Titanic: ‘টপ সিক্রেট’ সামরিক অভিযান না হলে খোঁজই মিলত ডোবা ‘টাইটানিকে’র, ফাঁস গোপন কাহিনি
Titanic wreck discover: ১৯৮৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর মার্কিন নৌবাহিনীর কর্তা তথা সমুদ্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট ব্যালার্ডের নেতৃত্বাধীন একটি দল, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ৩,৮০০ মিটার গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছিল। তবে, এই অভিযান আসলে ছিল একটি অত্যন্ত গোপন মার্কিন সামরিক অভিযান।
ওয়াশিংটন: ১৯১২ সালের বিখ্যাত/কুখ্যাত জাহাজ টাইটানিক। ১৯৯৭ সালের জেমস ক্যামেরুনের অস্কারজয়ী ফিল্ম এই অভিশপ্ত জাহাজটিকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দিয়েছে। হোয়াইট স্টারলাইন সংস্থার যাত্রীবাহী জাহাজ আরএমএস টাইটানিকই বিশ্বের ইতিহাসের সবথেকে বড় জাহাজ ছিল। সেই সময় কেউ ভাবতেই পারেননি, এই জাহাজ কখনও ডুবে যেতে পারে। অথচ, ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে যাওয়ার পথে, প্রথম সমুদ্রযাত্রাতেই ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। রেকর্ড অনুযায়ী মোট ১,৪৯৪ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর মার্কিন নৌবাহিনীর কর্তা তথা সমুদ্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট ব্যালার্ডের নেতৃত্বাধীন একটি দল, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ৩,৮০০ মিটার গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছিল। তবে, ব্যালার্ডের অভিযানের আসল লক্ষ্য কিন্তু টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার ছিল না। এটি আসলে ছিল একটি অত্যন্ত গোপন মার্কিন সামরিক অভিযান। যে অভিযানের বিশদ এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
রবার্ট ব্যালার্ডের দাবি, আরএমএস টাইটানিক আবিষ্কার, আসলে ছিল একটি বৃহত্তর প্রকল্পের অংশ। এই গোপন অভিযান এবং ঘটনাক্রমের অদ্ভুত মোড়, অবশেষে মার্কিন নৌবাহিনীর কর্তাদের টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ দিয়েছিল। আসলে ওই অঞ্চলে, টাইটানিকের সলিল সমাধির আরও বেশ কয়েক দশক পরে ডুবে যাওয়া দুটি পারমাণবিক সক্ষম ডুবোজাহাজের সন্ধান করছিল আমেরিকা। ঠান্ডা যুদ্ধের মধ্যে যা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ইউএসএস থ্রেসার এবং ইউএসএস স্করপিয়ান নামে ওই দুই ডুবোজাহাজের সন্ধান রাশিয়ার পক্ষে উস্কানিমূলক হতে পারত। ডুবে যাওয়া টাইটানিক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সহজ ‘কভার স্টোরি’ তৈরি করতে সহায়তা করেছিল। অর্থাৎ, টাইটানিকের খোঁজ ছিল পর্দার মতো, যার আড়ালে পারমাণবিক সক্ষম ওই দুই ডুবোজাহাজ খুঁজছিল আমেরিকা।
Today marks the 37th year anniversary of the discovery of the Titanic, whose wreck was found on September 1st, 1985 by a team led by Dr. Robert Ballard.
Originally on an expedition to map two US Navy submarine wrecks, the team found Titanic using similar methods. #diving pic.twitter.com/EZoWifRVoz
— History of Diving Museum (@divingmuseum) September 1, 2022
বস্তুত, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের করার কোনও ইচ্ছাই ছিল না ব্যালার্ডের। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চায়নি যে, আমেরিকা পারমাণবিক সক্ষম ডুবোজাহাজ খুঁজছে, এটা গোটা বিশ্ব জেনে যাক। তাই একটি কভার স্টোরি তৈরির ভার পড়েছিল তাঁর উপর। আর টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার প্রচেষ্টাই ছিল তাঁর তৈরি কভার স্টোরি। যা, অদ্ভুতভাবে সত্য ঘটনায় পরিণত হয়। ঘটনাক্রমে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন ব্যালার্ড। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন বাহিনী ডুবোজাহাজগুলির সঠিক অবস্থান জানত। কিন্তু, সেগুলি থেকে পারমাণবিক অস্ত্রাদি উদ্ধার করে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময়, যাতে রুশ নৌবাহিনী তাদের পিছু না নেয়, তারই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্যালার্ডকে। ব্যালার্ড মেনে নিয়েছেন, টাইটানিকের সন্ধান সম্পর্কে তিনি পুরোপুরি অমনোযোগী ছিলেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁরা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান।
১৯৮৫ সালে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ যখন মিলেছিল, সেই সময় অভিযানটিকে অনেক রহস্যে মুড়ে রাখা হয়েছিল। মার্কিন নৌবাহিনীর তৎকালীন মুখপাত্র ক্যাপ্টেন ব্রেন্ট বেকার দাবি করেছিলেন, আর্গো/জেসন নামে এটি নয়া সামুদ্রিক ব্যবস্থার পরীক্ষা ছিল এই অভিযানের উদ্দেশ্য। উডস হোল ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৎকালীন প্রধান বিজ্ঞানী ড. রবার্ট স্পিনডেল তো অভিযানে সামরিক বাহিনী যোগই অস্বীকার করেছিলেন। এখনও, এই অভিযানের অনেকটাই রহস্যাবৃত। ব্যালার্ড-ও জানিয়েছেন, সবটা বলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।