Sri Lanka Crisis: ‘ব্যর্থ’ লঙ্কাবাসীর চোখে ধুলো দেওয়ার প্রচেষ্টা, ‘পিঠ বাঁচাতে’ আজই কি সিঙ্গাপুরে পালাবেন গোতাবায়া?
Sri Lanka Crisis: গতকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মলদ্বীপেও। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলেহর কাছে দাবি জানিয়েছেন, দ্রুত যেন গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কলম্বো: দেশ ছেড়েছেন আগেই, এবার গোপন ডেরা ছাড়তেও মরিয়া গোতাবায়া রাজাপক্ষে। দেশের চরম আর্থিক সঙ্কটের সময়েই বিক্ষোভের মুখে পড়ে রাতের অন্ধকারে শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। বর্তমানে তিনি মলদ্বীপে রয়েছেন। তবে সেখানেও বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়তেই ফের অন্য দেশে ঠাঁই নেওয়ার চেষ্টা করছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। সূত্রের খবর, গোতাবায়া রাজাপক্ষে মলদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যেতে পারেন। ইতিমধ্যেই তিনি মলদ্বীপ সরকারের কাছে একটি প্রাইভেট বিমানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। আজই তিনি সিঙ্গাপুরে যেতে পারেন। এদিকে, কার্ফু উঠতেই ফের একবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষজন।
বৃহস্পতিবার সকালে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার হতেই ফের বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। ইতিমধ্য়েই বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রপতির বাসভবন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর, প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ও সরকারি সংবাদমাধ্যমের অফিস দখল করে নিয়েছে। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ ধরে বন্ধ ছিল টিভির সম্প্রচার। কলম্বো সহ দেশের একাধিক প্রান্তে বিশাল সংখ্যক পুলিশ ও সেনা মোতায়েন থাকলেও, তারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করছে না। কাঁদানে গ্যাস, জল কামান, শূন্যে গুলি করেই বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আকাশপথে ক্রমাগত টহল দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে সেনা সূত্রে।
বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের ইস্তফার দাবি করলেও, তার কোনটিই পূরণ করা হয়নি। বুধবার গোতাবায়া রাজাপক্ষের ইস্তফা দেওয়ার কথা থাকলেও, তিনি ইস্তফা দেননি। বরং একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেকেই রাষ্ট্রপতির যাবতীয় দায়িত্ব পালনের ভার দিয়েছেন।
গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালানোর পরই বিক্রমসিঙ্ঘে যে প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব সামলাবেন, সেটা আঁচ করতে পেরেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি ছিল, কোনওভাবেই বিক্রমসিঙ্ঘে যেন রাষ্ট্রপতির পদে না বসেন। দুপুর একটার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বিক্রমাসিঙ্ঘেকে। কিন্তু ঘটে ঠিক উল্টোটাই। সাময়িকভাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেই দেশের পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি অবস্থা জারি করেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। এরপরই জনরোষ আছড়ে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। পাঁচিল টপকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। ক্রমাগত কাঁদানে গ্যাস ফাটিয়ে বিক্ষোভকারীদের হঠানোর চেষ্টা চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যত ব্যর্থ শ্রীলঙ্কার সেনা। সংঘর্ষে এক বিক্ষোভকারী ছাত্রের মৃত্যুও হয়।
এদিকে, গতকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মলদ্বীপেও। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলেহর কাছে দাবি জানিয়েছেন, দ্রুত যেন গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে শ্রীলঙ্কায় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মলদ্বীপ সরকারের তরফেও জানানো হয়েছে, গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে মলদ্বীপে আশ্রয় দেওয়া হয়নি। কেবল গন্তব্যে যাওয়ার পথে কয়েকদিনের জন্য আশ্রয় নেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই তিনি নিজের গন্তব্যে চলে যাবেন। গোতাবায়া এখনও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট থাকার কারণেই মলদ্বীপ সরকার তাঁর অনুরোধ প্রত্যাখান করতে পারেনি বলেও জানানো হয়েছে।