদের হয়ে সওয়াল করেছে। কিন্তু কোনও দাবিই মানতে নারাজ চিন। জিয়ানজিয়ানের উইঘুর শিবিরগুলি যেন বদ্ধ কারাগার, সেখান থেকে কোনও খবরই প্রকাশ্যে আসে না। তারপরও বন্দী ও নিরাপত্তা কর্মীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বিবিসি জানিয়েছে, প্রমাণ রয়েছে যে শিবিরে গণধর্ষণ, যৌন নির্যাতন ও অত্যাচার হয়।
ওই মহিলা জানিয়েছেন, উইঘুর শিবিরে তিনি মোট ৩ বার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। প্রতি ক্ষেত্রেই ২ থেকে ৩ জন মিলে গণধর্ষণ করেছে তাঁকে। তাঁর বক্তব্যের সাপেক্ষে অনেক প্রমাণ না দিতে পারলেও, বেশ কিছু নথি বিবিসিকে দিয়েছেন ওই মহিলা, যেখান থেকে বেশ অনেক কিছুই জানা যায়। শুধু এই মহিলাই নয়, শিবিরে থাকা আরও এক মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিবিসি। সেখান থেকেও উঠে এসেছে একই কথা।
১৮ মাস শিবিরে থাকা গুলজিরা জানিয়েছেন, শিবিরে তাঁর কাজ ছিল উইঘুর মহিলাদের নগ্ন করা। মহিলাদের নগ্ন করে একটি অন্ধকার ঘরে ছেড়ে আসতেন তিনি। তারপর শিবিরের দায়িত্বে থাকা চিনা কর্মীরা ঢুকতেন ওই ঘরে। সব শেষে উইঘুর মহিলাকে স্নান করাতে নিয়ে যেতেন তিনি। এরকমই একাধিক মহিলা রয়েছেন, যাঁরা এই খারাপ অভিজ্ঞতার শিকার। শিবির থেকে বেরিয়ে অনেকে বেঁচে যান। তাঁর মতে, প্রাণে বাঁচলেও জীবনটা শেষ হয়ে যায়। তিনি জানান, ধর্ষণের শিকার হয়ে তিনি পুরোপুরি শেষ। চিনা কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যই হল সবাইকে শেষ করে দেওয়া।
আরও পড়ুন: করোনার কোপ, আম ভারতীয়র প্রবেশ নিষেধ সৌদিতে!
চিনের পুনঃশিক্ষণ শিবিরের এই অত্যাচারের কথা এর আগেও একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। আমেরিকা বারবার অভিযোগ করেছে চিনের কমিউনিস্ট সরকারের মদতেই চলে এই অত্যাচার। ২০১৪ সালে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জিয়ানজিয়ানে গিয়ে বলেছিলেন, “কোনও ক্ষমা করা চলবে না।” সে বক্তব্যকে টেনে নিয়েও আমেরিকা চিনকে বিঁধেছে। তবে চিন কোনও অভিযোগই মানতে নারাজ।