Syria miracle baby: কংক্রিটের চাঙরের নীচে কাঁদছে নবজাতক! ভূমিকম্পের ধ্বংসের মধ্যে ‘অলৌকিক’ সৃষ্টি
miracle baby born under debris of earthquake: দিগন্ত বিস্তৃত হাহাকারের মধ্যে হঠাতই একটা অন্যরকম শব্দ ভেসে এসেছিল উদ্ধারকারীদের কানে। কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে শোনা গিয়েছিল এক সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ।
দামাস্কাস: চারিদিকে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন। সোম থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে পাঁচ-পাঁচটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়া। প্রিয়জনদের হারানোর শোকে ভারি হয়ে আছে আবহাওয়া। দিগন্ত বিস্তৃত হাহাকারের মধ্যে হঠাতই একটা অন্যরকম শব্দ ভেসে এসেছিল উদ্ধারকারীদের কানে। কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে শোনা গিয়েছিল এক সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ। এরপরই, কংক্রিটের বিশাল বিশাল চাঙর সরিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে। অলৌকিকভাবে সিরিয়ায় ধসে পড়া ভবনগুলির ধ্বংসাবশেষের নীচেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে শিশুটি। আর তাই তাকে বলা হচ্ছে ‘মিরাকল চাইল্ড’ বা অলৌকিক শিশু।
এই অলৌকিক নবজাতক এবং তার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সূত্রের খবর, ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই তার সৃষ্টি হলেও, তার বাবা-মায়ের কেউই এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায়নি। তাই জন্মেই অনাথ হয়ে পড়েছে সে। জানা গিয়েছে, গত সোমবার ভোরে প্রথম ভূমিকম্পের সময়ই তার মায়ের প্রসব যন্ত্রনা শুরু হয়েছিল। সেই অবস্থাতেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল তাদের বাড়িটি। ধ্বংসস্তূপের নীচেই শিশুটির জন্ম দেন তার মা। প্রসবের সময়ই তাঁর মৃত্যু হয়। তার বাবাও এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে বাঁচতে পারেননি। উদ্ধারকারীরা যখন কংক্রিটের চতাঙর সরিয়ে তার কাছে পৌঁছেছিলেন, দেখেছিলেন তখনও মায়ের সঙ্গে নাড়ির যোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।
Miracle as baby born under the rubble in Aleppo, Syria, is saved. pic.twitter.com/r6QV4O6OUE
— John Moran (@RueDaungier) February 7, 2023
আরও জানা গিয়েছে, শিশুটির পরিবার আসলে সিরিয়ার দেইর এজোর প্রদেশের বাসিন্দা। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছরের ভয়ঙ্কর যুদ্ধের কারণে তারা বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে শিশুটির বাবা-মা আফরিনে পালিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে , ভূমিকম্পের প্রভাব থেকে বাঁচতে পারেননি তাঁরা। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ পাওয়ার পর, তাকে উদ্ধার করার জন্য আফরিনের জেন্ডারেস গ্রামাঞ্চলে এক বিশাল উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছিল। অন্ধকার, বৃষ্টি এবং প্রবল শীতকে উপেক্ষা করেই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। এক মর্মান্তিক ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে ধ্বংসাবশেষের মধ্য থেকে ধুলোয় ঢাকা শিশুটিকে বের করে আনছেন উদ্ধারকারীরা।
সোমবার ভোরে একটি ৭,৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ। তারপর থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও চারটি বড় ভূমিকম্প হয়েছে এই অঞ্চলে। এই শতাব্দীর অন্যতম মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, হাজার হাজার ভবন ধূলিস্যাত হয়ে গিয়েছে। ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই অবস্থায় তুরস্ক-সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। কয়েক ডজন দেশ থেকে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। তুরস্ক-সিরিয়া জুড়ে ভেঙে পড়া কংক্রিট-লোহার রডের জঙ্গলের মধ্যে প্রাণের সন্ধান চলছে। তবে, এই অঞ্চলে এই মুহূর্তে ব্যাপক শীত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থায় যত সময় যাচ্ছে ততই ধ্বংসস্তূপের ননীচে আটকে থাকাল মানুষদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমছে। আর তাই বেড়েই চলেছে মৃত্যু মিছিল।