পাক পতাকায় মোড়া হল কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার দেহ! ইউএপিএ ধারায় মামলা পুলিশের
দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
শ্রীনগর: শেষকৃত্যের আগে পাকিস্তানের পতাকায় মুড়ে থাকতে দেখা গেল কাশ্মীরের বিচ্ছন্নতাবাদী নেতা সইদ আলি গিলানিকে। ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যা নতুন করে বিতর্কে ঝড় তুলেছে। এই ঘটনার পরই গিলানির দেহ নিজের জিম্মায় নিয়ে তার শেষকৃত্য করে জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে ইউএপিএ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
বুধবার সন্ধ্যায় জম্মু কাশ্মীরে ৯২ বছর বয়সে মারা যান এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। আজীবন ভারতে থাকলেও তিনি মনে-প্রাণে সমর্থন করে এসেছেন পাকিস্তানকেই। যে কারণে তাঁর মৃত্যুর পরই উপত্যকা জুড়ে জারি করা হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা। এমনকী, কাশ্মীরজুড়ে ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছিল যাতে কোনও ভাবেই অশান্তি, গুজব বা হিংসা না ছড়ায়। যে কোনও ধরনের জমায়েতের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
শুক্রবার রাতেই পুনরায় স্বাভাবিক হয় ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। তারপরই এই ভিডিয়োগুলি ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, শেষকৃত্যের আগে পাকিস্তানের পতাকায় দেহ মুড়ে রাখা হয়েছিল গিলানির। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, গিলানির দেহ ঘিরে অগণিত পুরুষ-মহিলা। এই পরিস্থিতির কারণেই গিলানির শেষকৃত্য অত্যন্ত কম আয়োজনের মাধ্যমে করা হয়। জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিং জানান, দেশবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কড়া ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
১৯২৯ সালে জ্ম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় জন্ম হয় গিলানির। সেই সময় দেশ ভাগ না হওয়ায় লাহোরের ওরিয়েন্টাল কলেজ থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। এর পরই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে তিনি যুক্ত হন। ১৯৭২, ১৯৭৭ ও ১৯৮৭ সালে তিনি সোপর বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে হুরিয়ত গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকার পর গতবছর তিনি আচমকাই ইস্তফা ঘোষণা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছিল, তাঁকে পাকিস্তান ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ধীরে ধীরে একঘরে করে দিয়েছিল।
পদত্যাগ করার সময় তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে ২০১৯ সালে কেন্দ্রের তরফে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পরও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে ফের জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থতাকেও তুলে ধরেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
গিলানির মৃত্যুর পরই গোটা উপত্যকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করে দেওয়া হয় অশান্তির আশঙ্কায়। কাশ্মীরের এক পুলিশ আধিকারিক বিজয় কুমার জানান, ইন্টারনেট পরিষেবাও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়। হাইদারপোরায় তাঁর বাড়ির বাইরেও কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়। অশান্তির সম্ভাবনায় বেশ কয়েকজন হুরিয়ত নেতাকেও আটক করা হয়ে। হুরিয়ত নেতা মুখতার আহমেদ ওয়াজাকে গতকালই দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়। আরও পড়ুন: নমোর জন্মদিন: ২০ দিন ধরে দেশব্যাপী কর্মসূচি! ৫ কোটি পোস্টকার্ড, হোর্ডিংয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন