Shinzo Abe-Narendra Modi: ‘টুটেঙ্গে দম মগর…’, আবেকে নিয়ে গঙ্গা আরতি করেছিলেন মোদী, দুই নেতার বন্ধুত্বের ফল পেয়েছে ভারত
Shinzo Abe Narendra Modi Friendship: বিশ্বনেতাদের মধ্যে প্রাক্তন জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবেই সম্ভবত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবথেকে ঘনিষ্ঠ। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকে তৈরি হয়েছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, যার ফল পেয়েছে দেশ।
নয়া দিল্লি: ‘আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু শিনজ়ো আবের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমি শোকাহত এবং দুঃখিত। তিনি ছিলেন একজন অসামান্য বৈশ্বিক রাষ্ট্রনেতা, একজন অসামান্য নেতা এবং একজন অসাধারণ প্রশাসক। জাপান তথা গোটা বিশ্বকে আরও উন্নত স্থান করে তুলতে তিনি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।’ শুক্রবার (৮ জুলাই) জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজ়ো আবের আকস্মিক মৃত্য়ুতে গভীর শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে একটি টুইটে মনের কথা উজার করে দিতে পারেননি নরেন্দ্র মোদী। একের পর এক টুইটে ধরা পড়েছে মোদী-আবে বন্ধুত্বের গভীরতা, রসায়ন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেই জানিয়েছেন, ৭ লোক কল্যাণ মার্গের বাড়িতে আসার অনেক আগে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শিনজ়ো আবের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। আর সেই ‘দোস্তি’, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও অব্যাহত ছিল। আসলে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন জাপানে গিয়ে আবের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক নীতির ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এমনটাই জানা যায়। এদিন মোদী নিজেও টুইট করে বলেছেন, ‘অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক বিষয়ে তার তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি সবসময় আমার উপর গভীর ছাপ ফেলেছে।’ তবে, দুই নেতার মধ্যে এই শ্রদ্ধা ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিল পারস্পরিক। শিনজ়ো আবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বারংবার নরেন্দ্র মোদীকে ‘এক মহান দেশের এক অসামান্য নেতা’ বলেছেন। মোদীকে তাঁর ‘সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং মূল্যবান বন্ধু’ বলেছেন। এমনকী মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই টুইটারে তাঁকে ফলো করতেন আবে।
Sharing a picture from my most recent meeting with my dear friend, Shinzo Abe in Tokyo. Always passionate about strengthening India-Japan ties, he had just taken over as the Chairman of the Japan-India Association. pic.twitter.com/Mw2nR1bIGz
— Narendra Modi (@narendramodi) July 8, 2022
বংশবাদী রাজনীতির কড়া সমালোচক নরেন্দ্র মোদী। তবে, শিনজো আবে একেবারেই রাজনৈতিক পরিবারের মানুষ। তাঁর বাবা এবং ঠাকুর্দা দুজনেই জাপানের বড় মাপের রাজনীতিবিদ ছিলেন। অন্যদিকে শিনজো আবের মা, ইয়োকো কিশির বাবা অর্থাৎ শিনজো আবের দাদু নোবু থেকে কিশি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে, এতে মোদীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বে অসুবিধা হয়নি। বিশ্বনেতাদগের মধ্যে সম্ভবত এই প্রাক্তন জাপানি প্রধানমন্ত্রীই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সবথেকে কাছের বন্ধু ছিলেন। এমনকী, জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবে ভারত সফরে আসার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে বারানসী সফরেও নিয়ে গিয়েছিলেন। দুই প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে গঙ্গা আরতির পর্যন্ত করেছিলেন! দেশে ফেরার সময়, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছ থেকে একটি ভগবদ্গীতাও উপহার পেয়েছিলেন আবে।
আর তাঁদের এই ব্যক্তিগত সৌহার্দের প্রভাব পড়েছিল ভারত-জাপান সম্পর্কের উন্নয়নেও। এদিন টুইট করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে আপনার নেতৃত্বে ভারত-জাপান অংশীদারিত্ব দারুণভাবে বেড়েছে।’ ২০১৪ সালে চেয়ারে বসার পর, সেপ্টেম্বরে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বিদেশ সফর করেছিলেন। দেশটির নাম ছিল জাপান, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আবে। মোদী-আবের আমলে বাণিজ্যিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্কই ব্যাপক মজবুত হয়েছে। অসামরিক পারমাণবিক শক্তি থেকে শুরু করে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, কোয়াড গোষ্ঠী, বুলেট ট্রেন, পরিকাঠামোর উন্নয়ন, অ্যাক্ট ইস্ট নীতি, ইন্দো-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের সুরক্ষা কৌশল তৈরি – বিস্তৃত বিষয়ে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে দুই দেশের মধ্যে। ।