Dog’s Journey: একেই বলে ভালবাসার টান! ৬৪ কিমি পথ পেরিয়ে পুরনো প্রভুর বাড়িতে ফিরল কুপার
Ireland: গত ২৭ তারিখে ওই সংস্থার কাছে আবার খবর আসে। জানা যায়, নিজের পুরনো ঠিকানার দিকেই দৌড়তে দেখা গিয়েছে কুপারকে। ওই পুরনো ঠিকানায় পৌঁছে দেখা যায়, সত্যিই সেখানে হাজির হয়েছে কুপার।
আয়ারল্য়ান্ড: কথায় আছে, একটি কুকুর যেভাবে তার প্রভুকে ভালবাসে, সেইরকম ভাল আর কেউ বাসতে পারে না। গল্পকথা নয়, এই কথাটি বাস্তবেও কতটা সত্য, তা প্রমাণ করল গোল্ডেন রিট্রিভার। কুপার নামক ওই কুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে এক পরিবারের সঙ্গে থাকছিল। ওই পরিবার তাঁকে দেখভাল করতে সক্ষম নয়, তাই বাধ্য হয়েই তাঁর মালিকানা ছাড়তে হয়েছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই কুপারকে দত্তক নিয়ে নেয় অন্য একটি পরিবার। কিন্তু নতুন অভিভাবকদের সঙ্গে মন টেকে না কুপারের। সেই কারণে সুযোগ পেতেই নতুন বাড়ি থেকে পালিয়ে ৪০ মাইল পথ অতিক্রম করে পুরনো প্রভুর বাড়িতে ফিরে এল ওই গোল্ডেন রিট্রিভার।
‘দ্য মেট্রো’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি আয়ারল্যান্ডের। কুপার নামক ওই গোল্ডেন রিট্রিভারটিকে সম্প্রতিই তাঁর প্রভু ডগ পাউন্ডে দিয়ে আসেন। ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে কুপারের দেখভাল করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই তিনি যাবতীয় অধিকার ছেড়ে দিচ্ছেন। কুপারের জন্য যেন নতুন কোনও পরিবার খুঁজে দেওয়া হয়। দত্তকের বিজ্ঞাপন দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই এক পরিবার আগ্রহ দেখায় কুপারকে দত্তক নেওয়ার জন্য।
গত এপ্রিল মাসের শুরুতে যাবতীয় নথিপত্রে স্বাক্ষর করেই নাইজেল ফ্লেমিং নামক এক ব্যক্তি কুপারকে দত্তক নেন এবং বাড়ি নিয়ে আসেন। উত্তর আয়ারল্য়ান্ডের কাউন্টি টাইরনের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি তাঁর বাড়ির সামনে পৌঁছতেই কুপার গাড়ির জানালা দিয়ে লাফ দেয় এবং দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপরে প্রায় এক মাস বেপাত্তা ছিল কুপার। বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজা হলেও কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্প্রতিই নিখোঁজ পশুদের খুঁজে বের করার একটি সংস্থার কাছে খবর আসে, কাউন্টি টাইরন থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দূরে কাউন্টি লন্ডনডেরির টোবেরমোরে দেখা গিয়েছে কুপারকে।
গত ২৭ তারিখে ওই সংস্থার কাছে আবার খবর আসে। জানা যায়, নিজের পুরনো ঠিকানার দিকেই দৌড়তে দেখা গিয়েছে কুপারকে। ওই পুরনো ঠিকানায় পৌঁছে দেখা যায়, সত্যিই সেখানে হাজির হয়েছে কুপার। ২৭ দিন ধরে হেঁটে, মোট ৬৪ কিলোমিটার অতিক্রম করে তাঁর পুরনো ঠিকানায় ফিরে আসে।
লস্ট প’জ নামক ওই সংস্থার মুখপাত্র বলেন, “কুপার অত্যন্ত বুদ্ধিমান। কারোর কোনও সাহায্য ছাড়াই, শুধুমাত্র নিজের বিচারবুদ্ধির উপরে ভরসা করে সে তাঁর পুরনো ঠিকানায় ফিরে এসেছে। কীভাবে ২৭ দিন বিনা খাবারে, মাথার উপরে কোনও আশ্রয় ছাড়াই এতটা পথ অতিক্রম করে আসল, তা বোঝা অসম্ভব।”
জানা গিয়েছে, যে জায়গা থেকে কুপার হারিয়ে গিয়েছিল, সেখানে বারংবার খোঁজা হয়েছিল, কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। শেষে বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সেখান থেকেই জানা যায় যে ডগ পাউন্ডে দত্তকের জন্য দিয়ে দেওয়ার আগে কুপার যেখানে থাকত, সেখানেই ফিরে এসেছে। ২৭ দিন ধরে বড় বড় রাস্তা, মাঠ, জঙ্গল পেরিয়ে কুপার নিজের পুরনো ঠিকানায় ফিরে আসে।
কুপারের পুরনো প্রভু ওই ঠিকানায় বসবাস না করায়, বর্তমানে কুপারকে তার নতুন মালিক নাইজেলের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে নতুন পরিবারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে কুপার এবং অল্প করে খাওয়া-দাওয়া করছে বলে জানা গিয়েছে।