লড়াই জারি পঞ্জশীরে, গভর্নরের অফিসে কি ঢুকে পড়ল তালিবান?

পঞ্জশীর দখলের শুক্রবার রাতে তালিবানরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর।

লড়াই জারি পঞ্জশীরে, গভর্নরের অফিসে কি ঢুকে পড়ল তালিবান?
ছবি:PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 7:09 AM

কাবুল: কার্যত গোটা আফগানিস্তানের এখন তালিবানদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু গোটা আফগানিস্তান দখল হলেও বাধা আসে পঞ্জশিরে। ব্যাপক লড়াই চলছে হিন্দু কুশের উপত্যকায়। প্রথম থেকে পিছু হটলেও শেষমেশ নর্দান অ্যালায়েন্সকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তালিবানদের দাবি এবার তারা প্রবেশ করেছে পঞ্জশীরের গভর্নরের অফিসের অন্দরে। কার্যত তোলপাড় করেছে সশস্ত্র তালিব সদস্যরা।

যদিও সরকারিভাবে কোনও বক্তব্য সেভাবে তালিবানদের তরফে আসেনি না। যদিও শনিবার শেষবেলায় তালিবান দাবি করেছে, যে তারা পঞ্জশিরের গর্ভনরের অফিসে ঢুকে পড়েছে। সূত্রের খবর পঞ্জশীর প্রদেশের রাজধানী বাজারাকে প্রবেশ করেছে তালিবান। তবে কি শেষ রক্ষা হল না নর্দান অ্যালায়েন্সের? সেই উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়। তালিবানের তরফে দাবি করা হিয়েছে, হিন্দুকুশ পর্বতমালার কোলে থাকা সেই উপত্যকা এখন তাদেরই দখলে। যদিও নর্দান অ্যালায়েন্সের পাল্টা দাবি, তারা মোটেই হার মানেনি এখনও।

এ দিকে, পঞ্জশির দখলে এসেছে খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাবুলে উল্লাস শুরু করে দেয় তালিবানরা। শহরের একাধিক জায়গায় শুরু হয় গুলি চালানো। সারারাত ধরে তালিবানরা শুন্যে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আসভাকার তরফে জানানো হয়, পঞ্জশীর দখলের আনন্দে তালিবানরা প্রায় গোটা রাত ধরেই এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। ওই গুলি লেগেই কাবুলের একাধিক বাসিন্দা আহত হন। শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

মঙ্গলবার রাত থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয় মাসুদ বাহিনীর সঙ্গে। এরপরই শুক্রবার রাতে তালিবান দাবি করে, অবশেষে তারা পঞ্জশীর দখল করে নিতে পেরেছে। এরপরই রাতভর গুলি চালিয়ে বিজয় উৎসব পালন করে তালিবান। যদিও ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ জানিয়েছেন, তালিবানরা পঞ্জশীর দখল করেনি এখনও। প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে পঞ্জশীর। তালিবান ছাড়াও পাকিস্তানি ও আল কায়েদা জঙ্গিরাও একযোগে হামলা চালানোয় পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠলেও কম্যান্ডার ও রাজনৈতিক নেতারা তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান আমিরুল্লাহ সালেহ।

গত ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করে তালিবরা। কিন্তু গোটা আফগানিস্তান দখল করা সম্ভব হয়নি। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল উত্তর আফগানিস্তানের পার্বত্য এলাকায় থাকা পঞ্জশীর প্রদেশ। স্থানীয় নেতা আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক আফগান সেনা ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে ৯ হাজার সেনার এক বিশাল বাহিনী তৈরি করা হয়। শুরু হয় তালিবান ও প্রতিরোধ বাহিনীর মুখোমুখি যুদ্ধ।

ইতিহাস বলছে এর আগে পঞ্জশীরে এরআগে কখনও মাথা গলাতে পারেনি তালিবান। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তান ছিল তালিবানের হাতে। কিন্তু নর্দান অ্যালায়েন্স কখনই তাদের ঢুকতে দেয়নি পঞ্জশীরে। তালিবানকে আটকাতে ১৯৯৬ সালেই তৈরি হয়েছিল এই বাহিনী। এই বাহিনীর জন্য গোটা দেশে রাজত্ব চালালেও পঞ্জশীর তালিবানদের হাতে আসেনি। এই অঞ্চলের সঙ্গে অন্য কোনও দেশের সীমান্ত নেই। এই অংশের চারপাশ ঘিরে রয়েছে তালিবান ঘাঁটি। এই পঞ্জশীর আসলে এক দুর্গের মতো। তালিবানের আগে সোভিয়েত বাহিনীও কখনও আঁচড় কাটতে পারেনি পাহাড়ে ঘেরা এই উপত্যকায়। আরও পড়ুন: পাক পতাকায় মোড়া হল কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার দেহ! ইউএপিএ ধারায় মামলা পুলিশের